কবিতা

বিদায় মদিনা, বিদায়

মোহাম্মদ আলী খান
প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ১৬: ২৮

দুই পাহাড়ের মাঝে বরকতময় ভুবন মদিনা,

বহতা নদীর স্রোতধারার মতন সোনার মদিনা ঘিরে

রসুল (সা.) এর অপার ভালোবাসা,

এখানে স্বপ্নেরা কথা বলে

এখানে হৃদয় নিঃসৃত হাজারো বেদনা গুমরে গুমরে কাঁদে।

সবুজ গম্বুজ তলে সবুজ ঝালরে গোলকের মায়াবী নিশানা

ঢেউ তোলে বারবার মনের গহীনে,

মনে হয় মহাসাগরের উত্তাল তরঙ্গ মনের দিগন্তে

আছড়ে আছড়ে পড়ে;

আমি শুনি শান্তির অমিয় ধারার মধুর ধ্বনি-প্রতিধ্বনি,

আমি শুনি ভরা জোছ্নার পেলবতামাখা এক সুরের মূর্ছনা,

রওজা মোবারকের কাছে যতই সালাম পৌঁছে দেই

বেড়ে যায় ততই পিপাসা,

রিয়াজুল জান্নাতের সবুজ জমিনে মাথা নত করি যতবার

মনে হয় যদি নিয়ে যেত এই শির শেষ দিবসের কিনারায়।

মসজিদে নববীতে শত সহস্র কণ্ঠের আবেগ মথিত উচ্চারণ, ‘আমিন’, ‘আমিন’ ...

বাতাসের বেগে ছুটে চলে অন্তহীন পথের মায়ায়

ভেঙ্গে যায় পাপী তাপীর মনের জগদ্দল পাথরের দুর্বিনীত স্তূপ,

শান্তির দুরন্ত ঝর্ণা কলকল ছলছল রবে ধূয়ে মুছে নিয়ে যায়

ছিল যা কালিমা, ছায়া মায়া।

দিবা রাত্রি চল্লিশ ওয়াক্ত নামাজের মায়াময় আহ্বান,

আযানের সুমধুর ধ্বনি, আধঘুম চোখে তাহাজ্জোদের নামাজে শরীক হওয়া

বর্ণে বর্ণে শব্দে শব্দে গেঁথে যায় অন্তরের শুভ্র সুন্দর কাগজে।

সোনার মদিনা কাছে ডাকে বারে বারে

কত কথা শুনায় আবেগে•••

কুবা মসজিদে নামাজের ডাক, দুই কিবলার মসজিদে ক্ষণিকের অবসর,

ওহুদ প্রান্তরে শহিদের কবর জিয়ারত, গুহার গভীরে বেদনার ছাপ,

খন্দকের পথরেখা ঘিরে শৈল্পিক ব্যঞ্ছনা;

বীরে ওসমান, বীরে শেফা, বিল এ ঘারসে তিতা পানি থেকে মিষ্টি পানি

মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল চত্বর,

কোরবানির পশুর হাটে উটের জাবর কাটা অপরাহ্ন,

লোহিত কণায় লেপ্টে থাকা বদর যুদ্ধের ইতিহাস খ্যাত রণাঙ্গন-

বীর শহিদদের কবরস্থান;

জালালী কবুতরের অহর্নিশ ডানা ঝাপটানো,

কখনো প্রখর খরতাপ, কখনো কঠিন পর্বতের দারুন রুক্ষতা,

কখনো প্রশান্ত ভোরে মিষ্টি মধুর হাওয়া, হঠাৎ বৃষ্টির ছোঁয়া,

খেঁজুর বাগানে থোকা থোকা ফল, সঘন সবুজ পত্রদল, শ্রদ্ধেয়

খলিফাদের কবর, জান্নাতুল বাকী ঘিরে নীরব প্রশান্তি ---

সব বিন্দু বিন্দু ভালোবাসা হয়ে,

বিন্দু বিন্দু মেঘ জমে

মসজিদে নববীর অন্দরে প্রাঙ্গনে

সত্য ও সুন্দর, স্বপ্ন ও মায়া, নন্দিত ভঙ্গিমায় জড়িয়ে রেখেছে বারবার,

কে ছিড়বে এ বাঁধন?

