আবিষ্কারের গল্প

কফি এলো যেভাবে

মাহমুদুল হাসান উৎস
চায়ের পরে সারা বিশ্বে জনপ্রিয় পানীয় হলো কফি

শহরকেন্দ্রিক সমাজব্যবস্থায় জনপ্রিয় এক পানীয় কফি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে ভীষণভাবে জুড়ে আছে এই পানীয়। ডায়েট থেকে শুরু করে ক্লান্তি দূর করতে কফির তুলনা নেই।

কফি এলো যেভাবেশহরকেন্দ্রিক সমাজব্যবস্থায় জনপ্রিয় এক পানীয় কফি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে ভীষণভাবে জুড়ে আছে এই পানীয়। ডায়েট থেকে শুরু করে ক্লান্তি দূর করতে কফির তুলনা নেই। মাজব্যবস্থায় জনপ্রিয় এক পানীয় কফি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে ভীষণভাবে জুড়ে আছে এই পানীয়। ডায়েট থেকে শুরু করে ক্লান্তি দূর করতে কফির তুলনা নেই।

পরিমাণের দিক থেকে ইউরোপ- আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি কফি পান করা হলেও বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। ঢাকা শহরের প্রায় প্রতিটি মোড়েই কফি শপ দেখতে পাওয়া যায়। ঢাকার পাশাপাশি গ্রামগঞ্জেও ছড়িয়ে পড়েছে এই পানীয়।

কফির এতটা জনপ্রিয়তার কারণইবা কী কিংবা কখন আবিষ্কার হয়েছিল কফি?

কফির আবিষ্কার নিয়ে কয়েকটি গল্প প্রচলিত। নবম শতকে আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ ইথিওপিয়ায় কাফা অঞ্চলে খালেদ কালদি নামে এক আরব রাখাল বালক ছিল।

একদিন ছাগল চরানোর সময় সে দেখতে পেল, তার ছাগলগুলো বেরি-জাতীয় এক প্রকার ফল খাচ্ছে। এমনকি সেদিন রাতে ছাগলগুলো সারা রাত না ঘুমিয়েই পার করে দিল। এই ব্যাপার নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিল কালদি। পরদিনও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির পর সে বুঝতে পারল সবকিছুর মূলে এই বেরি- জাতীয় ফল।

এই বেরি-জাতীয় ফল সংগ্রহ করে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায় কালদি। পরদিনই সেই ফল নিয়ে স্থানীয় মসজিদের ইমামের কাছে হাজির সে। ফলগুলো কাঁচা খাওয়া সম্ভব ছিল না, তাই

ইমাম সেই ফলগুলোকে আগুনে পোড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিছুক্ষণ পর দেখা যায় যে এই ফলগুলো থেকে বেরোচ্ছে দারুণ সুগন্ধ। পরে ইমাম এবং তার ছাত্ররা এ ফল সেদ্ধ করে দেখার চিন্তা করেন। তারা এই ফল সেদ্ধ করে তৈরি করেছিলেন পানীয়।

ধারণা করা হয়, এভাবেই প্রথম কফি আবিষ্কার হয়েছিল। সে সময়ের অনেক পর ইয়েমেনসহ স্থানীয় কয়েকটি দেশে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল কফি।

কফির উৎপত্তির ইতিহাসের অন্য প্রচলিত কাহিনিটি হচ্ছে ইয়েমেনের একজন সুফির নামে। অনেকে বলেন, ইয়েমেনের ঘোতুল আবদুল নুরুদ্দীন আবুল আল হাসান আল সাদিলি নামের এক সুফিসাধকই প্রথম কফি আবিষ্কার করেছিলেন। এই সুফিসাধক একবার বেড়াতে গিয়েছিইলেন ইথিওপিয়ায়। তখন । একটি পাখিকে নাম না জানা লাল রঙের একটি ফল খেতে দেখেন। ফলটি দেখে তিনি কৌতূহল প্রকাশ করেন এবং নিজে সেটা খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর অনেক চাঙা এবং সতেজ অনুভব করার পর পুড়িয়ে এবং পানিতে সেদ্ধ করে কফি বানানের চিন্তা করেন তিনি।

