ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
ঝর্নার ধার দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আপনি হঠাৎ যদি দেখে ফেলেন একজোড়া পাখিকে পাথরের ফাঁকে গুটিসুটি হয়ে ঢুকে যাচ্ছে, তাহলে চমকে উঠবেন না। কারণ এরা হচ্ছে ডিপার পাখি—নির্জন ঝর্না আর পাহাড়ি জলের স্রোতের কাছেই যাদের ভালোবাসার সংসার। গায়ে ধূসর কিংবা বাদামি পালক, চোখে একরাশ দৃঢ়তা, আর ঠোঁটে পানির ছোঁয়া—এই পাখিরা অন্য দশটা পাখির মতো গাছে নয়, ঝর্নার পেছনে বাসা বানায়। পাথরের আড়ালে, জলের ঝাপটার ঠিক পেছনে যে জায়গাটায় সবসময় ভেজা অন্ধকার, সেইখানে তারা রচনা করে ঘর।
ডিপার পাখির বৈজ্ঞানিক নাম Cinclus cinclus—যাদের ইউরোপে ‘ইউরেশিয়ান ডিপার’ নামে ডাকা হয়। আবার আমেরিকায় দেখা যায় ‘আমেরিকান ডিপার’ (Cinclus mexicanus) নামে আরেক প্রজাতিকে। পৃথিবীতে মোট পাঁচটি ডিপার প্রজাতি রয়েছে, যারা সবাই কমবেশি একইরকম পরিবেশে বাস করে—ঝরনা, খরস্রোতা পাহাড়ি নদী, কিংবা জলপ্রপাতের ধারে। এই পাখিদের বাসার গড়নও আশ্চর্যরকমভাবে একরকম। ঝর্নার আড়ালে, জলকণায় সারা দিন ভেজা সেই বাসাগুলো যেন প্রকৃতির এক ছায়াসঙ্গীত।
এই পাখিরা কেন ঝর্নার পেছনে বাসা করে? যুক্তরাজ্যের British Trust for Ornithology (BTO)-এর গবেষক ড. ফ্রান্সেস টেলর বলছেন, "ডিপার পাখিরা ঝর্নার শব্দে যেমন নিশ্চিন্ত থাকে, তেমনি শিকারি প্রাণীদের চোখ থেকেও নিরাপদ থাকে। পানির শব্দ বাসার অবস্থান ঢেকে রাখে, ফলে এটি কার্যকর প্রতিরক্ষা দেয়।” তাঁর কথার বাংলা অনুবাদ—“ডিপার পাখিরা ঝর্নার শব্দে যেমন স্বস্তিতে থাকে, তেমনি শত্রুর চোখ থেকে বাসার অবস্থান লুকাতে পারে। পানির গর্জন যেন তাদের প্রাকৃতিক আলখেল্লা।”
বাসা বানাতে গিয়ে ডিপাররা আশেপাশের কচুরিপানা, শেওলা, ঘাস, এমনকি ঝর্ণার পাশে ভেসে থাকা ভেজা ডালপালাও ব্যবহার করে। ডিপারের বাসাগুলো গোল গম্বুজের মতো, যার ভেতরে একটিমাত্র ছোট ছিদ্র থাকে প্রবেশের জন্য। সেই ছিদ্র দিয়েই তারা ভেতরে ঢুকে, ডিম পাড়ে, বাচ্চা ফোটায় এবং শিকার নিয়ে আসে। বিশেষ করে মেয়ে ডিপারটি ডিমে তা দেয়, আর পুরুষটি বাইরে থেকে শিকার করে আনে—ছোট মাছ, জলের পোকামাকড় কিংবা জলজ কীটই এদের প্রধান খাবার।
ডিপার পাখিদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হলো, তারা পানির নিচে হাঁটতে পারে। সাধারণ পাখিদের মতো ভেসে না থেকে ডিপাররা পানির নিচে স্রোতের উল্টো দিকে হাঁটতে পারে এবং পাথরের নিচে লুকানো শিকার খুঁজে পায়। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডোর জীববিজ্ঞানী ড. মার্থা হ্যারিস বলেন, “ডিপার পাখির রক্তে অক্সিজেন বহনের ক্ষমতা অনেক বেশি। তাদের হিমোগ্লোবিন এমনভাবে গঠিত, যা পানির নিচে বেশি সময় থাকতে সাহায্য করে।” অনুবাদ করলে দাঁড়ায়—“ডিপারের রক্তে এত বেশি অক্সিজেন থাকে যে, তারা অন্য পাখির চেয়ে অনেক বেশি সময় পানির নিচে থাকতে পারে। এই দক্ষতা তাদের জীবনধারার অংশ।”