মসজিদে নববীর খোলা ছাদে বিশাল চত্বরে সৃষ্টিকর্তার রোদ ও ছায়ার খেলা,

উপরে নীলাভ আকাশের দুর্নিবার আহ্বান, প্রায় ভরাট চাঁদের মায়া,

রাতের প্রহর বিদীর্ণ বিষন্ন করে,

ঝিরিঝিরি বাতাসের মিহিসুরে কান্না,

সব ছেড়ে চলে যেতে, মন মানে না সহজে, তবু যেতে হবে দুরন্ত মহাকালের কাছে হার মেনে,

হৃদয়ের অন্তঃস্তল থেকে হৃদয়ের মানা না শুনেই

বলে যেতে হলো,

বিদায় মদিনা,

বিদায় সোনার মদিনা, বিদায়।

***

মসজিদে নববীর ছাদে

রাত্রির দ্বিতীয় প্রহরের আগে

১১ মে ২০২৫

ad
ad

ফিচার থেকে আরও পড়ুন

ওটস কেন খাবেন, কীভাবে খাবেন?

ওটস খেলে ওজন কমে—এই ধারণাটিও নিরর্থক নয়। কানাডার টরন্টো ইউনিভার্সিটির পুষ্টিবিদ ড. ডেভিড জেনকিন্স জানান, “ওটস খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। ফলে কম খাওয়া হয়, আর এই কারণে ধীরে ধীরে ওজন কমে আসে।” তাঁর মতে, যারা নিয়মিত সকালে ওটস খান, তাঁদের মধ্যে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।

১ দিন আগে

জায়ান্ট মোয়া: অতিকায় এক জুরাসিক পাখি

আজকের বিজ্ঞানীরা চাইছেন বিলুপ্ত কিছু প্রাণীকে আবার ফিরিয়ে আনতে। এভাবে আগের মতো তাদের তৈরি করে তোলা যায় কি না, তা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়াকে বলে “ডি-এক্সটিংশন”। মানে, যেসব প্রাণী অনেক বছর আগে হারিয়ে গেছে, তাদের আবার বাঁচিয়ে তোলার চেষ্টা। অনেকেই চায় ডায়ার উলফ বা ম্যামথ ফিরে আসুক। কেউ কেউ জায়ান

২ দিন আগে

ব্যাটল অব অ্যাক্টিয়াম : নৌযুদ্ধে নিভে যায় রোমান সূর্য

এই যুদ্ধে মুখোমুখি হয়েছিলেন গাইয়াস অক্টাভিয়াস—পরবর্তীতে যিনি ‘অগাস্টাস’ নামে পরিচিত হন—তার বাহিনী এবং মিশরের রানি ক্লিওপেট্রা ও রোমের অন্যতম শক্তিশালী সেনানায়ক মার্ক অ্যান্টনির যৌথ বাহিনী। যুদ্ধটি মূলত সামুদ্রিক যুদ্ধ হলেও এর প্রভাব রাজনীতি, প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা ও সাম্রাজ্যের ক্ষমতার বণ্টন পর্যন্ত ব

২ দিন আগে

তালমিছরির উপকারিতা ও অপকারিতা

তালমিছরি সাধারণত খাঁটি তাল বা খেজুরের রস থেকে তৈরি হয়, যেটি পরিশোধন ও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে শুকিয়ে ছোট দানার মতো স্ফটিক রূপে তৈরি হয়। এতে কোনো কৃত্রিম রং বা প্রিজারভেটিভ থাকে না, যা একে সাধারণ চিনি থেকে আলাদা করে দেয়।

২ দিন আগে