শংকর লাল দাস, পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রাখাইন সম্প্রদায়ের শ্মশানের জমি ক্রমশ বেহাত হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা প্রভাব খাটিয়ে এসব জমি দখল করে বাড়ি-ঘর ও কৃষি জমি বানাচ্ছেন। অনেকে আবার শ্মশানের মাটি কেটে নিচ্ছেন।
পটুয়াখালীতে ২৭টি রাখাইন পাড়ার মধ্যে প্রায় ২০টির শ্মশানের জমি বেদখল হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু এ জনগোষ্ঠীর দাবি, স্থানীয় প্রশাসনের প্রচ্ছন্ন ছায়ায় তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি দখল করছে স্থানীয়রা। এতে তারা এখন নিজেদের শেষ সম্বলটুকুও হারাতে বসেছেন।
কলাপাড়া উপজেলার কালাচানপাড়া ও মুম্বিপাড়ার রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন জানান, তাদের পূর্বপুরুষদের শ্মশানের জমি স্থানীয়রা দখল করে নিচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মুম্বিপাড়ায় শ্মশানের দক্ষিণাংশের জমিতে টয়লেট নির্মাণ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা নজীর আহমেদ। সেখানে তিনি নিয়মিত গরু-ছাগলও চড়ান।
জানতে চাইলে নজির আহমেদ বলেন, 'আমি ২৭ বছর ধরে এখানে বাস করছি। টয়লেট নির্মাণকালে আমাকে কেউ বাধা দেয়নি। তবে এখন যদি রাখাইনরা জমি ছেড়ে দিতে বলে, আমি টয়লেট ভেঙ্গে সেটি খালি করে দেবো।'
এ পাড়ার রাখাইন সম্প্রদায়ের মাদবর হাংচিনসে বলেন, 'আমাদের শ্মশানে ৯০ শতাংশ জমি ছিল। বর্তমানে মাত্র ৩০ শতাংশ জমি আছে। বাকি জমি স্থানীয়রা দখল করে নিয়ে গেছে।'
অন্যদিকে, কালাচান পাড়ায় জালাল মিস্ত্রি শ্মশানের পাশে জমি কেটে বসতবাড়ি উঁচু করেছেন। দুই বছর আগে প্রায় ২০ শতাংশ জমির মাটি কেটে নেন তিনি। ফলে জমিটি অনেক নিচু হয়ে যায়। বৃষ্টি হলেই পানি জমে সেখানে।
তবে শ্মশানের জমি দখলের বিষয়টি অস্বীকার করেন জালাল মিস্ত্রি। তিনি বলেন, 'আমি তাদের জমি দখল কিংবা সেখান থেকে মাটি কাটিনি। ওই জমি থেকে স্থানীয় কয়েকজন প্রতি বছর মাটি কেটে বাড়ি উঁচু করে এবং রান্নার চুলা তৈরির জন্য মাটি নিয়ে যায়। এর ফলে ওই জমিটা এখন নিচু হয়ে গেছে।'
কালাচান পাড়ার মাদবর অংচাচুং জানান, তাদের শ্মশানটিতে ৭০ শতাংশ জমি ছিল। তবে স্থানীয়রা জোর করে তাদের শ্মশানের জমি নানাভাবে দখল করে নেয়ায় বর্তমানে মাত্র ৩০ শতাংশ অবশিষ্ট আছে।
তিনি আরও জানান, অনেক সময় শ্মশানের পাশে খালের তীর ভরাট হয়ে খাসজমি জেগে ওঠে। তখন জায়গার অভাবে সেই জমিই শ্মশানের কাজে ব্যবহার করেন তারা।
রাখাইনদের জমি অধিকার রক্ষায় কাজ করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কারিতাস। আইনি সহায়তার মাধ্যমে রাখাইনদের জমি পুনরুদ্ধারে কাজ করে সংস্থাটি।
পটুয়াখালী ও বরগুনার আদিবাসী রাখাইনদের ভূমি ও সম্পদের অধিকার সংরক্ষণে ‘ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ফর ডিসএডভান্সড ইনডিজিনাস এন্ড মার্জিনাল কমিউিনিটি (আইডিপিডিসি)' নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে কারিতাস।
এ প্রকল্পের সভাপতি (এডভোকেসি) মংথিনজো বলেন, আমরা রাখাইনদের জমি জবরদখল মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছি। আইনিসহ নানাবিধ সহায়তা পাওয়ায় রাখাইন জনগোষ্ঠী আগের তুলনায় এখন বেশি সচেতন।'
পটুয়াখালীর মতো বরগুনার তালতলী উপজেলার লাউপাড়া ও ঠাকুরপাড়া এলাকার রাখাইন পাড়ার শ্মশানের জমিও প্রভাবশালীদের দখলে। লাউপাড়া শ্মশানের দেড় একর জমির প্রায় ৩০ শতাংশ এরই মধ্যে বেদখল হয়ে গেছে।
আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বরিশাল অঞ্চলের সাংগঠনিক সম্পাদক মংম্যা বলেন, 'স্থানীয় প্রভাবশালীদের কবল থেকে রাখাইনদের জমি মুক্ত রাখতে আমরা ২০০৭ সাল থেকে কাজ করছি। বিগত ১৮ বছরে পটুয়াখালী ও বরগুনায় রাখাইনদের জমি উদ্ধারে আদালতে ১১২টি মামলা করি আমরা। পরে আদালতের রায়ে দুই জেলায় মোট ৮৪০ একর জমি উদ্ধার হয়।'
এখনও রাখাইনদের প্রতিটি পরিবারে জমি উদ্ধার নিয়ে গড়ে তিনটি করে মামলা চলমান আছে বলেও জানান তিনি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম জানান, রাখাইনদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে প্রশাসন আন্তরিক এবং শ্মশান দখলের অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা রাখাইনদের উন্নয়নে নয়পাড়া রাখাইন পল্লীতে দুইটি পাকা ঘর তুলে দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে তাদের জন্য আরও আবাসনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া কুয়াকাটায় রাখাইনদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক উন্নয়নেও আমরা কাজ করছি।'
পটুয়াখালীর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রাখাইন সম্প্রদায়ের শ্মশানের জমি ক্রমশ বেহাত হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা প্রভাব খাটিয়ে এসব জমি দখল করে বাড়ি-ঘর ও কৃষি জমি বানাচ্ছেন। অনেকে আবার শ্মশানের মাটি কেটে নিচ্ছেন।
পটুয়াখালীতে ২৭টি রাখাইন পাড়ার মধ্যে প্রায় ২০টির শ্মশানের জমি বেদখল হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু এ জনগোষ্ঠীর দাবি, স্থানীয় প্রশাসনের প্রচ্ছন্ন ছায়ায় তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি দখল করছে স্থানীয়রা। এতে তারা এখন নিজেদের শেষ সম্বলটুকুও হারাতে বসেছেন।
কলাপাড়া উপজেলার কালাচানপাড়া ও মুম্বিপাড়ার রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন জানান, তাদের পূর্বপুরুষদের শ্মশানের জমি স্থানীয়রা দখল করে নিচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মুম্বিপাড়ায় শ্মশানের দক্ষিণাংশের জমিতে টয়লেট নির্মাণ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা নজীর আহমেদ। সেখানে তিনি নিয়মিত গরু-ছাগলও চড়ান।
জানতে চাইলে নজির আহমেদ বলেন, 'আমি ২৭ বছর ধরে এখানে বাস করছি। টয়লেট নির্মাণকালে আমাকে কেউ বাধা দেয়নি। তবে এখন যদি রাখাইনরা জমি ছেড়ে দিতে বলে, আমি টয়লেট ভেঙ্গে সেটি খালি করে দেবো।'
এ পাড়ার রাখাইন সম্প্রদায়ের মাদবর হাংচিনসে বলেন, 'আমাদের শ্মশানে ৯০ শতাংশ জমি ছিল। বর্তমানে মাত্র ৩০ শতাংশ জমি আছে। বাকি জমি স্থানীয়রা দখল করে নিয়ে গেছে।'
অন্যদিকে, কালাচান পাড়ায় জালাল মিস্ত্রি শ্মশানের পাশে জমি কেটে বসতবাড়ি উঁচু করেছেন। দুই বছর আগে প্রায় ২০ শতাংশ জমির মাটি কেটে নেন তিনি। ফলে জমিটি অনেক নিচু হয়ে যায়। বৃষ্টি হলেই পানি জমে সেখানে।
তবে শ্মশানের জমি দখলের বিষয়টি অস্বীকার করেন জালাল মিস্ত্রি। তিনি বলেন, 'আমি তাদের জমি দখল কিংবা সেখান থেকে মাটি কাটিনি। ওই জমি থেকে স্থানীয় কয়েকজন প্রতি বছর মাটি কেটে বাড়ি উঁচু করে এবং রান্নার চুলা তৈরির জন্য মাটি নিয়ে যায়। এর ফলে ওই জমিটা এখন নিচু হয়ে গেছে।'
কালাচান পাড়ার মাদবর অংচাচুং জানান, তাদের শ্মশানটিতে ৭০ শতাংশ জমি ছিল। তবে স্থানীয়রা জোর করে তাদের শ্মশানের জমি নানাভাবে দখল করে নেয়ায় বর্তমানে মাত্র ৩০ শতাংশ অবশিষ্ট আছে।
তিনি আরও জানান, অনেক সময় শ্মশানের পাশে খালের তীর ভরাট হয়ে খাসজমি জেগে ওঠে। তখন জায়গার অভাবে সেই জমিই শ্মশানের কাজে ব্যবহার করেন তারা।