এই বৈশিষ্ট্যই ডিপারদের জলপ্রপাতের জীব বানিয়ে তুলেছে। পানি, ঠাণ্ডা বাতাস, আর ভেজা পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর এই চমৎকার ক্ষমতা তাদের অন্য পাখিদের চেয়ে আলাদা করেছে। বর্ষাকালে বা বরফ গলার সময়ে স্রোত বাড়লেও ডিপাররা ঝর্নার পেছনের সেই নিরাপদ আশ্রয়েই থাকে। এমনকি এক জায়গায় সফলভাবে বাসা বানালে পরের বছর আবারও সেই স্থানেই ফিরে আসে।
ডিপার পাখি ঝরনার ধার ঘেঁষে এমন একটি জায়গা খুঁজে নেয়, যেটি সবসময় ভিজে থাকে, কিন্তু সরাসরি পানির নিচে না। সাধারণত এটি হয় পাথরের ফাঁকে, ঝরনার নিচে গুহামতো কোনো ফাটলে, কিংবা ছোট্ট গহ্বরে যেখানে জলপ্রপাতের পানি সরাসরি পড়ে না, তবে আশেপাশে সবসময় স্যাঁতসেঁতে থাকে। সেই জায়গায় বাসা বানালে শিকারি প্রাণীরা সহজে খুঁজে পায় না এবং স্রোতের শব্দ বাসার অবস্থান আড়াল করে দেয়।
বাসা বানানোর জন্য তারা ব্যবহার করে শেওলা, কচুরিপানা, ঘাস, শুকনো গাছের ছাল, গুল্ম ও মাটি। প্রথমে তারা ভেজা শেওলা আর ঘাস দিয়ে একটা শক্ত বেস তৈরি করে। তারপর তার ওপরে একের পর এক স্তরে গম্বুজ আকৃতির কাঠামো তৈরি করে। এই গম্বুজের এক পাশে ছোট্ট একটি প্রবেশপথ রাখে, যেটি দিয়ে ভেতরে ঢোকা যায়। এই প্রবেশপথটি এমনভাবে রাখা হয় যাতে বাইরে থেকে দেখা না যায় এবং পানির ছিটা সরাসরি না লাগে।
বাসার ভিতরের অংশটা তুলনামূলকভাবে শুকনো রাখা হয়। সেখানে তারা আরও নরম উপাদান—যেমন পশম, পালক, শুকনো ঘাস দিয়ে বিছানা তৈরি করে ডিম পাড়ার জন্য।
এই পুরো কাজটি বেশ কয়েকদিন ধরে চলে এবং ডিপার জোড়ার মধ্যে সাধারণত স্ত্রী পাখিটি ভেতরের কাজ করে, আর পুরুষ পাখিটি বাইরে থেকে উপকরণ সংগ্রহ করে আনে। এমনকি, কেউ যদি একটি ঝর্ণার কাছে ডিপার পাখির পুরোনো বাসা ভেঙে ফেলে দেয়, তবে সেই জোড়াটি আবারও একই জায়গায় নতুন বাসা বানিয়ে নেয়—কারণ স্থানটি তাদের কাছে নিরাপদ ও পরিচিত।
ডিপার পাখি সচরাচর একাকী থাকে, কিন্তু প্রজননের সময়ে তারা জোড়ায় জোড়ায় ঘুরে বেড়ায়। ডিম পাড়ে সাধারণত তিন থেকে পাঁচটি। বাচ্চাগুলো জন্মের পর থেকেই ঝরনার শব্দ শুনতে শুনতে বড় হয়। তাদেরও জীবনের প্রথম পাঠ—কীভাবে স্রোতের মাঝে দাঁড়াতে হয়, কীভাবে পানির নিচে হাঁটতে হয়, আর কীভাবে ঝর্নার পিছনে নিরাপদ বাসা বানাতে হয়।
তবে আজকের পৃথিবীতে ডিপার পাখিরা অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। জলদূষণ, নদীর গতিপথ বদল, কিংবা পাহাড়ি ঝরনার পাশে মানুষের হস্তক্ষেপ তাদের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউরোপিয়ান বার্ডলাইফ ইন্টারন্যাশনালের পরিবেশ গবেষক ড. গুনার মোলার বলেন, “ঝরনার উৎস ধ্বংস হলে ডিপারদের ভবিষ্যৎও অন্ধকারে ঢাকা পড়ে। তাই এই প্রজাতি রক্ষার জন্য ঝরনা ও পাহাড়ি নদীগুলোকে সংরক্ষণ করতে হবে।” তার বক্তব্যের বাংলা রূপ—“ঝর্ণার উত্স যদি নষ্ট হয়ে যায়, ডিপারদের অস্তিত্বও বিপন্ন হবে। তাই ঝর্ণা রক্ষা মানেই এই পাখিদের জীবন রক্ষা।”
