অরুণাভ বিশ্বাস
ইসরায়েল নামটি উচ্চারণ ফিলিস্তিনের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কথা মাথায় আসে। কিন্তু ইসরায়েলের সঙ্গ ইয়েমেনেও বৈরীতা আছে। ইসরায়েল ও ইয়েমেনের মধ্যে সরাসরি সীমান্ত নেই, বড় ধরনের যুদ্ধও হয়নি। তবু, এই দুই রাষ্ট্রের সম্পর্ক ইতিহাসের গভীরে প্রোথিত, যার শেকড় রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতি, ধর্মীয় বিভাজন এবং সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামের মধ্যে।
১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই আরব দেশগুলোর মধ্যে এই রাষ্ট্রের প্রতি একধরনের ঐক্যবদ্ধ বিরোধিতা তৈরি হয়। ইয়েমেন, সে সময় ব্রিটিশ এবং ইমামি শাসনের মাঝে দ্বিধাবিভক্ত একটি দেশ হলেও, আরব জাতিসত্তার অংশ হিসেবে ইসরায়েলের বিরোধিতায় সোচ্চার হয়। ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইয়েমেনের কিছু স্বেচ্ছাসেবী যোদ্ধা অংশ নিয়েছিল বলে ঐতিহাসিক দলিলে উল্লেখ রয়েছে। যদিও সে সময় ইয়েমেন কোনো বড় সামরিক শক্তি ছিল না, তবুও ধর্মীয় ও আরব জাতিসত্তার কারণে এই বিরোধ তৈরি হয়।
১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল ছয়দিনের যুদ্ধে ইয়েমেন পুনরায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। সে সময় উত্তর ইয়েমেন ছিল একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং দক্ষিণ ইয়েমেন ছিল ব্রিটিশ শাসিত উপনিবেশ। পরে ব্রিটিশদের বিতাড়নের পর দক্ষিণ ইয়েমেন সমাজতান্ত্রিক ঘরানায় পরিচালিত হতে থাকে এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ে। এই দুই ইয়েমেনের রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন হলেও ইসরায়েলবিরোধিতায় তারা একমত ছিল।
১৯৭০ এবং ৮০’র দশকে ইয়েমেনের ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান আরও দৃঢ় হয়। বিশেষ করে দক্ষিণ ইয়েমেন তার রাষ্ট্রীয় নীতিতেই ইসরায়েলকে “একটি অবৈধ দখলদার রাষ্ট্র” হিসেবে ঘোষণা দেয়। সেসময় দক্ষিণ ইয়েমেন ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনে সমর্থন জানায় এবং পিএলও তথা প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন-এর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক রাখে।
১৯৯০ সালে উত্তর ও দক্ষিণ ইয়েমেন একীভূত হয়ে একটি রাষ্ট্র গঠন করে। তারপর থেকেই ইয়েমেন ইসরায়েলকে স্বীকৃতি না দিয়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকে। ইয়েমেন সবসময় ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের পক্ষে, আল-আকসা মসজিদের স্বাধীনতার পক্ষে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এই অবস্থান শুধু রাষ্ট্রীয় নীতিতে নয়, সাধারণ মানুষের চেতনায়ও গভীরভাবে প্রোথিত।
২০০০ সালের পর থেকে ইয়েমেনের রাজনীতিতে নতুন মোড় নেয় হুতি আন্দোলনের উত্থানের মাধ্যমে। হুতিরা শিয়াপন্থী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত, যাদের শক্ত ঘাঁটি উত্তর ইয়েমেনের সা’দা প্রদেশে। ২০১৫ সালে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট যখন ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করে, তখন হুতিরা নিজেদের ‘জাতীয় প্রতিরোধ আন্দোলন’ হিসেবে দাবি করে এবং ইসরায়েলবিরোধিতাকে তাদের আদর্শিক অবস্থানের অংশ করে তোলে।
হুতিদের শ্লোগানই ছিল—“আল্লাহু আকবর, মৃত্যু আমেরিকার জন্য, মৃত্যু ইসরায়েলের জন্য, অভিশাপ ইহুদিদের জন্য, ইসলাম বিজয়ী হোক।” এই স্লোগানের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয় যে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান আদর্শগত এবং ধর্মীয় উভয় দিক থেকেই।
২০২১ সালে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে হুতিরা ইয়েমেনের রাজধানী সানায় বিশাল সমাবেশ করে। তারা হুঁশিয়ারি দেয় যে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন অব্যাহত থাকলে তারা সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে। যদিও বাস্তবে হুতিদের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি হামলার মতো সামর্থ্য ছিল না, তথাপি এই অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন ইঙ্গিত দেয়।
