অরুণাভ বিশ্বাস
ভারতের ইতিহাসে ১৫২৯ সালের ঘাগড়ার যুদ্ধ ছিল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সংঘর্ষ। এই যুদ্ধটি ঘটেছিল ঘাঘড়া নদীর তীরে, যেখানে তৎকালীন মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাবাহিনী একদিকে আফগান নেতা মাহমুদ লোদি ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে এবং অন্যদিকে বাংলার সুলতান নুসরত শাহের বাহিনীর মুখোমুখি হয়েছিল। এই যুদ্ধের ফলাফল শুধু একটিমাত্র সামরিক বিজয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং এটি উপমহাদেশে মুঘল আধিপত্যের ভিত আরও দৃঢ় করেছিল এবং লোদি বংশের শেষ আশাটুকুকেও নিঃশেষ করে দিয়েছিল।
ঘাগড়ার যুদ্ধটি ছিল বাবরের তৃতীয় ও শেষ প্রধান যুদ্ধ যা পানিপথের যুদ্ধ (১৫২৬) ও খানুয়ার যুদ্ধ (১৫২৭)–এর পর সংঘটিত হয়। পানিপথে দিল্লির সুলতান ইব্রাহিম লোদিকে পরাজিত করে মুঘলরা ভারতের রাজনীতির কেন্দ্রে প্রবেশ করে। এরপর খানুয়ায় রাজপুত নেতা রানা সংগত ও মেওয়ারের মিত্রদের পরাজিত করে বাবর তার আধিপত্য আরও সুদৃঢ় করেন। কিন্তু সমস্যা তখনও পুরোপুরি মেটেনি, কারণ আফগান বিদ্রোহীদের নেতৃত্বে থাকা মাহমুদ লোদির অবস্থান তখনও বেশ শক্তিশালী ছিল। মাহমুদের আশ্রয়দাতা ছিলেন বাংলার স্বাধীন সুলতান নুসরত শাহ। তিনি আফগানদের সমর্থন দিয়েছিলেন।
ঘাগড়ার যুদ্ধের পটভূমি বোঝার জন্য এই সময়কার রাজনৈতিক বাস্তবতা একটু ব্যাখ্যা করা দরকার। বাবর দিল্লি ও আগ্রা জয়ের পরও হুমকির মুখে পড়েছিলেন আফগানদের প্রতিরোধের কারণে। মাহমুদ লোদি, ইব্রাহিম লোদির ভাই, আফগানদের মধ্যে নিজেকে প্রকৃত সুলতান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছিলেন এবং বাংলার সুলতানের সহযোগিতা নিয়ে পূর্ব ভারতে ঘাঁটি গেড়েছিলেন। এদিকে বাবর তাঁর আত্মজীবনী ‘তুজুক-ই-বাবরি’তে উল্লেখ করেছেন যে, তিনি বাংলার সুলতানকে তার ‘দুর্বিনীত আচরণের’ জন্য খুব একটা পছন্দ করতেন না। ফলে দুই শক্তির সংঘর্ষ ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র।
১৫২৯ সালের মে মাসে বাবর তার বাহিনী নিয়ে ঘাগড়া নদীর তীরে পৌঁছান। তাঁর সেনাবাহিনী ছিল অভিজ্ঞ ও যুদ্ধ-কৌশলে দক্ষ, যার মধ্যে তুর্কি ধাঁচের অগ্রসর কামান প্রযুক্তিও অন্তর্ভুক্ত ছিল। অন্যদিকে আফগান ও বাংলা বাহিনী সংখ্যা ও এলাকা-জ্ঞান অনুযায়ী এগিয়ে থাকলেও তাঁদের মধ্যে ঐক্যের অভাব ছিল।
এই যুদ্ধে বাবর অত্যন্ত চাতুর্যের সঙ্গে কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি দুই ভাগে বাহিনী ভাগ করেন—একটি পদাতিক ও কামানবাহিনী নদীর একপাশে থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করে, অপরটি নৌকা দিয়ে নদী পার হয়ে আক্রমণ চালায়। এই দ্বিমুখী আক্রমণে আফগান-বাংলা জোট সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
