মতামত

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েন দূর হোক

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৫, ১৫: ৪১

ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনামলে উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকেই মুসলিম জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে। স্যার সৈয়দ আহমদ পিছিয়ে পড়া মুসলিম জাতির শিক্ষার উন্নয়নের জন্য ১৮৭৫ সালে আলীগড়ে মোহামেডান অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তীতে ১৯২০ সালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়।

বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকেই খাজা সলিমুল্লাহ, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, আল্লামা ইকবাল, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দ্দী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ অনুধাবন করেন যে, ভারতবর্ষ স্বাধীন হলে মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাসভূমির প্রয়োজন হবে। অন্যথায় ভারতবর্ষের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির মধ্যে গৃহযুদ্ধ লেগেই থাকবে। রাজনৈতিক দল হিসেবে কংগ্রেসের পাশাপাশি ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগও প্রতিষ্ঠিত হয়। বৃটিশ শাসনের শেষদিকে বেশ কয়েকটি হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা সংঘঠিত হয়। ১৯৪৬ সালে বাংলা বিহার, পাঞ্জাব ও দিল্লীতে হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে যে রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা হয় তা হিন্দু মুসলমানদের পৃথক রাষ্ট্রের দাবি জোরালো করে। পর্যায়ক্রমে মুসলমানদের স্বতন্ত্র আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার দাবি দৃঢ় হতে থাকে, যার ফলশ্রতিতে ১৯৪৭ সালে দেশভাগসহ ভারতবর্ষ বৃটিশ শাসনমুক্ত হয়।

১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ লাহোরে অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত মুসলিম লীগের অধিবেশনে গৃহীত প্রস্তাবের মূল বিষয় ছিল ভারত উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোকে নিয়ে এক বা একাধিক স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা । কিন্তু পরবর্তীতে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৯৪৬ সালে দিল্লীতে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগ অধিবেশনে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ্র উদ্দ্যোগে একটি রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তদনুযায়ী ১৯৪৭ সালের ১৪ আগষ্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। দেশভাগের আগে ও পরে অনুষ্ঠিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় বহু হিন্দু-মুসলমান নর-নারী মৃত্যুবরণ করেন। বিশেষ করে পূর্ব ও পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব, বিহার, আসাম ও ত্রিপুরাতেই দাঙ্গার প্রকোপ বেশি দেখা যায়। হিন্দু ও মুসলমানদের জন্য স্বতন্ত্র আবাসভূমি প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় পূর্ববঙ্গ থেকে বহু হিন্দু পরিবার পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের অন্যান্য রাষ্ট্রে চলে যায়। অনুরূপভাবে অসংখ্য মুসলিম পরিবার ভারত থেকে পাকিস্তানে বিশেষ করে পূর্ববঙ্গে (পূর্ব পাকিস্থান) চলে আসে। এরপরও দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দু জনসংখ্যা ছিল ১২-১৫ শতাংশ, আর ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ২০ শতাংশ।

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগে দুদেশের সম্পর্ক তেমন খারাপ ছিল না। সীমিত আকারে হলেও পূর্ব পাকিস্তানের সাথে ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ও সাংস্কৃতিক বিনিময় ভালোভাবেই চলছিল। তবে যুদ্ধের পর নানা বিধিনিষেধে উল্লিখিত ৩ টি ক্ষেত্রেই নিম্নগতি পরিলক্ষিত হয়। যুদ্ধের পর নিরাপত্তার অভাবে বহু হিন্দু পরিবার ভারতে চলে যায়। অবশ্য বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরও বিছিন্নভাবে এ ধারা অব্যহত থাকে, যার ফলে বর্তমানে বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা ৮-৯ শতাংশের মত।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ফলে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানের স্থলে বাংলাদেশ সৃষ্টি হলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন মাত্রা মুক্ত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে ভারত প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে । প্রায় এক কোটি শরণার্থী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও মুক্তিযোদ্ধা ভারতে আশ্রয়, সামরিক প্রশিক্ষণ ও রাজনৈতিক সমর্থন লাভ করে। এর প্রতিদান হিসেবে ১৯৭২ সালের মার্চেই ২৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি ভারতের অধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্ঠা হিসেবে সমালোচিত হলেও সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশের জন্য এটি ছিল ‘কৌশলগত বন্ধুত্বপূর্ণ চুক্তি’। পরবর্তী সময়ে (১৯৭২-৭৪) দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ চুক্তি, ট্রেড অ্যান্ড পেমেন্টস অ্যারেঞ্জমেন্ট চুক্তি উভয় দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা ও বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