২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাত চরম আকার ধারণ করলে হুতিরা পুনরায় সক্রিয় হয়। তারা ঘোষণা দেয় যে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা প্রস্তুত এবং যুদ্ধজাহাজ ও ড্রোন ব্যবহার করে লোহিত সাগরে ইসরায়েলমুখী জাহাজে হামলা চালাতে শুরু করে। এই হামলাগুলো মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা জাহাজগুলোর ওপর হলেও হুতিরা ঘোষণা দেয়—“যেসব জাহাজ ইসরায়েলের দিকে যাচ্ছে বা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত, সেগুলোই আমাদের টার্গেট।” এভাবে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের থিংক ট্যাংক ‘মিডল ইস্ট ইন্সটিটিউট’-এর গবেষক ডা. ব্রায়ান কাটস ২০২৪ সালের একটি আলোচনায় বলেন, “হুতিদের বর্তমান অবস্থানকে আর শুধুমাত্র ইয়েমেনি অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ হিসেবে দেখা যাবে না। তারা একটি আঞ্চলিক প্রতিরোধ বলয়ের অংশ হতে চাইছে, যেখানে ইরান, হিজবুল্লাহ এবং হামাস আগে থেকেই রয়েছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই তাদের জন্য শুধু ধর্মীয় বা আদর্শিক বিষয় নয়, এটি এখন রাজনৈতিক অস্তিত্বের কৌশল।”
আরেক মার্কিন গবেষক, ‘র্যান্ড কর্পোরেশন’-এর সিনিয়র অ্যানালিস্ট লরেল মিলার বলেন, “হুতিদের ইসরায়েলবিরোধী রেটোরিক নতুন কিছু নয়, তবে তারা প্রথমবারের মতো সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। এটি মধ্যপ্রাচ্যের বিদ্যমান নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করছে।”
ইসরায়েল যদিও ইয়েমেনকে সরাসরি বড় হুমকি হিসেবে গণ্য করে না, তথাপি হুতি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম ইসরায়েলি নীতিনির্ধারকদের চিন্তায় ফেলেছে। কারণ, ইরান থেকে সরবরাহ করা প্রযুক্তি দিয়ে হুতিরা দীর্ঘপাল্লার হামলার সক্ষমতা অর্জন করেছে।
অন্যদিকে, ইয়েমেনের সাধারণ জনগণের মনোভাবও ইসরায়েলবিরোধী। বিভিন্ন সময়ে গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে তারা রাস্তায় নেমেছে, ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করেছে এবং ইসরায়েলবিরোধী বয়ানকে সমর্থন জানিয়েছে।
ইয়েমেন-ইসরায়েল সংকটের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—এই সংকট শুধু রাষ্ট্রীয় কূটনীতি বা সামরিক সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; এটি একটি আদর্শগত সংঘাত, যেখানে আরব মুসলিম পরিচয়, উপনিবেশবিরোধিতা, এবং আধুনিক ভূরাজনীতির কৌশল একত্রিত হয়ে গেছে।
ইয়েমেন এবং ইসরায়েল ভৌগোলিকভাবে যতই দূরে থাকুক না কেন, ইতিহাস, ধর্ম, রাজনীতি এবং প্রতিরোধের সূত্রে তারা একধরনের বৈরী সম্পর্কে জড়িয়ে আছে। এই সম্পর্ক আগামী দিনে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা নির্ভর করবে ফিলিস্তিন সংকটের সমাধান, ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা, এবং যুক্তরাষ্ট্রের নীতির উপর। তবে এটুকু নিশ্চিত করে বলা যায়—ইয়েমেন-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব ইতিহাসের একটি উপেক্ষিত অধ্যায় হলেও এটি ক্রমেই আরও দৃশ্যমান ও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
ইসরায়েল নামটি উচ্চারণ ফিলিস্তিনের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কথা মাথায় আসে। কিন্তু ইসরায়েলের সঙ্গ ইয়েমেনেও বৈরীতা আছে। ইসরায়েল ও ইয়েমেনের মধ্যে সরাসরি সীমান্ত নেই, বড় ধরনের যুদ্ধও হয়নি। তবু, এই দুই রাষ্ট্রের সম্পর্ক ইতিহাসের গভীরে প্রোথিত, যার শেকড় রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতি, ধর্মীয় বিভাজন এবং সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামের মধ্যে।
