সৌরজগত

গ্যাসদানব বৃহস্পতির মজার কথা

অরুণ কুমার
বৃহস্পতি গ্রহ

একটা কল্পবিজ্ঞানের কথা ভাবুন, যেখানে নায়ক চলে গেছেন বৃহস্পতি গ্রহে। সেখানকার অধিবাসীদের সঙ্গে নায়কের ঝামেলা হয়েছে, রীতিমতো তাদের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে হচ্ছে।

গল্পের ভুলটা কী, ধরতে পারছেন? হয়তো ভাবছেন, সেখানে কোনো বাসীন্দা নেই, এ কথা আমরা সবাই জানি। এটাই আসলে ভুল। হ্যাঁ, এটা ভুল বটে। কিন্তু এরচেয়ে বড় ভুল হলো, আমরা ধরেই নিচ্ছি বৃহস্পতি পৃথিবীর মতো শক্ত খটখটে। আসলে বৃহস্পতির আসলে ভূ-পৃষ্ঠের মতো নিরেট কোনো পৃষ্ঠই নেই। পুরো বৃহস্পতি গ্যাসীয়। অর্থাৎ গ্যাসের বিরাট গোলক। সুতরাং এখানে দাঁড়ানোরই উপায় নেই, সেখানে যুদ্ধ করা দূর অস্ত।

শুধু বৃহস্পতি নয়। শনি, ইউরেনাস, নেপচুনও গ্যাসীয় গ্রহ।

বৃহস্পতির পৃথিবীর সঙ্গে এর যোজন যোজন ব্যবধান। ৬৯ হাজার ৯১১ কিলোমিটার গড় ব্যাসার্ধ্যের এই গ্রহটির পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল ৬.১৪১৯×১০১০ বর্গকিলোমিটার। এমন একটা দানবের তুলনায় পৃথিবী কত ক্ষুদ্র সেটা যেমন ছবি দেখে অনুভব করতে পারবেন, আরও বেশি অনুভব করতে পারবেন সংখ্যা দেখে। প্রায় ১৩ শ পৃথিবী এঁটে যাবে বৃহস্পতির বুকে।

সবগুলো গ্রহেরই নির্দিষ্ট একটা রঙ আছে। কিন্তু গ্রহরাজ বৃহস্পতির ক্ষেত্রে সেকথা খাটে না। বৃহস্পতির রঙ অনেকগুলো, কমলা, বাদামী রঙের মাঝখানে সাদা রঙের ব্যান্ড। কোথাও কোথাও এই তিন রঙের বৃত্ত-উপবৃত্তের খেলা। বৃহস্পতির বায়ুমণ্ডল আছে। তারওপর গ্যাসদানব, তাই এর শক্ত কোনো পৃষ্ঠতল নেই। বৃহস্পতির গ্যাসপিণ্ডটি তৈরি হাইড্রোজেন, হিলিয়াম ও অন্য গ্যাস দিয়ে তৈরি। সেসব গ্যাসের মধ্যে চলছে অবিরাম ঘূর্ণিঝড়। সেখান থেকেই আসে সাদা রঙের যোগান। অন্যদিকে এর বায়ুমণ্ডলের ক্রোমেস্ফায়ারে রয়েছে সালফার, ফসফরাস ও হিলিয়াম গ্যাসের মেঘ। সেখানে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি বিচ্ছুরিত হয়ে কমলা আর বাদামি রঙের ব্যান্ড তৈরি করে।

বৃহস্পতি এত বড় যে, ৩১৭টি পৃথিবীর ভর একত্র করলে বৃহস্পতির সমান হবে। তাই বলে ভাববেন না এই দুই গ্রহে তোমার ওজন বেড়ে নীল তিমির সমান ভারী হবে। কারণ, এই দুই গ্রহের ভর বেশি, কিন্তু আয়তন আরও বেশি। বৃহস্পতিতে মহাকর্ষীয় টানটা পৃথিবীর চেয়ে অনেক বেশি। এর মহাকর্ষীয় ত্বরণ ২৪.৭৯ মিটার/সেকেন্ড২।

বৃহস্পতির বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন গ্যাসের রাজত্ব। তাই পচা ডিমের গন্ধ পাবেন এর কোনো কোনো অঞ্চলে, আবার কোথাও মানুষের প্রস্রাবের গন্ধ। পচা ডিমের গন্ধের কারণ, সে অঞ্চলে হাইড্রোজেন সালফাইডের রাজত্ব বেশি। তেমনি কোনো অঞ্চলে আবার অ্যামোনিয়ার রাজত্ব। আমাদের ইউরিনে প্রচুর পরিমাণে অ্যামোনিয়া অর্থাৎ NH3 যৌগ আছে। আর এই যৌগ যেখানেই পাবেন, সেখানকার গন্ধ প্রস্রাবের মতো হবে। এ কারণে ইউরিয়া সারের গন্ধ মানুষের ইউরিনের মতো।

সূত্র: স্পেস ডট কম

ad
ad

ফিচার থেকে আরও পড়ুন

দারুচিনির ১০ উপকারিতা

দারুচিনি শরীরে প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। প্রদাহ বা ইনফ্ল্যামেশন অনেক রোগের মূল কারণ হতে পারে, যেমন আর্থ্রাইটিস বা হৃদরোগ। দারুচিনির ভেতরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানগুলো প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে। মার্কিন গবেষক ড. জর্জ স্যাভান্ট এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “দারুচিনির মধ্যে থাকা পলিফেনল জাতীয় অ্যান্টিঅক্

২ দিন আগে

দিগন্তে আকাশ ও মাটি কেন মেশে?

যেদিকেই তাকান না কেন, কেবল দূরেই মনে হবে আকাশ আর মাটি মিশেছে। কিন্তু কাছাকাছি কোথাও তা খুঁজে পাবেন না। এমনটা কেন হয়?

২ দিন আগে

চুলের যত্নে কোন তেল উপকারী?

বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে চুলের গঠন, তার প্রাকৃতিক বৃদ্ধি এবং ক্ষতির কারণ নিয়ে গবেষণা করে আসছেন। চুল মূলত প্রোটিন দ্বারা গঠিত, বিশেষ করে কেরাটিন নামের একটি প্রোটিন চুলের মূল উপাদান। যখন চুল পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না কিংবা বাইরে থেকে সঠিক যত্ন পায় না, তখন তা রুক্ষ হয়ে যায়, ভেঙে যায় এবং ঝরে পড়ে। তেল মূলত চ

২ দিন আগে

দৈইখাওয়া গ্রামের হট্টিটি

লাল লতিকা হট্টিটি মাঝারি আকারের হয়ে থাকে। এই পাখিটি খুবেই চটপটে ও চঞ্চল প্রকৃতির হয়ে থাকে। তার সতর্ক ভঙ্গি ও জলশয়ের পাতার ওপর দ্রুত দৌড়ানোর ক্ষমতার জন্য সুপরিচিত। লাল লতিকা হট্টিটি লম্বায় ৩৪-৩৭ সেন্টিমিটার। এদের চোখের সামনে টকটকে লাল চামড়া। সেটিই লতিকা।

৩ দিন আগে