তানভীর হোসেন
সম্প্রতি প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির পদার্থবিদ অধ্যাপক এম. জাহিদ হাসান ও তাঁর গবেষণা দল একটি নতুন ধরনের কোয়ান্টাম অবস্থা আবিষ্কার করেছেন, যার নাম কাইরাল কোয়ান্টাম স্টেট। এই অবস্থা ধরা পড়েছে এমন এক স্ফটিকে, যার নিজের গঠনই "কাইরাল" নয়।
"কাইরাল" শব্দটা এসেছে একটি গ্রিক শব্দ থেকে। যেটা শুনলেই মনে পড়ে আমাদের হাতের কথা।যেমন ধরুন, ডান হাত আর বাম হাত, দেখতে এক রকম হলেও একে অপরের বিকল্প নয়। আয়নায় দেখলে মনে হয় এক, কিন্তু বাস্তবে কখনোই মিলবে না। এই অনন্যতা, এই প্রতিসীমার অসমতা, পদার্থবিজ্ঞানে 'কাইরালিটি' নামে পরিচিত। বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, কোনো বস্তু কেবল তখনই কাইরাল হয়, যদি তার অভ্যন্তরীণ গঠন সেই কাইরাল বৈশিষ্ট্যকে বহন করে। কিন্তু অধ্যাপক জাহিদ হাসানের সাম্প্রতিক গবেষণা এই ধারনাকে বদলে দিয়েছে।
এই গবেষণায় ব্যবহৃত হয়েছে একটি বিশেষ স্ফটিক পদার্থ, KV₃Sb₅, এটি একটি কাগোমে ল্যাটিস টপোলজিক্যাল উপকরণ। এই স্ফটিকের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আগে থেকেই অনেক গবেষণা হয়েছে, কিন্তু এতদিন এর মধ্যে কেউ কাইরাল বৈশিষ্ট্যের উপস্থিতি শনাক্ত করতে পারেননি।
অধ্যাপক হাসান ও তাঁর গবেষক দল এই রহস্য উন্মোচনের জন্য ব্যবহার করেছেন একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, যার নাম স্ক্যানিং ফোটোকারেন্ট মাইক্রোস্কোপ (SPCM)। এই যন্ত্রটির মাধ্যমে তারা দেখতে পান, ইলেকট্রনের ঘনত্বে সূক্ষ্ম এক চক্রাকার অমিল তৈরি হচ্ছে, যেটা কাইরাল কোয়ান্টাম স্টেটের ইঙ্গিত দেয়।
এই আবিষ্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি প্রমাণ করে, কোনো স্ফটিক কাঠামো গঠনে কাইরাল না হলেও, তার অভ্যন্তরীণ ইলেকট্রনদের সম্মিলিত গতি এমন এক ধরনের কাইরাল বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করতে পারে, যেটা আগে কখনো ধরা পড়েনি। "অ-কাইরাল" গঠনের ভেতর কিভাবে কাইরাল কোয়ান্টাম অবস্থা তৈরি হতে পারে, তার বাস্তব উদাহরণ এই গবেষণায় তুলে ধরা হয়েছে।
অধ্যাপক হাসান বলেন, "এটা অনেকটা জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ দিয়ে কোয়ান্টাম জগতকে দেখে নতুন কিছু আবিষ্কারের মতো ব্যাপার।" তিনি আরও বলেন, "আশ্চর্য লাগে ভেবে যে, এমন এক ধরনের কাইরাল অবস্থা, যেটা নিজে থেকেই গড়ে ওঠে, এতটা স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে, যেটা আগে কখনো কেউ দেখেনি।" তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভবিষ্যতে এই কাইরাল কোয়ান্টাম স্টেট থেকে তৈরি হতে পারে একেবারে নতুন ধরণের অপটোইলেকট্রনিক বা সোলার প্রযুক্তি।
