ডিজিটাল সেবা

ই-টিন নিয়ে বিপদ, কীভাবে করা যায় প্রতিরোধ?

শানজীদা শারমিন
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ২৩: ৩২

রূপা আক্তার, এক তরুণ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী, তার ছোট্ট দোকান নিয়ে বেশ উৎসাহে কাজ করছেন। তিন বছর আগে ই-টিন করে সার্টিফিকেট প্রিন্ট করে একটা ফাইলে গুছিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু একদিন ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের সময় মিউনিসিপ্যালিটি অফিসার জানালেন, ই-টিন কপি ছাড়া কিছুই হবে না! রূপা ফাইল ঘেঁটে দেখেন, সার্টিফিকেট গায়েব! এমনকি ই-টিন নম্বরটাও মনে নেই।

রূপার মনটা খারাপ হয়ে গেল। এত পুরনো কাগজ, এখন কী হবে? তখন তার বন্ধু রিমা বলল, “ঘাবড়াস না! অনলাইনে চেক কর।” রূপা মোবাইল হাতে নিয়ে ঢুকলেন https://secure.incometax.gov.bd/TINHome সাইটে। ‘Search e-TIN’ অপশনে গিয়ে নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) নম্বর দিতেই কয়েক সেকেন্ডে ই-টিন নম্বর পর্দায় ভেসে উঠল।

‘এত সহজ!’ ভেবে রূপা আপন মনেই হেসে উঠলেন। তিনি থামলেন না। ই-রিটার্ন পোর্টালে লগইন করে পুরনো ই-টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করলেন। এবার সেটা গুগল ড্রাইভে সেভ করে ফেললেন, যাতে আবার হারানোর ভয় না থাকে। মিউনিসিপ্যালিটি অফিসে গিয়ে নতুন সার্টিফিকেট দেখাতেই অফিসার মুচকি হেসে বললেন, “এবার ঠিক আছে।” লাইসেন্স নবায়ন হয়ে গেল ঝটপট।

এ ঘটনায় রূপা শিক্ষা নিলেন। তিনি সব গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র স্ক্যান করে ক্লাউডে সেভ করতে শুরু করলেন। এই ডিজিটাল অভ্যাস তাকে বারবার ঝামেলা থেকে বাঁচিয়েছে।

এদিকে, রূপার বান্ধবী সানজিদা হক, একজন ফ্রিল্যান্সার, আরেক বিপদে পড়লেন। পুরনো ই-টিন ভুলে তিনি নতুন আরেকটি করে ফেলেছিলেন। ব্যাংক লোনে আবেদন করতে গিয়ে শুনলেন, তার নামে দুটি ই-টিন! একাধিক ই-টিন থাকলে সমস্য হতে পারে ভেবে সানজিদার কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল।

সানজিদা প্রথমে ভাবলেন, কর অফিসে ছুটতে হবে। কিন্তু তারপর মনে পড়ল অনলাইনের কথা। তিনি https://secure.incometax.gov.bd/ সাইটে গিয়ে ‘e-TIN Correction’ অপশন খুঁজে পেলেন। NID, ই-টিন নম্বর আর কিছু তথ্য দিয়ে ফর্ম পূরণ করলেন। ফর্মে নতুন ই-টিন রেখে পুরনোটি বাতিলের অনুরোধ জমা দিলেন। কয়েক দিন পর কর অফিস থেকে নিশ্চিত করল, অতিরিক্ত ই-টিন বাতিল হয়ে গেছে।

“কর অফিসে না গিয়েই কাজ হয়ে গেল!” সানজিদা খুশিতে রূপাকে ফোন করে বললেন। এ ঘটনায় তিনি বুঝলেন, একটু সচেতন হলেই অনলাইনে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব।

রূপা ও সানজিদার এই ছোট্ট অ্যাডভেঞ্চার থেকে তারা শিখলেন: ই-টিন হারালে বা নম্বর ভুলে গেলে NID দিয়ে অনলাইনে খুঁজে বের করা যায়। একাধিক ই-টিন হলে কর অফিসে না গিয়েও অনলাইনে আবেদন করে সমাধান করা সম্ভব। আর সবচেয়ে বড় কথা, গুরুত্বপূর্ণ কাগজ ডিজিটালি সেভ করলে জীবন অনেক সহজ!

যেসব এলাকায় ইন্টারনেট বা প্রযুক্তিগত সহায়তা সীমিত, সেসব জায়গায় ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে এ সংক্রান্ত সহায়তা নেয়া যায়।

এর বাইরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উদ্যোগে ১০০-রও বেশি সরকারি সেবা নিয়ে চালু হচ্ছে ‘নাগরিক সেবা বাংলাদেশ’ নামে একটি নতুন আউটলেট। চলমান ডিজিটাল সেন্টারগুলোকেও এতে যুক্ত করা হবে। সেখানেও পাওয়া যাবে উল্লিখিত সেবাটি।

ad
ad

ফিচার থেকে আরও পড়ুন

ই-টিন না থাকলে বেতন-ব্যবসা কোনোটাই হবে না!

মোবাইল ভেরিফিকেশন করতে গিয়ে কয়েকবার চেষ্টা করতে হয়েছে। ফর্ম পূরণের সময় ঠিকানা মিলে না যাওয়ায় সংশোধন করতে হয়েছে।

১ দিন আগে

মাথা ব্যথা থেকে মুক্তির উপাায়

পানি পানা বা শরীরের হাইড্রেশন বজায় রাখাও অত্যন্ত জরুরি। অনেক সময় পানি কম পান করলে শরীরে ডিহাইড্রেশন হয়, যার অন্যতম লক্ষণ হলো মাথা ব্যথা।

১ দিন আগে

ই-পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে বা বৈবাহিক অবস্থার পরিবর্তন হলে কী করবেন?

ফরম পূরণ করে তিনি আপলোড করেন জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম সনদ, বিয়ের সনদ, ছবি ও ইউটিলিটি বিল। ছবি ছিল নির্ধারিত সাইজে (৪০×৫০ মিমি, JPEG ফরম্যাট, ৩০০ কেবি’র মধ্যে)। ছবি আপলোডে কিছু সমস্যা হলে হেল্পলাইনের পরামর্শে ঠিক করেন।

১ দিন আগে

কালোজিরা: এক প্রাকৃতিক ওষুধের খোঁজে

২০১৩ সালে ‘এশিয়ান প্যাসিফিক জার্নাল অব ট্রপিক্যাল বায়োমেডিসিন’-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, কালোজিরা নিয়মিত গ্রহণ করলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এনজাইমের পরিমাণ বেড়ে যায়, ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কার্যকর হয়।

১ দিন আগে