ইতিহাসবিদ রিচার্ড এম ইটন তাঁর বই ইন্ডিয়া ইন দ্য পার্সিয়ানেট এজ বইয়ে এই যুদ্ধ সম্পর্কে বলেন, “বাবর যে বারুদের অস্ত্র ও নদীকেন্দ্রিক যুদ্ধকৌশল ব্যবহার করেছিলেন, তা ঘাঘড়ার অভিযানকে মুঘল সেনাবাহিনীর দক্ষতার এক পাঠ্যবইসুলভ উদাহরণ করে তোলে।”
লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ বিভাগের গবেষক ইতিহাসবিদ জেরিন এলিয়ার ২০১৭ সালে এক গবেষণাপত্রে লিখেছেন, “ঘাগড়া কেবল সামরিক সংঘর্ষ ছিল না, বরং এটি ছিল আঞ্চলিক রাজনীতির জটিলতাগুলোর মধ্যে বাবরের কূটনৈতিক দক্ষতারও এক পরীক্ষা।”
যুদ্ধ শেষে আফগান-বাংলা জোট ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। মাহমুদ লোদি পালিয়ে যান এবং রাজনৈতিকভাবে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েন। বাংলার সুলতান নুসরত শাহ এরপর বাবরের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে না গিয়ে শান্তি প্রস্তাব পাঠান এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেন। বাবরও রাজনীতিক কৌশলের অংশ হিসেবে বাংলায় সরাসরি আগ্রাসন চালাননি।
ঘাগড়ার যুদ্ধের ফলাফল ছিল বহুমাত্রিক। প্রথমত, এটি দিল্লির সিংহাসনে বাবরের অবস্থানকে চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত করে। দ্বিতীয়ত, লোদি বংশের সব ধরনের প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দিয়ে মুঘলদের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি শাসনের পথ প্রশস্ত করে। তৃতীয়ত, বাংলা রাজ্য তখনো স্বাধীন থাকলেও, দিল্লি-কেন্দ্রিক রাজনীতিতে তাদের প্রভাব অনেকটাই কমে যায়।
এছাড়া এই যুদ্ধে যে ধরনের কৌশল ব্যবহার করা হয়েছিল, তা উপমহাদেশে নতুন এক যুদ্ধনীতির সূচনা করে। নদী-ভিত্তিক যুদ্ধ, কামানের বিস্তৃত ব্যবহার, পদাতিক-অশ্বারোহীর সম্মিলিত আক্রমণ—এই সবই ছিল তুর্কি-মঙ্গোল সামরিক ঐতিহ্যের অংশ, যেগুলো বাবর দক্ষতার সঙ্গে ভারতীয় প্রেক্ষাপটে রূপান্তর করেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রেরব্রাউন ইউনিভার্সিটির ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আন্দ্রু জে নিকোলসনের মতে, ‘ঘাগড়ার যুদ্ধ ছিল হিন্দুস্তানে আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় বাবরের শেষ অভিযান। এটি ছিল কেবল সামরিক জয় নয়, বরং একটি মানসিক বিজয়ও।”
বাবরের মৃত্যু হয় ১৫৩০ সালে, ঠিক এক বছর পর। তাঁর পুত্র হুমায়ুন দিল্লির সিংহাসনে বসেন। তবে বাবরের প্রতিষ্ঠিত ভিত এবং ঘাগড়া যুদ্ধে অর্জিত প্রতিপত্তি হুমায়ুনের রাজত্বে মুঘল সাম্রাজ্যের ভিত্তিকে শক্তিশালী করে রাখে। যদিও পরবর্তীকালে শেরশাহ সূরির উত্থানে মুঘল শাসন কিছুদিনের জন্য ব্যাহত হয়, কিন্তু ঘাগড়ার যুদ্ধ ভারতের ইতিহাসে সেই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে থেকে যায়, যেখানে একটি যুগ শেষ হয় এবং আরেকটি যুগের শুরু হয়।
মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে ঘাগড়ার যুদ্ধকে উপেক্ষা করা যায় না। এটি শুধু সামরিক ক্ষমতার প্রদর্শন ছিল না, বরং কূটনীতি, প্রযুক্তি, নেতৃত্ব ও দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক প্রভাবের এক অনন্য সংমিশ্রণ ছিল। বাবরের দূরদর্শিতা, সাহস ও যুদ্ধনীতির কারণে এই সংঘর্ষ মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে রয়েছে।
ঘাগড়ার যুদ্ধ তাই শুধু ইতিহাসের পৃষ্ঠায় একটি যুদ্ধের নাম নয়, বরং ভারতীয় উপমহাদেশে শক্তির ভারসাম্য বদলে দেওয়ার এক যুগান্তকারী ঘটনা। এবং এটিই ছিল সেই মুহূর্ত, যখন মধ্যযুগের ভারত মুঘল যুগে প্রবেশ করে—একটি নতুন রাজনীতিক ও সাংস্কৃতিক অধ্যায় নিয়ে।
ভারতের ইতিহাসে ১৫২৯ সালের ঘাগড়ার যুদ্ধ ছিল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সংঘর্ষ। এই যুদ্ধটি ঘটেছিল ঘাঘড়া নদীর তীরে, যেখানে তৎকালীন মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাবাহিনী একদিকে আফগান নেতা মাহমুদ লোদি ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে এবং অন্যদিকে বাংলার সুলতান নুসরত শাহের বাহিনীর মুখোমুখি হয়েছিল। এই যুদ্ধের ফলাফল শুধু একটিমাত্র সামরিক বিজয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং এটি উপমহাদেশে মুঘল আধিপত্যের ভিত আরও দৃঢ় করেছিল এবং লোদি বংশের শেষ আশাটুকুকেও নিঃশেষ করে দিয়েছিল।
ঘাগড়ার যুদ্ধটি ছিল বাবরের তৃতীয় ও শেষ প্রধান যুদ্ধ যা পানিপথের যুদ্ধ (১৫২৬) ও খানুয়ার যুদ্ধ (১৫২৭)–এর পর সংঘটিত হয়। পানিপথে দিল্লির সুলতান ইব্রাহিম লোদিকে পরাজিত করে মুঘলরা ভারতের রাজনীতির কেন্দ্রে প্রবেশ করে। এরপর খানুয়ায় রাজপুত নেতা রানা সংগত ও মেওয়ারের মিত্রদের পরাজিত করে বাবর তার আধিপত্য আরও সুদৃঢ় করেন। কিন্তু সমস্যা তখনও পুরোপুরি মেটেনি, কারণ আফগান বিদ্রোহীদের নেতৃত্বে থাকা মাহমুদ লোদির অবস্থান তখনও বেশ শক্তিশালী ছিল। মাহমুদের আশ্রয়দাতা ছিলেন বাংলার স্বাধীন সুলতান নুসরত শাহ। তিনি আফগানদের সমর্থন দিয়েছিলেন।
ঘাগড়ার যুদ্ধের পটভূমি বোঝার জন্য এই সময়কার রাজনৈতিক বাস্তবতা একটু ব্যাখ্যা করা দরকার। বাবর দিল্লি ও আগ্রা জয়ের পরও হুমকির মুখে পড়েছিলেন আফগানদের প্রতিরোধের কারণে। মাহমুদ লোদি, ইব্রাহিম লোদির ভাই, আফগানদের মধ্যে নিজেকে প্রকৃত সুলতান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছিলেন এবং বাংলার সুলতানের সহযোগিতা নিয়ে পূর্ব ভারতে ঘাঁটি গেড়েছিলেন। এদিকে বাবর তাঁর আত্মজীবনী ‘তুজুক-ই-বাবরি’তে উল্লেখ করেছেন যে, তিনি বাংলার সুলতানকে তার ‘দুর্বিনীত আচরণের’ জন্য খুব একটা পছন্দ করতেন না। ফলে দুই শক্তির সংঘর্ষ ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র।
১৫২৯ সালের মে মাসে বাবর তার বাহিনী নিয়ে ঘাগড়া নদীর তীরে পৌঁছান। তাঁর সেনাবাহিনী ছিল অভিজ্ঞ ও যুদ্ধ-কৌশলে দক্ষ, যার মধ্যে তুর্কি ধাঁচের অগ্রসর কামান প্রযুক্তিও অন্তর্ভুক্ত ছিল। অন্যদিকে আফগান ও বাংলা বাহিনী সংখ্যা ও এলাকা-জ্ঞান অনুযায়ী এগিয়ে থাকলেও তাঁদের মধ্যে ঐক্যের অভাব ছিল।