১৯৭৫ সালের আগষ্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকার না থাকায় পর দুদেশের পারস্পরিক সম্পর্ক অনেকটা তীক্ত হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় সম্পর্ক উন্নয়ন ও বাণিজ্য বাড়াতে উভয় দেশের সরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ নেয়া হয়। ১৯৭৬ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের তৎকালীন বাণিজ্য সচিবের ভারত সফর কালে ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য সচিবের সাথে একটি কার্যবিবরণী স্বাক্ষর করেন যার ফলশ্রুতিতে পরবর্তী সময় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির নবায়ন হয়। পরবর্তীতে সার্কের কার্যক্রম চালু হলে ১৯৯৩ সালের এপ্রিলে সার্কের সপ্তম শীর্ষ সম্মেলনে সার্ক সদস্যরা সাপটা (সার্ক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য ব্যবস্থা) চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয় দক্ষিণ-এশিয়া মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল বা সাফটা । তবে যে লক্ষ্যে মুক্তি বাণিজ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল তা মূলত ভারতের অসহযোগিতা ও রক্ষণশীলতা এবং ভারত-পাকিস্তান তিক্ত সম্পর্কের কারণে সফল হয়নি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে শুরু করে ভারতের ইচ্ছা ও অবস্থান ছিল বাংলাদেশে এমন একটি সরকার থাকবে যে ভারতের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরম মিত্র হয়ে থাকবে, দ্বিতীয়ত: পাকিস্তান সমর্থক ধর্মীয় দলগুলোকে দমন করে রাখবে এবং তৃতীয়ত: ভারতকে অবাধ বাণিজ্য সুবিধা দেবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে ভারতের সাথে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক ছিল, খন্দকার মোশতাক কিংবা পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট জিয়া ও রাষ্ট্রপতি এরশাদের সময়ে তেমনটা থাকেনি। প্রায় বিশ বছর দুজন সেনাশাসক ও তাদের প্রতিষ্ঠিত দলীয় শাসনের সময় ভারতীয় তোষণ নীতি গ্রহণ করা হয়নি বরং তারা পারস্পরিক আত্নমর্যাদাশীল অংশীদারীত্বে বিশ্বাস করতেন।

১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ক্রমশ: উন্নততর হতে থাকে। ১৯৯৭ সালে গঙ্গা পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, ফলে বাংলাদেশের পদ্মা নদীতে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। পারস্পরিক আমদানি রফতানিও বাড়তে থাকে । তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সহমর্মিতার ভাব থাকলেও ভারতের দিক থেকে সৎ প্রতিবেশীসূলভ বন্ধুত্ব পাওয়া যায়নি । গঙ্গা পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও ভারত চুক্তি অনুযায়ী মাঝে মাঝে পানির ন্যায্য হিস্য চালু রাখে না। তাছাড়া ভারত আরও ৫৩ টি অভিন্ন নদীর পানি নিয়ন্ত্রিত করে ব্যবহার করে এবং বাংলাদেশকে ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করে। ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) সীমান্ত এলাকায় প্রায়ই বাংলাদেশী নাগরিক হত্যা করে।

বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর থাকলেও বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক স্টেশনে অযৌক্তিক অশুল্ক বাধা, অ্যান্টিডাম্পিং ডিউটি আরোপ, মাল খালাসে বিলম্ব ইত্যাদির মাধ্যমে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি নিরুৎসাহিত করে। অন্যদিকে বাংলাদেশ প্রয়োজনের তাগিদে প্রচুর পরিমাণে চাল,পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ অন্যান্য কৃষিজ দ্রব্য, চিনি, সুতা, যানবাহন, মেশিনারীজসহ শতাধিক পণ্য আমদানি করে। ফলে দীর্ঘ সময় যাবৎ ভারতের সাথে বাংলাদেশের অসম বাণিজ্য চলে আসছে। ভারতের রপ্তানি মোট বাণিজ্যের প্রায় ৮৫ শতাংশ। বর্তমানে চীনের পর ভারত বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি হয় ১৫৯ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য আর ভারত থেকে আমদানির পরিমাণ ১১০৬.৫৮ কোটি ডলার । ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত আমদানি মূল্য ১১৪৫.৫৯ কোটি ডলার এবং বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য রপ্তানি মূল্য কমবেশি ২০০ কোটি ডলার।