বাংলাদেশে সরাসরি ডিপার পাখি দেখা যায় না, তবে নেপাল, উত্তর-পূর্ব ভারতের সিকিম, অরুণাচল কিংবা কাশ্মীর অঞ্চলে পাহাড়ি ঝরনার ধারে এই পাখিদের উপস্থিতি ট্যুরিস্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। পশ্চিমা দেশগুলোতে এরা লোককথার চরিত্র হয়ে উঠেছে—‘ঝরনার রক্ষক’ বা ‘পানির নৃত্যশিল্পী’ নামে ডাকা হয় তাদের।
ঝর্ণার গর্জনের পেছনে যখন সন্ধ্যার আলো মিশে যায়, তখনই হয়তো ডিপার পাখিরা তাদের বাসায় ফিরে আসে—জলে ভেজা ডানায় গ্রীষ্মের গান বয়ে আনে, আর আমাদের শেখায়, প্রকৃতিকে ভালোবাসা মানেই তার গভীর গোপন সৌন্দর্যকেও সম্মান করা।
ঝর্নার ধার দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আপনি হঠাৎ যদি দেখে ফেলেন একজোড়া পাখিকে পাথরের ফাঁকে গুটিসুটি হয়ে ঢুকে যাচ্ছে, তাহলে চমকে উঠবেন না। কারণ এরা হচ্ছে ডিপার পাখি—নির্জন ঝর্না আর পাহাড়ি জলের স্রোতের কাছেই যাদের ভালোবাসার সংসার। গায়ে ধূসর কিংবা বাদামি পালক, চোখে একরাশ দৃঢ়তা, আর ঠোঁটে পানির ছোঁয়া—এই পাখিরা অন্য দশটা পাখির মতো গাছে নয়, ঝর্নার পেছনে বাসা বানায়। পাথরের আড়ালে, জলের ঝাপটার ঠিক পেছনে যে জায়গাটায় সবসময় ভেজা অন্ধকার, সেইখানে তারা রচনা করে ঘর।
ডিপার পাখির বৈজ্ঞানিক নাম Cinclus cinclus—যাদের ইউরোপে ‘ইউরেশিয়ান ডিপার’ নামে ডাকা হয়। আবার আমেরিকায় দেখা যায় ‘আমেরিকান ডিপার’ (Cinclus mexicanus) নামে আরেক প্রজাতিকে। পৃথিবীতে মোট পাঁচটি ডিপার প্রজাতি রয়েছে, যারা সবাই কমবেশি একইরকম পরিবেশে বাস করে—ঝরনা, খরস্রোতা পাহাড়ি নদী, কিংবা জলপ্রপাতের ধারে। এই পাখিদের বাসার গড়নও আশ্চর্যরকমভাবে একরকম। ঝর্নার আড়ালে, জলকণায় সারা দিন ভেজা সেই বাসাগুলো যেন প্রকৃতির এক ছায়াসঙ্গীত।
এই পাখিরা কেন ঝর্নার পেছনে বাসা করে? যুক্তরাজ্যের British Trust for Ornithology (BTO)-এর গবেষক ড. ফ্রান্সেস টেলর বলছেন, "ডিপার পাখিরা ঝর্নার শব্দে যেমন নিশ্চিন্ত থাকে, তেমনি শিকারি প্রাণীদের চোখ থেকেও নিরাপদ থাকে। পানির শব্দ বাসার অবস্থান ঢেকে রাখে, ফলে এটি কার্যকর প্রতিরক্ষা দেয়।” তাঁর কথার বাংলা অনুবাদ—“ডিপার পাখিরা ঝর্নার শব্দে যেমন স্বস্তিতে থাকে, তেমনি শত্রুর চোখ থেকে বাসার অবস্থান লুকাতে পারে। পানির গর্জন যেন তাদের প্রাকৃতিক আলখেল্লা।”
বাসা বানাতে গিয়ে ডিপাররা আশেপাশের কচুরিপানা, শেওলা, ঘাস, এমনকি ঝর্ণার পাশে ভেসে থাকা ভেজা ডালপালাও ব্যবহার করে। ডিপারের বাসাগুলো গোল গম্বুজের মতো, যার ভেতরে একটিমাত্র ছোট ছিদ্র থাকে প্রবেশের জন্য। সেই ছিদ্র দিয়েই তারা ভেতরে ঢুকে, ডিম পাড়ে, বাচ্চা ফোটায় এবং শিকার নিয়ে আসে। বিশেষ করে মেয়ে ডিপারটি ডিমে তা দেয়, আর পুরুষটি বাইরে থেকে শিকার করে আনে—ছোট মাছ, জলের পোকামাকড় কিংবা জলজ কীটই এদের প্রধান খাবার।