এই যুদ্ধে বাবর অত্যন্ত চাতুর্যের সঙ্গে কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি দুই ভাগে বাহিনী ভাগ করেন—একটি পদাতিক ও কামানবাহিনী নদীর একপাশে থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করে, অপরটি নৌকা দিয়ে নদী পার হয়ে আক্রমণ চালায়। এই দ্বিমুখী আক্রমণে আফগান-বাংলা জোট সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
ইতিহাসবিদ রিচার্ড এম ইটন তাঁর বই ইন্ডিয়া ইন দ্য পার্সিয়ানেট এজ বইয়ে এই যুদ্ধ সম্পর্কে বলেন, “বাবর যে বারুদের অস্ত্র ও নদীকেন্দ্রিক যুদ্ধকৌশল ব্যবহার করেছিলেন, তা ঘাঘড়ার অভিযানকে মুঘল সেনাবাহিনীর দক্ষতার এক পাঠ্যবইসুলভ উদাহরণ করে তোলে।”
লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ বিভাগের গবেষক ইতিহাসবিদ জেরিন এলিয়ার ২০১৭ সালে এক গবেষণাপত্রে লিখেছেন, “ঘাগড়া কেবল সামরিক সংঘর্ষ ছিল না, বরং এটি ছিল আঞ্চলিক রাজনীতির জটিলতাগুলোর মধ্যে বাবরের কূটনৈতিক দক্ষতারও এক পরীক্ষা।”
যুদ্ধ শেষে আফগান-বাংলা জোট ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। মাহমুদ লোদি পালিয়ে যান এবং রাজনৈতিকভাবে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েন। বাংলার সুলতান নুসরত শাহ এরপর বাবরের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে না গিয়ে শান্তি প্রস্তাব পাঠান এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেন। বাবরও রাজনীতিক কৌশলের অংশ হিসেবে বাংলায় সরাসরি আগ্রাসন চালাননি।
ঘাগড়ার যুদ্ধের ফলাফল ছিল বহুমাত্রিক। প্রথমত, এটি দিল্লির সিংহাসনে বাবরের অবস্থানকে চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত করে। দ্বিতীয়ত, লোদি বংশের সব ধরনের প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দিয়ে মুঘলদের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি শাসনের পথ প্রশস্ত করে। তৃতীয়ত, বাংলা রাজ্য তখনো স্বাধীন থাকলেও, দিল্লি-কেন্দ্রিক রাজনীতিতে তাদের প্রভাব অনেকটাই কমে যায়।
এছাড়া এই যুদ্ধে যে ধরনের কৌশল ব্যবহার করা হয়েছিল, তা উপমহাদেশে নতুন এক যুদ্ধনীতির সূচনা করে। নদী-ভিত্তিক যুদ্ধ, কামানের বিস্তৃত ব্যবহার, পদাতিক-অশ্বারোহীর সম্মিলিত আক্রমণ—এই সবই ছিল তুর্কি-মঙ্গোল সামরিক ঐতিহ্যের অংশ, যেগুলো বাবর দক্ষতার সঙ্গে ভারতীয় প্রেক্ষাপটে রূপান্তর করেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রেরব্রাউন ইউনিভার্সিটির ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আন্দ্রু জে নিকোলসনের মতে, ‘ঘাগড়ার যুদ্ধ ছিল হিন্দুস্তানে আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় বাবরের শেষ অভিযান। এটি ছিল কেবল সামরিক জয় নয়, বরং একটি মানসিক বিজয়ও।”