বাংলাদেশের বিভিন্ন কারিগরি পেশায় বহু ভারতীয় নাগারিক নিয়োজিত। ভারতের প্রবাসী বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ পঞ্চম বৃহত্তম দেশ। এছাড়া ভ্রমণ, কেনাকাটা, চিকিৎসা ও লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে প্রচুর বাংলাদেশী ভারতে যাতায়াত করে ভারতের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।

পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক অন্য সময়ের তুলনায় ভাল থাকে । ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হলে দুদেশের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সর্ম্পক আবার চাঙা হয়। ২০১০ সালে শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে বেশকিছু সমঝোতা স্মারক কিংবা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এগুলো হচ্ছে-

দুদেশ একে অন্যের সমুদ্র, রেল ও সড়ক পথ ব্যবহার করবে।

নেপাল ও ভূটানে ট্রানজিটের জন্য বাংলাদেশকে ভারতের ভূখন্ড ব্যবহারের অনুমতি ।

চট্রগ্রাম ও মংলা বন্দর ভারতকে ব্যবহারের সুযোগ।

বাংলাদেশের রেল ও সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন ও নদী পুণঃখননের জন্য ১০০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা (লাইন অব ক্রেডিট)।

বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটানোর জন্য ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি।

তিস্তার পানি চুক্তি বিষয়ে দুই দেশের পানি সম্পদ মন্ত্রীর বৈঠকের সিদ্ধান্ত।

২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশে ফিরতি সফর করেন। এ সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ৪৬ টি পণ্যের শুল্কমুক্ত, কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের ঘোষণা দেন। উভয় দেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ ও হত্যাকাণ্ড বন্ধে একমত হন। ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিট ১ বিলিয়ন ডলারের স্থলে ২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ আশা করছিল যে, এ সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হবে। উভয়পক্ষে সেরকম প্রস্ততিও ছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বিরোধীতার কারণে মনমোহন সিং এ চুক্তি আলোচ্য বিষয় থেকে বাদ দেন । বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও ভারতের উত্তর-পূর্বঞ্চলের ৭টি রাজ্যের মাঝে যোগাযোগের জন্য ভারতকে ট্রানজিটসহ করেয়কটি চুক্তির আলোচনা স্থগিত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সচিবদের নির্দেশ দেন।

বাংলাদেশে ২০১৪ এর একতরফা নির্বাচনে ভারতের কংগ্রেস সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পূর্ণ সমর্থন দেয়। ২০১৪ সালের মে মাসে ভারতে নরেন্দ্র মোদীর সরকার ক্ষমতাসীন হলে আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে ভারতের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হয়। ২০১৫ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকালে লাইন অব ক্রেডিট ১০০ কোটি ডলারের স্থলে ২০০ কোটি ডলারে উন্নীত করার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ অর্থ ভারতের সাথে বাংলাদেশের সড়ক ও রেল যোগাযোগ পুণঃস্থাপন, বাংলাদেশর উপর দিয়ে কলকাতা থেকে উত্তর পূর্বাঞ্চলের ৭টি রাজ্যে যাতায়াতের রাস্তা উন্নয়নসহ দেশের আরো কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয়ের সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া চট্রগ্রাম ও মংলার সাথে ভারতের সরাসরি জাহাজ চলাচলের জন্য উপকূলীয় শিপিং চুক্তি, ১৯৭৪ সালের ল্যান্ড বাউন্ডারী এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী স্থল সীমান্ত চুক্তি, আগরতলা-ঢাকা-কলকাতা বাস সার্ভিস প্রটোকল, রেলপথ ও ট্রানজিট চুক্তি নবায়ন করা হয়।