ডিপার পাখিদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হলো, তারা পানির নিচে হাঁটতে পারে। সাধারণ পাখিদের মতো ভেসে না থেকে ডিপাররা পানির নিচে স্রোতের উল্টো দিকে হাঁটতে পারে এবং পাথরের নিচে লুকানো শিকার খুঁজে পায়। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডোর জীববিজ্ঞানী ড. মার্থা হ্যারিস বলেন, “ডিপার পাখির রক্তে অক্সিজেন বহনের ক্ষমতা অনেক বেশি। তাদের হিমোগ্লোবিন এমনভাবে গঠিত, যা পানির নিচে বেশি সময় থাকতে সাহায্য করে।” অনুবাদ করলে দাঁড়ায়—“ডিপারের রক্তে এত বেশি অক্সিজেন থাকে যে, তারা অন্য পাখির চেয়ে অনেক বেশি সময় পানির নিচে থাকতে পারে। এই দক্ষতা তাদের জীবনধারার অংশ।”
এই বৈশিষ্ট্যই ডিপারদের জলপ্রপাতের জীব বানিয়ে তুলেছে। পানি, ঠাণ্ডা বাতাস, আর ভেজা পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর এই চমৎকার ক্ষমতা তাদের অন্য পাখিদের চেয়ে আলাদা করেছে। বর্ষাকালে বা বরফ গলার সময়ে স্রোত বাড়লেও ডিপাররা ঝর্নার পেছনের সেই নিরাপদ আশ্রয়েই থাকে। এমনকি এক জায়গায় সফলভাবে বাসা বানালে পরের বছর আবারও সেই স্থানেই ফিরে আসে।
ডিপার পাখি ঝরনার ধার ঘেঁষে এমন একটি জায়গা খুঁজে নেয়, যেটি সবসময় ভিজে থাকে, কিন্তু সরাসরি পানির নিচে না। সাধারণত এটি হয় পাথরের ফাঁকে, ঝরনার নিচে গুহামতো কোনো ফাটলে, কিংবা ছোট্ট গহ্বরে যেখানে জলপ্রপাতের পানি সরাসরি পড়ে না, তবে আশেপাশে সবসময় স্যাঁতসেঁতে থাকে। সেই জায়গায় বাসা বানালে শিকারি প্রাণীরা সহজে খুঁজে পায় না এবং স্রোতের শব্দ বাসার অবস্থান আড়াল করে দেয়।
বাসা বানানোর জন্য তারা ব্যবহার করে শেওলা, কচুরিপানা, ঘাস, শুকনো গাছের ছাল, গুল্ম ও মাটি। প্রথমে তারা ভেজা শেওলা আর ঘাস দিয়ে একটা শক্ত বেস তৈরি করে। তারপর তার ওপরে একের পর এক স্তরে গম্বুজ আকৃতির কাঠামো তৈরি করে। এই গম্বুজের এক পাশে ছোট্ট একটি প্রবেশপথ রাখে, যেটি দিয়ে ভেতরে ঢোকা যায়। এই প্রবেশপথটি এমনভাবে রাখা হয় যাতে বাইরে থেকে দেখা না যায় এবং পানির ছিটা সরাসরি না লাগে।
বাসার ভিতরের অংশটা তুলনামূলকভাবে শুকনো রাখা হয়। সেখানে তারা আরও নরম উপাদান—যেমন পশম, পালক, শুকনো ঘাস দিয়ে বিছানা তৈরি করে ডিম পাড়ার জন্য।
এই পুরো কাজটি বেশ কয়েকদিন ধরে চলে এবং ডিপার জোড়ার মধ্যে সাধারণত স্ত্রী পাখিটি ভেতরের কাজ করে, আর পুরুষ পাখিটি বাইরে থেকে উপকরণ সংগ্রহ করে আনে। এমনকি, কেউ যদি একটি ঝর্ণার কাছে ডিপার পাখির পুরোনো বাসা ভেঙে ফেলে দেয়, তবে সেই জোড়াটি আবারও একই জায়গায় নতুন বাসা বানিয়ে নেয়—কারণ স্থানটি তাদের কাছে নিরাপদ ও পরিচিত।
ডিপার পাখি সচরাচর একাকী থাকে, কিন্তু প্রজননের সময়ে তারা জোড়ায় জোড়ায় ঘুরে বেড়ায়। ডিম পাড়ে সাধারণত তিন থেকে পাঁচটি। বাচ্চাগুলো জন্মের পর থেকেই ঝরনার শব্দ শুনতে শুনতে বড় হয়। তাদেরও জীবনের প্রথম পাঠ—কীভাবে স্রোতের মাঝে দাঁড়াতে হয়, কীভাবে পানির নিচে হাঁটতে হয়, আর কীভাবে ঝর্নার পিছনে নিরাপদ বাসা বানাতে হয়।