বাবরের মৃত্যু হয় ১৫৩০ সালে, ঠিক এক বছর পর। তাঁর পুত্র হুমায়ুন দিল্লির সিংহাসনে বসেন। তবে বাবরের প্রতিষ্ঠিত ভিত এবং ঘাগড়া যুদ্ধে অর্জিত প্রতিপত্তি হুমায়ুনের রাজত্বে মুঘল সাম্রাজ্যের ভিত্তিকে শক্তিশালী করে রাখে। যদিও পরবর্তীকালে শেরশাহ সূরির উত্থানে মুঘল শাসন কিছুদিনের জন্য ব্যাহত হয়, কিন্তু ঘাগড়ার যুদ্ধ ভারতের ইতিহাসে সেই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে থেকে যায়, যেখানে একটি যুগ শেষ হয় এবং আরেকটি যুগের শুরু হয়।
মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে ঘাগড়ার যুদ্ধকে উপেক্ষা করা যায় না। এটি শুধু সামরিক ক্ষমতার প্রদর্শন ছিল না, বরং কূটনীতি, প্রযুক্তি, নেতৃত্ব ও দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক প্রভাবের এক অনন্য সংমিশ্রণ ছিল। বাবরের দূরদর্শিতা, সাহস ও যুদ্ধনীতির কারণে এই সংঘর্ষ মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে রয়েছে।
ঘাগড়ার যুদ্ধ তাই শুধু ইতিহাসের পৃষ্ঠায় একটি যুদ্ধের নাম নয়, বরং ভারতীয় উপমহাদেশে শক্তির ভারসাম্য বদলে দেওয়ার এক যুগান্তকারী ঘটনা। এবং এটিই ছিল সেই মুহূর্ত, যখন মধ্যযুগের ভারত মুঘল যুগে প্রবেশ করে—একটি নতুন রাজনীতিক ও সাংস্কৃতিক অধ্যায় নিয়ে।
দেশে একটি যথার্থ যুগোপযুগী শিক্ষানীতি এবং উচ্চশিক্ষা কমিশন না থাকার মূল্য এখন চুকাতে হচ্ছে দেশের শিক্ষাখাতকে। এর অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করা যায় শিক্ষাখাতে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন ব্যয়কারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক দুর্বলতাকে। অর্থাৎ শিক্ষায় রাষ্ট্রের বিনিয়োগ অপ্রতুল এবং তা আত্মঘাতী।
৬ ঘণ্টা আগেতিনি বলেন, 'শেখ হাসিনাকে কোনোদিন ক্ষমা করা যাবে না। হাসিনা মানবজাতির কলঙ্ক। হাসিনা মায়েদের কলঙ্ক। আমাদের প্রথম কাজ হবে এদের বিচার করা। দ্বিতীয় কাজ হবে শহিদ পরিবারদের পুনর্বাসন করা। যারা আহত হয়েছে তাদের উন্নত চিকিৎসা দিয়ে পুনর্বাসন করা। এটা না হলে ভবিষ্যৎ জাতি আমাদের ক্ষমা করবে না।'
৭ ঘণ্টা আগেসোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রথমবারের মতো সমাবেশ করলো জামায়াতে ইসলামী। এতে সমমনা অন্যান্য দলের নেতারাও আমন্ত্রিত ছিলেন। তাদের কেউ কেউ বক্তৃতাও দিয়েছেন সেখানে। তবে জামায়াতের এক সময়ের জোটসঙ্গী বিএনপির কোনো নেতা এই সমাবেশে ছিলেন না। তবে এর মাধ্যমে দেশে নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণের বার্তা দিল দলটি।
১২ ঘণ্টা আগেতরেক রহমান বলেন, জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। সুতরাং আপনাদের আমাদের সবার কোনো আবেগ তাড়িত হয়ে কিংবা ভুল সিদ্ধান্তের কারণে রাষ্ট্র-রাজনীতিতে ভবিষ্যতে আর যাতে কোনো চরমপন্থা, ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসনের সুযোগ না পায় সেই বিষ
১ দিন আগে