পরবর্তীতে ২০১৭ সালে ভারতীয় কোম্পানি আদানীর সাথে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক এমন পর্যায়ে নিয়ে যান যে মোদী সরকার চেয়েছিল যাতে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ক্ষমতায় র্দীঘকাল টিকে থাকেন। কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে ভারতের সমর্থন ও সাহসে ২০১৪,২০১৮ ও ২০২৪ সালের প্রশ্নবিদ্ধ নিবার্চনে জয়লাভ করে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকেন। শেখ হাসিনার সরকার ভারতকে ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্ট, সরাসরি রেল ও বাস যোগাযোগের সুবিধা ছাড়াও ২০২৩ সালে চট্রগ্রাম ও মংলা স্থায়ীভাবে ব্যবহারের অনুমতি দেয় । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের ০৩ জুলাই পার্লামেন্টে বলেন ‘বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে বাংলাদেশ দরজা বন্ধ করে থাকতে পারেনা। ভারতকে ট্রানজিট দেয়ার বিপরীতে বাংলাদেশ ট্রানজিট ও ট্রান্সশীপমেন্ট সুবিধা পেয়েছে। এছাড়া ভারতীয় মান চলাচলে আমাদের দেশ লাভবান হয়েছে। বাংলাদেশ ট্রান্স এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত হবে। তিনি বলেন আসাম- পার্বতীপুর গ্যাস পাইপলাইন স্থাপনের ফলে আমরা সস্তায় জ্বালানী ক্রয় করতে পারবো। অন্যত্র শেখ হাসিনা বলেন, তিন বিঘা করিডোর ও ছিটমহল সমস্যার সমাধান বাংলাদেশের জন্য যুগান্তকারী সাফল্য। তবে কথারচ্ছলে কোনো এক সাংবাদিক সম্মোলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, “ভারতের কাছ থেকে আমরা যা নিয়েছি তার চেয়ে বেশি দিয়েছি।”

তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে ভারতের দিক থেকে অস্বচ্ছতা রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত বিষয়টি অমীমাংসিত থাকায় তিস্তার পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ চীনের সাথে আলোচনা শুরু করে। বস্তত: চীন এ ব্যপারে আশ্বাসও প্রদান করে। এপর্যায়ে ২১-২২ জুন ২০২৫ শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে ভারত সরকার তিস্তার পানিপ্রবাহ চুক্তির পরিবর্তে তিস্তার পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় সম্মত হয়। চীনের আলোচনা ও প্রস্তাবে ভারত ঢুকে পড়ার ফলে চীন সরকার নাখোশ হয় যা প্রধানমন্ত্রীর ৮-১০ জুলাই চীন সফরে প্রতিফলিত হয়।

৫ আগষ্ট ২০২৪ এর গণ অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে তিনি আত্নরক্ষার্থে ভারতে চলে যান। ২০২৪ এর আগষ্টের পর বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্কে ফাটল ধরে। গণ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র নেতাদের কেউ কেউ এবং দক্ষিণপন্থী দলগুলোর কোনো কোনো নেতা কথিত ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের’বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।

শেখ হাসিনার পতনের পর ভারতীয় সরকার বাংলাদেশের প্রতি বৈরীভাবাপন্ন হয়ে পড়ে। বাংলাদেশীদের ভারতেরর ভিসা সুযোগ সংকুচিত করে। ফলে শিক্ষা, চিকিৎসা কিংবা কেনা-কাটার জন্য ভারত যাওয়া প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। এতে উভয় দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আগরতলায় বাংলাদশের উপদূতাবাসে ভারতীয় উগ্রপন্থীরা হামলা করে দূতবাস বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানী কমে যায়। গত ৮ই এপ্রিল ২০২৫ ভারতের বন্দর ব্যবহার করে অন্যদেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা বাতিল করে। এদিকে ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশ তার স্থল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে সুতা আমদানি বাতিল করে। প্রতিউত্তরে ১৭ এপ্রিল ভারত তার স্থলবন্দর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম,ত্রিপুরা, মেঘালয় ও মিজোরামে খাদ্য, পানীয়, আসবাবপত্র, প্লাস্টিক পণ্য, সুতাসহ ৯ ধরনের পণ্য বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বাতিল করে। ভারতীয় প্রচার মাধ্যমগুলো বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ও কুৎসা রটনায় লিপ্ত হয়। অন্তবর্তী সরকারের প্রতি ভারত সরকারের মনোভাবও ইতিবাচক নয়। ভারতীয় মিডিয়া ও সরকার আগষ্ট ২৪ অভ্যূত্থানের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ করে । পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর গত ২২ ফেরুয়ারি ২০২৫ ভারতের দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন ‘ভারত ও বাংলাদেশ প্রতিবেশী দুটি রাষ্ট্র্র, ‘অতএব, বাংলাদেশের ঠিক করতে হবে তারা কী ধরনের সম্পর্ক আমাদের সঙ্গে রাখতে চায়।’

তিনি বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের দু-একজন উপদেষ্টা কর্তৃক ভারতকে দোষারোপের কথাও উল্লেখ করেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি বাংলাদেশী মুসলমান ও সরকারের আচরণের বিষয়েও কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের বক্তব্যের দুদিন পর ২৪ ফ্রেরুয়ারি বাংলাদেশের অন্তর্বতী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন পাল্টা জবাবে বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশ নিজেদের অবস্থান ঠিক করবে। একই সময়ে ভারতকেও সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায় ।... আমরা পারস্পরিক বোঝাপড়ার ওপর ভিত্তি করে একটি ভাল কার্যকর সম্পর্ক চাই ।’