এই আবিষ্কার থেকে ভবিষ্যতের কোয়ান্টাম প্রযুক্তিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বারও খুলে যেতে পারে। বিশেষ করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার, সেন্সর প্রযুক্তি, এবং চৌম্বকীয় ডিভাইস তৈরিতে এই ধরনের কাইরাল কোয়ান্টাম স্টেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রসঙ্গত, অধ্যাপক এম. জাহিদ হাসান এর আগেও ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো ভাইল ফার্মিওন কণার বাস্তব অস্তিত্ব শনাক্ত করে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন। ভাইল ফার্মিওন ছিল একটি কাইরাল কণা, যার অস্তিত্ব শুধু তাত্ত্বিকভাবে ভাবা হতো। এক দশক পর, তাঁর নেতৃত্বেই আবিষ্কৃত হলো বাস্তব পদার্থে আরেকটি কাইরাল কোয়ান্টাম অবস্থা, যা পদার্থবিজ্ঞানে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলো।
এই গবেষণার বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে Nature Communications সাময়িকীতে। বৈজ্ঞানিক মহলে এই গবেষণাটি ইতোমধ্যেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এই গবেষণা প্রমাণ করে, আমাদের পরিচিত জগতের গাঠনিক নিয়ম ছাড়াও কণাদের আচরণে লুকিয়ে আছে আরও অনেক জটিলতা, যা ধীরে ধীরে আমাদের সামনে উন্মোচিত হতে চলেছে।
সূত্র: ফিজিকস ডট ওআরজি
সম্প্রতি প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির পদার্থবিদ অধ্যাপক এম. জাহিদ হাসান ও তাঁর গবেষণা দল একটি নতুন ধরনের কোয়ান্টাম অবস্থা আবিষ্কার করেছেন, যার নাম কাইরাল কোয়ান্টাম স্টেট। এই অবস্থা ধরা পড়েছে এমন এক স্ফটিকে, যার নিজের গঠনই "কাইরাল" নয়।
"কাইরাল" শব্দটা এসেছে একটি গ্রিক শব্দ থেকে। যেটা শুনলেই মনে পড়ে আমাদের হাতের কথা।যেমন ধরুন, ডান হাত আর বাম হাত, দেখতে এক রকম হলেও একে অপরের বিকল্প নয়। আয়নায় দেখলে মনে হয় এক, কিন্তু বাস্তবে কখনোই মিলবে না। এই অনন্যতা, এই প্রতিসীমার অসমতা, পদার্থবিজ্ঞানে 'কাইরালিটি' নামে পরিচিত। বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, কোনো বস্তু কেবল তখনই কাইরাল হয়, যদি তার অভ্যন্তরীণ গঠন সেই কাইরাল বৈশিষ্ট্যকে বহন করে। কিন্তু অধ্যাপক জাহিদ হাসানের সাম্প্রতিক গবেষণা এই ধারনাকে বদলে দিয়েছে।
এই গবেষণায় ব্যবহৃত হয়েছে একটি বিশেষ স্ফটিক পদার্থ, KV₃Sb₅, এটি একটি কাগোমে ল্যাটিস টপোলজিক্যাল উপকরণ। এই স্ফটিকের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আগে থেকেই অনেক গবেষণা হয়েছে, কিন্তু এতদিন এর মধ্যে কেউ কাইরাল বৈশিষ্ট্যের উপস্থিতি শনাক্ত করতে পারেননি।
অধ্যাপক হাসান ও তাঁর গবেষক দল এই রহস্য উন্মোচনের জন্য ব্যবহার করেছেন একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, যার নাম স্ক্যানিং ফোটোকারেন্ট মাইক্রোস্কোপ (SPCM)। এই যন্ত্রটির মাধ্যমে তারা দেখতে পান, ইলেকট্রনের ঘনত্বে সূক্ষ্ম এক চক্রাকার অমিল তৈরি হচ্ছে, যেটা কাইরাল কোয়ান্টাম স্টেটের ইঙ্গিত দেয়।
এই আবিষ্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি প্রমাণ করে, কোনো স্ফটিক কাঠামো গঠনে কাইরাল না হলেও, তার অভ্যন্তরীণ ইলেকট্রনদের সম্মিলিত গতি এমন এক ধরনের কাইরাল বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করতে পারে, যেটা আগে কখনো ধরা পড়েনি। "অ-কাইরাল" গঠনের ভেতর কিভাবে কাইরাল কোয়ান্টাম অবস্থা তৈরি হতে পারে, তার বাস্তব উদাহরণ এই গবেষণায় তুলে ধরা হয়েছে।