১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই আরব দেশগুলোর মধ্যে এই রাষ্ট্রের প্রতি একধরনের ঐক্যবদ্ধ বিরোধিতা তৈরি হয়। ইয়েমেন, সে সময় ব্রিটিশ এবং ইমামি শাসনের মাঝে দ্বিধাবিভক্ত একটি দেশ হলেও, আরব জাতিসত্তার অংশ হিসেবে ইসরায়েলের বিরোধিতায় সোচ্চার হয়। ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইয়েমেনের কিছু স্বেচ্ছাসেবী যোদ্ধা অংশ নিয়েছিল বলে ঐতিহাসিক দলিলে উল্লেখ রয়েছে। যদিও সে সময় ইয়েমেন কোনো বড় সামরিক শক্তি ছিল না, তবুও ধর্মীয় ও আরব জাতিসত্তার কারণে এই বিরোধ তৈরি হয়।
১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল ছয়দিনের যুদ্ধে ইয়েমেন পুনরায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। সে সময় উত্তর ইয়েমেন ছিল একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং দক্ষিণ ইয়েমেন ছিল ব্রিটিশ শাসিত উপনিবেশ। পরে ব্রিটিশদের বিতাড়নের পর দক্ষিণ ইয়েমেন সমাজতান্ত্রিক ঘরানায় পরিচালিত হতে থাকে এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ে। এই দুই ইয়েমেনের রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন হলেও ইসরায়েলবিরোধিতায় তারা একমত ছিল।
১৯৭০ এবং ৮০’র দশকে ইয়েমেনের ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান আরও দৃঢ় হয়। বিশেষ করে দক্ষিণ ইয়েমেন তার রাষ্ট্রীয় নীতিতেই ইসরায়েলকে “একটি অবৈধ দখলদার রাষ্ট্র” হিসেবে ঘোষণা দেয়। সেসময় দক্ষিণ ইয়েমেন ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনে সমর্থন জানায় এবং পিএলও তথা প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন-এর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক রাখে।
১৯৯০ সালে উত্তর ও দক্ষিণ ইয়েমেন একীভূত হয়ে একটি রাষ্ট্র গঠন করে। তারপর থেকেই ইয়েমেন ইসরায়েলকে স্বীকৃতি না দিয়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকে। ইয়েমেন সবসময় ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের পক্ষে, আল-আকসা মসজিদের স্বাধীনতার পক্ষে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এই অবস্থান শুধু রাষ্ট্রীয় নীতিতে নয়, সাধারণ মানুষের চেতনায়ও গভীরভাবে প্রোথিত।
২০০০ সালের পর থেকে ইয়েমেনের রাজনীতিতে নতুন মোড় নেয় হুতি আন্দোলনের উত্থানের মাধ্যমে। হুতিরা শিয়াপন্থী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত, যাদের শক্ত ঘাঁটি উত্তর ইয়েমেনের সা’দা প্রদেশে। ২০১৫ সালে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট যখন ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করে, তখন হুতিরা নিজেদের ‘জাতীয় প্রতিরোধ আন্দোলন’ হিসেবে দাবি করে এবং ইসরায়েলবিরোধিতাকে তাদের আদর্শিক অবস্থানের অংশ করে তোলে।
হুতিদের শ্লোগানই ছিল—“আল্লাহু আকবর, মৃত্যু আমেরিকার জন্য, মৃত্যু ইসরায়েলের জন্য, অভিশাপ ইহুদিদের জন্য, ইসলাম বিজয়ী হোক।” এই স্লোগানের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয় যে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান আদর্শগত এবং ধর্মীয় উভয় দিক থেকেই।
২০২১ সালে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে হুতিরা ইয়েমেনের রাজধানী সানায় বিশাল সমাবেশ করে। তারা হুঁশিয়ারি দেয় যে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন অব্যাহত থাকলে তারা সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে। যদিও বাস্তবে হুতিদের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি হামলার মতো সামর্থ্য ছিল না, তথাপি এই অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন ইঙ্গিত দেয়।