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু প্রশ্নে ভারত যে অভিযোগ করেছে তা না করে নিজ দেশে মুসলিম নির্যাতন কমিয়ে তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত বলে উভয় দেশের সুশীল সমাজ মনে করেন। ১৯৪৭ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত ভারতে যতগুলো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে এবং যত সংখ্যক মুসলমান নিধন হয়েছে তা সত্যিই নজীরবিহীন ও দুঃখজনক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি হিন্দুত্ববাদী সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে মুসলমান হত্যাকাণ্ড এবং তাদের অধিকার হরণ বহুগুণে বেড়েছে। বাংলাদেশে বিছিন্নভাবে কিছু সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও বাংলাদেশের জনগণ ও সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। বিচ্ছিন্নভাবে সংঘঠিত কতিপয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা নিতান্তই রাজনৈতিক এবং স্বার্থন্বেষী মহলের উসকানিমূলক । সরকার এসব ক্ষেত্রে ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

বলতে গেলে ভারতের সাথে বাংলাদেশের মানুষের কোনো নৈতিক বিরোধ নেই। বাংলাদশের জনগণ সৎ প্রতিবেশিসুলভ সম্পর্ক বজায় রেখে ব্যবসা বাণিজ্যসহ পারস্পরিক আদান-প্রদানে আগ্রহী। তবে বাংলাদেশের মানুষ ভারতের আধিপত্য পছন্দ করেনা। বিগত সরকারের শাসনামলে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি সমর্থনের বিনিময়ে ভারত অনেকটা আধিপত্য বিস্তার করেছিল। সরকার পতনের পর ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাতে বুঝা যায়, বাংলাদেশের জনগণের সাথে নয়, একটি দলীয় সরকারের সাথে ভারত সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। শেখ হাসিনার পতন ভারতের জন্য একটি বড় ধাক্কা। বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি আওয়ামী লীগকে ঘিরেই সাজানো। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তি ও দলের স্বার্থ দেখেছে ভারত।

বাংলাদেশের জনগণ ও সরকার ভারতের সাথে আত্নমর্যাদাশীল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায়। অন্তর্বতী সরকারের পক্ষ থেকেও এ ব্যপারে নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। গত এপ্রিলে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বিমস্টেক সম্মেলনের সাইড লাইনে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে বৈঠকে সম্পর্ক উন্নয়নে তাঁর সরকারের সদিচ্ছা ব্যক্ত করেন। উভয় দেশের কূটনীতিকগণের মাধ্যমেও সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে প্রফেসর ইউনূসের বক্তব্য হলো- ঢাকা-দিল্লী সম্পর্ক হতে হবে সম্মান, ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে। মার্চের শেষ সপ্তাহে গণচীনে রাষ্ট্রীয় সফরের সময় প্রধান উপদেষ্ট্রা তাঁর এক বক্তব্যে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের ৭টি রাজ্যকে ‘ল্যান্ড-লক্ড’ আখ্যায়িত করেন এবং বলেন বাংলাদেশ হচ্ছে সাগরের একক অভিভাবক ‘চিকেন নেক’করিডোর ব্যবহার করে ভারত ও চীন সমুদ্রে প্রবেশ করে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে। এতে তিন দেশেই লাভবান হবে। প্রফেসর ইউনূসের এরুপ বক্তব্যে ভারত সরকার ও জনগণ খুবই অসন্তুষ্ট ও রাগান্তিত্ব হয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে।