রাখাইনদের জমি অধিকার রক্ষায় কাজ করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কারিতাস। আইনি সহায়তার মাধ্যমে রাখাইনদের জমি পুনরুদ্ধারে কাজ করে সংস্থাটি।
পটুয়াখালী ও বরগুনার আদিবাসী রাখাইনদের ভূমি ও সম্পদের অধিকার সংরক্ষণে ‘ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ফর ডিসএডভান্সড ইনডিজিনাস এন্ড মার্জিনাল কমিউিনিটি (আইডিপিডিসি)' নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে কারিতাস।
এ প্রকল্পের সভাপতি (এডভোকেসি) মংথিনজো বলেন, আমরা রাখাইনদের জমি জবরদখল মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছি। আইনিসহ নানাবিধ সহায়তা পাওয়ায় রাখাইন জনগোষ্ঠী আগের তুলনায় এখন বেশি সচেতন।'
পটুয়াখালীর মতো বরগুনার তালতলী উপজেলার লাউপাড়া ও ঠাকুরপাড়া এলাকার রাখাইন পাড়ার শ্মশানের জমিও প্রভাবশালীদের দখলে। লাউপাড়া শ্মশানের দেড় একর জমির প্রায় ৩০ শতাংশ এরই মধ্যে বেদখল হয়ে গেছে।
আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বরিশাল অঞ্চলের সাংগঠনিক সম্পাদক মংম্যা বলেন, 'স্থানীয় প্রভাবশালীদের কবল থেকে রাখাইনদের জমি মুক্ত রাখতে আমরা ২০০৭ সাল থেকে কাজ করছি। বিগত ১৮ বছরে পটুয়াখালী ও বরগুনায় রাখাইনদের জমি উদ্ধারে আদালতে ১১২টি মামলা করি আমরা। পরে আদালতের রায়ে দুই জেলায় মোট ৮৪০ একর জমি উদ্ধার হয়।'
এখনও রাখাইনদের প্রতিটি পরিবারে জমি উদ্ধার নিয়ে গড়ে তিনটি করে মামলা চলমান আছে বলেও জানান তিনি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম জানান, রাখাইনদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে প্রশাসন আন্তরিক এবং শ্মশান দখলের অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা রাখাইনদের উন্নয়নে নয়পাড়া রাখাইন পল্লীতে দুইটি পাকা ঘর তুলে দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে তাদের জন্য আরও আবাসনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া কুয়াকাটায় রাখাইনদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক উন্নয়নেও আমরা কাজ করছি।'
পোস্টে অভিনেতা খায়রুল বাসার লিখেন, আল্লাহর গজব পড়ুক তাদের ওপর যারা মানুষ হতে পারল না। যারা জীবজন্তুর বৈশিষ্ট্যকেও হার মানিয়েছে। আল্লাহ এ দেশকে হেফাজত করুন কিছু ভালো মানুষের উসিলায়।
২১ ঘণ্টা আগেআন্তর্জাতিক আইনে এই ব্যক্তিদের ‘অ্যাকোম্প্লিস টার্নড প্রোসিকিউশন উইটনেস’ বলা হয়। ইংল্যান্ড, আমেরিকা বা ভারত—প্রায় সব আধুনিক বিচারব্যবস্থায়ই রাজসাক্ষীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
২ দিন আগেবেনাপোল সীমান্তে ভারতীয়দের অবাধ যাতায়াত ও চোরাচালানের অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশিরা ভারতে ট্যুরিস্ট বা বিজনেস ভিসা পাচ্ছে না, অথচ কলকাতাস্থ বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশন থেকে প্রতিদিন শত শত ভারতীয় বিজনেস ভিসা পেয়ে বেনাপোলে প্রবেশ করছেন।
২ দিন আগেহুতিদের প্রযুক্তিগত উত্থান শুরু হয় ২০১৫ সালের দিকে, যখন সৌদি আরব তাদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করে। এই সময় থেকেই হুতিরা বুঝে যায়, শুধু ছোট অস্ত্র বা স্থানীয় হামলা দিয়ে টিকে থাকা যাবে না। দরকার প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিরোধ। সেই থেকেই শুরু হয় তাদের ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র, রাডার, এবং স্যাটেলাইট-নির্ভর হামলা
৩ দিন আগে