২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাত চরম আকার ধারণ করলে হুতিরা পুনরায় সক্রিয় হয়। তারা ঘোষণা দেয় যে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা প্রস্তুত এবং যুদ্ধজাহাজ ও ড্রোন ব্যবহার করে লোহিত সাগরে ইসরায়েলমুখী জাহাজে হামলা চালাতে শুরু করে। এই হামলাগুলো মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা জাহাজগুলোর ওপর হলেও হুতিরা ঘোষণা দেয়—“যেসব জাহাজ ইসরায়েলের দিকে যাচ্ছে বা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত, সেগুলোই আমাদের টার্গেট।” এভাবে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের থিংক ট্যাংক ‘মিডল ইস্ট ইন্সটিটিউট’-এর গবেষক ডা. ব্রায়ান কাটস ২০২৪ সালের একটি আলোচনায় বলেন, “হুতিদের বর্তমান অবস্থানকে আর শুধুমাত্র ইয়েমেনি অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ হিসেবে দেখা যাবে না। তারা একটি আঞ্চলিক প্রতিরোধ বলয়ের অংশ হতে চাইছে, যেখানে ইরান, হিজবুল্লাহ এবং হামাস আগে থেকেই রয়েছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই তাদের জন্য শুধু ধর্মীয় বা আদর্শিক বিষয় নয়, এটি এখন রাজনৈতিক অস্তিত্বের কৌশল।”
আরেক মার্কিন গবেষক, ‘র্যান্ড কর্পোরেশন’-এর সিনিয়র অ্যানালিস্ট লরেল মিলার বলেন, “হুতিদের ইসরায়েলবিরোধী রেটোরিক নতুন কিছু নয়, তবে তারা প্রথমবারের মতো সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। এটি মধ্যপ্রাচ্যের বিদ্যমান নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করছে।”
ইসরায়েল যদিও ইয়েমেনকে সরাসরি বড় হুমকি হিসেবে গণ্য করে না, তথাপি হুতি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম ইসরায়েলি নীতিনির্ধারকদের চিন্তায় ফেলেছে। কারণ, ইরান থেকে সরবরাহ করা প্রযুক্তি দিয়ে হুতিরা দীর্ঘপাল্লার হামলার সক্ষমতা অর্জন করেছে।
অন্যদিকে, ইয়েমেনের সাধারণ জনগণের মনোভাবও ইসরায়েলবিরোধী। বিভিন্ন সময়ে গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে তারা রাস্তায় নেমেছে, ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করেছে এবং ইসরায়েলবিরোধী বয়ানকে সমর্থন জানিয়েছে।
ইয়েমেন-ইসরায়েল সংকটের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—এই সংকট শুধু রাষ্ট্রীয় কূটনীতি বা সামরিক সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; এটি একটি আদর্শগত সংঘাত, যেখানে আরব মুসলিম পরিচয়, উপনিবেশবিরোধিতা, এবং আধুনিক ভূরাজনীতির কৌশল একত্রিত হয়ে গেছে।
ইয়েমেন এবং ইসরায়েল ভৌগোলিকভাবে যতই দূরে থাকুক না কেন, ইতিহাস, ধর্ম, রাজনীতি এবং প্রতিরোধের সূত্রে তারা একধরনের বৈরী সম্পর্কে জড়িয়ে আছে। এই সম্পর্ক আগামী দিনে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা নির্ভর করবে ফিলিস্তিন সংকটের সমাধান, ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা, এবং যুক্তরাষ্ট্রের নীতির উপর। তবে এটুকু নিশ্চিত করে বলা যায়—ইয়েমেন-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব ইতিহাসের একটি উপেক্ষিত অধ্যায় হলেও এটি ক্রমেই আরও দৃশ্যমান ও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি তৃতীয় কোনো রাজনৈতিক দল গঠন করাটা একেবারেই হাস্যকর। যুক্তরাষ্ট্রে দুই দলের যে রাজনৈতিক কাঠামো, তা বহু বছর ধরেই আছে। তৃতীয় কোনো দল এখানে আনার চেষ্টা শুধু বিভ্রান্তি তৈরি করবে। তিনি (মাস্ক) চাইলে মজা করতে পারেন। তবে আমার মনে হয় এটি হাস্যকর।’
৭ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান— এই দুই দলের বৃত্তে আবর্তিত হচ্ছে। তবে মাস্ক বলছেন, বাস্তবে এই দুই দল একে অন্যের পরিপূরক হয়ে উঠেছে। ‘তারা ভিন্ন পোশাক পরে একসঙ্গে আমাদের নিয়ন্ত্রণ করছে— এটাই ইউনিপার্টি,’— বলেন মাস্ক।
৮ ঘণ্টা আগেইয়েমেনের তিনটি বন্দর ও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে হুতিদের অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে দেশটির প্রধান বিদ্যুৎকেন্দ্র অচল হয়ে পড়েছে।
১০ ঘণ্টা আগেযুদ্ধের আগে হামাসের যে শক্তি ছিল তারা ফের সেই জায়গায় ফিরে গেছে বলে জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত ইসরায়েলি মেজর জেনারেল ইয়েজহাক ব্রিক। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করছে, হামাসকে তারা প্রায় নির্মূল করেছে। তবে আইডিএফের দাবির উল্টোটা বললেন এই জেনারেল।
১ দিন আগে