ভারত বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী রাষ্ট্র। ভারতের সাথে বাংলাদেশের মানুষের কোনো আত্মীক বিরোধ নেই, বরং শত শত বছর একই রাষ্ট্রের ভূসীমায় বসবাসের নজীর রয়েছে। ভারতের সাথে বাংলাদেশের সীমানা ১ হাজার ৮০০ মাইল। পশ্চিমবঙ্গের সাথে বাংলাদেশের ভাষা ও সংস্কৃতি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। কাজেই দুদেশের সম্পর্ক খারাপ হওয়া উভয় দেশের জন্য অকল্যাণকর । বর্তমানে দুদেশের বৈরিতা রাজনৈতিক। রাজনৈতিক ভাবেই এর মীমাংসা করতে হবে। সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণে উভয় দেশেকেই এগিয়ে আসতে হবে। এ ব্যপারে বৃহৎ দেশ হিসেবে ভারতের উদ্যোগ অধিক ফলপ্রসূ হবে। আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানের পর সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশী হত্যা, মুসলমানদের বাংলাদেশে ‘পুশইন’ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সরকারি-বেসরকারি অপপ্রচার ইত্যাদি বন্ধ না হলে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। একইভাবে বাংলাদেশের সরকারি মহল কিংবা অন্যকোনো মহল থেকে ভারতের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য যা দুদেশের সম্পর্কে ফাটল ধরায় সেগুলো বন্ধ করতে হবে। পারস্পরিক স্বার্থে আগের মতো উভয় দেশের ভিসা প্রদান সহজীকরণ এবং ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখা উভয় দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থেই প্রয়োজন। বিগত তিন দশকেরও বেশি সময়ে দুদেশের মধ্যে যে আন্তঃনিভর্রশীলতা গড়ে উঠেছে তা নষ্ট হতে দেওয়া উভয়ের জন্যই হবে আত্নঘাতি। বাংলাদেশ নিয়ে পররাষ্ট্রনীতিতে ভারতের সকল দল ঐক্যবদ্ধ। আমাদের দেশেও ঐক্যবদ্ধ কৌশলের প্রয়োজন। ভারতীয় সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদি তাঁর এক বক্তব্যে বলেন- ‘আমরা প্রতিবেশী। আমাদের এক সঙ্গে থাকতে হবে। একে অপরকে বুঝতে হবে । কোনো ধরনের শক্রতা করলে আমাদের নিজেদেরই ক্ষতি এ উপলব্ধি ভারতীয় সরকার ও জনগণের মধ্যে যেমন আসতে হবে বাংলাদেশের সরকার, রাজনৈতিক দল ও জনগণকেও তা বুঝতে হবে। আশা করা যায় বাংলাদেশের বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার এবং অদূর ভবিষ্যতে আগত রাজনৈতিক সরকার এ বিষয়ে মনযোগী হবে।

লেখক: সাবেক সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত

ad
ad

মতামত থেকে আরও পড়ুন

নির্বাচন ঘিরে অনিশ্চয়তা— শেষ, নাকি সাময়িক বিরতি?

বিএনপি, যাদের এক দশকের বেশি সময় ধরে রাজনীতিতে কোণঠাসা করে রাখা হয়েছিল, তারা চাইছিল ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হোক, যাতে তারা নিজেদের অবস্থান ফের শক্ত করতে পারে। তবে এনসিপি ও জামায়াত মনে করে, আগে সংবিধান সংস্কার ও নির্বাচন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন দরকার—তারপরেই জাতীয় নির্বাচন দেওয়া যেতে পার

৪ দিন আগে

৩৬ জুলাইয়ের আলো কি মেঘে ঢাকা পড়ছে?

দিনটি এখন ইতিহাসে খোদাই হয়ে আছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়— এটা কি কেবল রোমাঞ্চকর এক স্মৃতি, নাকি বদলে দিয়েছে দেশের ভবিষ্যৎগতি? যে আগুন জ্বলে উঠেছিল সেদিন, তা কি এখনও দীপ্ত? নাকি ঢেকে যাচ্ছে নতুন হতাশার ছায়ায়?

৬ দিন আগে

পুঁজিবাজারের সম্ভাবনা কাজে লাগানোর এখনই সময়

তবে বহু বছর পর ব্যাংক ও বীমা খাত একসঙ্গে ধনাত্মক ধারায় প্রবেশ করেছে। এর কৃতিত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর দাবি করতেই পারেন। তিনি ধারাবাহিকভাবে ব্যাংক খাতে নীতি ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে গেছেন এবং আমানতকারীদের আস্থা ধরে রেখেছেন।

৮ দিন আগে

মধ্যপ্রাচ্যের দুষ্টক্ষত ইসরাইল আরববিশ্বের নিরাপত্তায় হুমকি

আমরা যদি পেছনের দিকে ফিরে তাকাই দেখা যায় যে, যুক্তরাজ্যই মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার বিষয়ে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড আর্থার বালফোর ১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর জায়নবাদী নেতা ব্যারণ রথচাইল্ডকে এক পত্রে বৃটিশ সরকার কর্তৃক ইহুদী জনগণের জন্য ফিলিস্তিনে জাতীয় আবাসভূমি গড়ে

৯ দিন আগে