যুদ্ধ থামাতে পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক শুক্রবার

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
ভ্লাদিমির পুতিন (বাঁয়ে) ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

নানা উদ্যোগ নিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের প্রয়াসে ব্যর্থতার মধ্যেই এবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৈঠক থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণা আসবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় রয়েছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

আগামীকাল শুক্রবার (১৫ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের অ্যাঙ্করিজ শহরে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক এই বৈঠক হবে। এর আগে ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে একাধিক ফোনালাপও হয়েছে।

এর মধ্যে পুতিন-ট্রাম্প বৈঠকের দুদিন আগে বুধবার (১৩ আগস্ট) ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন ট্রাম্প।

বৈঠক শেষে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, শুক্রবারের বৈঠকে রাশিয়া যদি যুদ্ধ বন্ধ করার বিষয়ে রাজি না হয়, তাহলে এর পরণতি হবে খুবই মারাত্মক।

অন্যদিকে বৈঠকে যে চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা কম, সে ইঙ্গিত হোয়াইট হাউজও দিয়ে রেখেছে। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই যুদ্ধে জড়িত পক্ষগুলোর মধ্যে কেবল একটি পক্ষই (বৈঠকে) উপস্থিত থাকবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন, কারণ কীভাবে আমরা এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে পারি, তার একটি সুস্পষ্ট ধারণা নিতে চান তিনি।’

সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, অ্যাঙ্করিজের একটি সামরিক ঘাঁটিতে বৈঠকটি হবে। ট্রাম্প-পুতিন একান্তভাবে এ বৈঠক করবেন। অর্থাৎ তারা দুজন ছাড়া বৈঠকে কেউ উপস্থিত থাকবেন না।

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্প এর আগে বলেছিলেন, সাড়ে তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে হলে দুপক্ষকেই ছাড় দিতে হবে। ইউক্রেনকে যেমন কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হবে, তেমনি রাশিয়া যেসব ভূখণ্ডের দখল নিয়েছে, সেসবেরও কিছু ছাড়তে হবে।

তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, সংবিধানের পরিপন্থি এ ধরনের কোনো চুক্তি তার দেশ করবে না। ইউক্রেনকে আলোচনায় না রেখে এ ধরনের কোনো চুক্তি হতে পারে না বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।

এরপর ট্রাম্প আবার বলেন, পুতিনের সঙ্গে আবার তার বৈঠক হতে পারে। দ্বিতীয় বৈঠক হলে তাতে জেলেনস্কিও থাকবেন।

ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনার ধারাবাহিকতায় এর মধ্যে জার্মানির রাজধানী বার্লিনে যান জেলেনস্কি। সেখানে জেলেনস্কিসহ ইউরোপের নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপ করেন ট্রাম্প। পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি যেন ইউক্রেনের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন, সে জন্য চাপ দিতেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এই ফোনালাপ করেন ইউরোপের নেতারা।

ইউরোপের নেতারা বলছেন, যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে চুক্তি করতে হলে অবশ্যই ইউক্রেনকেও এর সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। কিয়েভকে বাদ দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতির কোনো চুক্তি হতে পারে না। পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প যাতে ইউক্রেনের স্বার্থের বিষয়টির প্রতি সম্মান দেখান, সেটা চান তারা।

ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে জেলেনস্কি ও জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস ছাড়াও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ইইউর প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন, ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুত্তেসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপ শেষে যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্স একটি যৌথ বিবৃতি দেয়। তাতে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির কোনো চুক্তি হলে তাতে অবশ্যই ইউক্রেনের নিরাপত্তার পূর্ণ নিশ্চয়তার বিষয়টি থাকতে হবে। আর পুতিন যদি শুক্রবার যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তি করতে রাজি না হন, তাহলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া উচিত।

এদিকে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের পর জেলেনস্কি বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধের যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা, তাতে অবশ্যই ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্রদেশগুলোকে যুক্ত করতে হবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আলাস্কার বৈঠকের আগে আমরা আমাদের সমন্বিত অবস্থান (ট্রাম্পকে) জানিয়েছি। এই হত্যাযজ্ঞ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। রাশিয়ার ওপর চাপ দিন। এতে কাজ হয়। শান্তি ফেরাতে এর বিকল্প নেই।’

ad
ad

বিশ্ব রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

এবার পুতিন-জেলেনস্কিকে মুখোমুখি নিয়ে বসবেন ট্রাম্প

এ বৈঠকের দিন-তারিখ নিয়ে অবশ্য কোনো তরহ্য মেলেনি। নির্ধারণ হয়নি বৈঠকের স্থানও। তবে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস আভাস দিয়েছেন, সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই ত্রিপাক্ষিক বৈঠকটি হতে পারে।

৩ ঘণ্টা আগে

বৈঠকে ট্রাম্প-জেলেনস্কি, যেসব শর্ত আলোচনায়

বৈঠকের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধে অনেক অগ্রগতি হচ্ছে। এ সময় জেলেনস্কি বলেন, কূটনৈতিকভাবে যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনায় ইউক্রেনের সমর্থন আছে।

১১ ঘণ্টা আগে

ব্যাটল অব হ্যাস্টিংসের ইতিহাস

ইংল্যান্ডের সিংহাসন তখন ছিল এক জটিল রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কেন্দ্র। ইংরেজ রাজা এডওয়ার্ড দ্য কনফেসর ১০৬৬ সালের জানুয়ারিতে উত্তরাধিকারী ছাড়াই মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াল—কে ইংল্যান্ডের নতুন রাজা হবেন? রাজ্যের প্রধান অভিজাতেরা হ্যারল্ড গডউইনসনকে রাজা ঘোষণা করলেন।

১৭ ঘণ্টা আগে

মায়ানমারে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করল জান্তা

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথম নির্বাচনের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে।তবে সমালোচকরা ইতোমধ্যেই এই নির্বাচনকে ধোঁকাবাজি বলে উল্লেখ করেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

১৮ ঘণ্টা আগে