অধ্যাপক হাসান বলেন, "এটা অনেকটা জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ দিয়ে কোয়ান্টাম জগতকে দেখে নতুন কিছু আবিষ্কারের মতো ব্যাপার।" তিনি আরও বলেন, "আশ্চর্য লাগে ভেবে যে, এমন এক ধরনের কাইরাল অবস্থা, যেটা নিজে থেকেই গড়ে ওঠে, এতটা স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে, যেটা আগে কখনো কেউ দেখেনি।" তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভবিষ্যতে এই কাইরাল কোয়ান্টাম স্টেট থেকে তৈরি হতে পারে একেবারে নতুন ধরণের অপটোইলেকট্রনিক বা সোলার প্রযুক্তি।
এই আবিষ্কার থেকে ভবিষ্যতের কোয়ান্টাম প্রযুক্তিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বারও খুলে যেতে পারে। বিশেষ করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার, সেন্সর প্রযুক্তি, এবং চৌম্বকীয় ডিভাইস তৈরিতে এই ধরনের কাইরাল কোয়ান্টাম স্টেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রসঙ্গত, অধ্যাপক এম. জাহিদ হাসান এর আগেও ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো ভাইল ফার্মিওন কণার বাস্তব অস্তিত্ব শনাক্ত করে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন। ভাইল ফার্মিওন ছিল একটি কাইরাল কণা, যার অস্তিত্ব শুধু তাত্ত্বিকভাবে ভাবা হতো। এক দশক পর, তাঁর নেতৃত্বেই আবিষ্কৃত হলো বাস্তব পদার্থে আরেকটি কাইরাল কোয়ান্টাম অবস্থা, যা পদার্থবিজ্ঞানে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলো।
এই গবেষণার বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে Nature Communications সাময়িকীতে। বৈজ্ঞানিক মহলে এই গবেষণাটি ইতোমধ্যেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এই গবেষণা প্রমাণ করে, আমাদের পরিচিত জগতের গাঠনিক নিয়ম ছাড়াও কণাদের আচরণে লুকিয়ে আছে আরও অনেক জটিলতা, যা ধীরে ধীরে আমাদের সামনে উন্মোচিত হতে চলেছে।
সূত্র: ফিজিকস ডট ওআরজি
ই ক্ষেপণাস্ত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এর কঠিন জ্বালানিচালিত ইঞ্জিন। কঠিন জ্বালানি ব্যবহারে একাধিক সুবিধা রয়েছে। তরল জ্বালানির মতো আলাদা ট্যাঙ্ক বা ফিলিংয়ের ঝামেলা নেই।
১ দিন আগেশিশুদের হজমপ্রক্রিয়া বড়দের মতো নয়। তারা খাওয়ার পর অনেক সময় সহজে হজম করতে পারে না, আবার কিছু শিশু জন্মগতভাবেই একটু ধীরে হজম করে।
১ দিন আগেক্লাসিক্যাল বিট তৈরি হয় বৈদ্যুতিক সার্কিটের মাধ্যমে, যেখানে একটি ট্রানজিস্টার হয় চালু (১) অথবা বন্ধ (০)। কিন্তু কিউবিট তৈরি হয় পরমাণুর অদ্ভুত আচরণ দিয়ে। কোনো একক ইলেকট্রন, ফোটন, বা নিউক্লিয়াসের ঘূর্ণন—এই সবকিছু দিয়েই একটি কিউবিট বানানো যেতে পারে।
১ দিন আগেদেশের আট জেলায় সন্ধ্যার মধ্যে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমন পরিস্থিতিতে এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
২ দিন আগে