তবে আজকের পৃথিবীতে ডিপার পাখিরা অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। জলদূষণ, নদীর গতিপথ বদল, কিংবা পাহাড়ি ঝরনার পাশে মানুষের হস্তক্ষেপ তাদের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউরোপিয়ান বার্ডলাইফ ইন্টারন্যাশনালের পরিবেশ গবেষক ড. গুনার মোলার বলেন, “ঝরনার উৎস ধ্বংস হলে ডিপারদের ভবিষ্যৎও অন্ধকারে ঢাকা পড়ে। তাই এই প্রজাতি রক্ষার জন্য ঝরনা ও পাহাড়ি নদীগুলোকে সংরক্ষণ করতে হবে।” তার বক্তব্যের বাংলা রূপ—“ঝর্ণার উত্স যদি নষ্ট হয়ে যায়, ডিপারদের অস্তিত্বও বিপন্ন হবে। তাই ঝর্ণা রক্ষা মানেই এই পাখিদের জীবন রক্ষা।”
বাংলাদেশে সরাসরি ডিপার পাখি দেখা যায় না, তবে নেপাল, উত্তর-পূর্ব ভারতের সিকিম, অরুণাচল কিংবা কাশ্মীর অঞ্চলে পাহাড়ি ঝরনার ধারে এই পাখিদের উপস্থিতি ট্যুরিস্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। পশ্চিমা দেশগুলোতে এরা লোককথার চরিত্র হয়ে উঠেছে—‘ঝরনার রক্ষক’ বা ‘পানির নৃত্যশিল্পী’ নামে ডাকা হয় তাদের।
ঝর্ণার গর্জনের পেছনে যখন সন্ধ্যার আলো মিশে যায়, তখনই হয়তো ডিপার পাখিরা তাদের বাসায় ফিরে আসে—জলে ভেজা ডানায় গ্রীষ্মের গান বয়ে আনে, আর আমাদের শেখায়, প্রকৃতিকে ভালোবাসা মানেই তার গভীর গোপন সৌন্দর্যকেও সম্মান করা।
ব্যালেস্টিক মিসাইল হলো এমন এক ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র, যেটা আকাশে উঠে গিয়ে কিছুদূর বলের মতো ধনুকের তীরের মতো একধরনের বক্রপথে চলে। মাটির কাছ থেকে উৎক্ষেপণ করে তাকে এমনভাবে ছুড়ে দেওয়া হয়, যাতে সে নিজের গতি আর অভিকর্ষ বলের উপর নির্ভর করে লক্ষ্যে গিয়ে পড়ে। এই মিসাইল সাধারণত তিনটি ধাপে কাজ করে—প্রথমে উৎক্ষেপণ
৩ দিন আগেইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী এই ক্ষেপণাস্ত্রটির উন্মোচন করে ২০২৪ সালের মে মাসে। এটি তৈরি করা হয়েছে শহীদ কাশিম সোলায়মানির নাম অনুসারে। কাশিম ২০২০ সালে এক মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন। কাশিম বশির অর্থাৎ ‘বার্তাবাহক কাশিম’ – যেন প্রতিশোধ আর প্রতিরক্ষা দুইয়ের প্রতীক।
৩ দিন আগেসকালের নাশতায় অনেকেই এখন ‘ওটস’ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলছেন। কেউ কেউ আবার এটাকে “বিদেশি খাবার” বলে এড়িয়ে চলেন। কেউ বলেন, এতে ঠিকভাবে পেট ভরে না। আবার কেউ বলেন, ওটস খাওয়া মানে একঘেয়ে একটা জিনিস মুখে দেওয়া। কিন্তু আসলেই কি ওটস খাওয়া কেবল ট্রেন্ড না পেট ও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কিছু? আমরা যদি একবার এই খাবার
৪ দিন আগেআজ সারা দেশে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টিও হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
৫ দিন আগে