কফি নিয়ে আরও একটি কাহিনি প্রচলিত আছে। অনেকের মতে, ওমর নামে ইয়েমেনে একজন শেখ ছিলেন। তিনি অসুস্থ ব্যক্তিদের সুস্থ করতেন এবং এ জন্য পুরো দেশেই খ্যাতি ছিল তার। একবার তাকে মোকা থেকে ওসাবের মরুভূমিতে নির্বাসন দেয়া হয়েছিল। তার নির্বাসনের সময়ে একদিন ক্ষুধার জ্বালায় ঘুরতে ঘুরতে তিনি কফিগাছের পাশে বসেন। সে সময় লাল রঙের কিছু ফল পড়ে ছিল তার চারপাশে। সেই ফলগুলো মুখে দেয়ার পর তিতা অনুভব হওয়ায় তিনি সেগুলোকে পুড়িয়ে ফেলেন।

এরপর কোনোভাবে তা পানিতে মিশে গেলে দারুণ সুগন্ধ ছড়ায় এবং তা পান করার পর তিনি অনেক সতেজ অনুভব করেন। এরপর তিনি যখন এ আবিষ্কারের কথা প্রচার করেন, তখন তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং তার এই উদ্ভাবিত পানীয় সাদরে গ্রহণ করেন সবাই। এভাবেই কফির প্রচলন ঘটে।

ad
ad

ফিচার থেকে আরও পড়ুন

চুলের যত্নে কোন তেল উপকারী?

বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে চুলের গঠন, তার প্রাকৃতিক বৃদ্ধি এবং ক্ষতির কারণ নিয়ে গবেষণা করে আসছেন। চুল মূলত প্রোটিন দ্বারা গঠিত, বিশেষ করে কেরাটিন নামের একটি প্রোটিন চুলের মূল উপাদান। যখন চুল পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না কিংবা বাইরে থেকে সঠিক যত্ন পায় না, তখন তা রুক্ষ হয়ে যায়, ভেঙে যায় এবং ঝরে পড়ে। তেল মূলত চ

১ দিন আগে

দৈইখাওয়া গ্রামের হট্টিটি

লাল লতিকা হট্টিটি মাঝারি আকারের হয়ে থাকে। এই পাখিটি খুবেই চটপটে ও চঞ্চল প্রকৃতির হয়ে থাকে। তার সতর্ক ভঙ্গি ও জলশয়ের পাতার ওপর দ্রুত দৌড়ানোর ক্ষমতার জন্য সুপরিচিত। লাল লতিকা হট্টিটি লম্বায় ৩৪-৩৭ সেন্টিমিটার। এদের চোখের সামনে টকটকে লাল চামড়া। সেটিই লতিকা।

২ দিন আগে

মারা গেছেন ‘থ্রি ইডিয়েটস’ সিনেমার অধ্যাপক

অচ্যুত পোতদারের অভিনয়জীবন ছিল চার দশকেরও বেশি। তিনি ১২৫টির বেশি হিন্দি ও মারাঠি ছবিতে কাজ করেছেন। হিন্দি ও মারাঠি চলচ্চিত্র অঙ্গনে তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সহকর্মী, ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা সামাজিক মাধ্যমে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। বাস্তব জীবনেও তিনি ছিলেন নম্র, অমায়িক এবং বহুমুখী প্রতিভ

২ দিন আগে

থাইরয়েড সমস্যায় কোন কোন ফল খাওয়া উচিত

থাইরয়েড সমস্যায় ওষুধের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসেরও বড় ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে কিছু ফল আছে যেগুলো থাইরয়েড রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে। এসব ফলে থাকে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা থাইরয়েড গ্রন্থির কাজকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, শুধুমাত্র ফল খেয়েই থাইরয়েড সারানো

২ দিন আগে