অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল, শেখ হাসিনার বিচার শুরু

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৫, ১৪: ৫২
(বাঁ থেকে) শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। ছবি কোলাজ: রাজনীতি ডটকম

গত বছরের জুলাই-আগস্টে গণআন্দোলন চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাকে ‘নির্দেশদাতা’ উল্লেখ করে তিনজনের বিরুদ্ধে দাখিল করা সুনির্দিষ্ট পাঁচটি অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এর মধ্যে দিয়ে জুলাই আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম কোনো মামলার বিচার প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলো।

এ মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকেও আসামি করা হয়েছে। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান ‘পলাতক’ থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল। সাবেক আইজিপি গ্রেপ্তার রয়েছেন। তাতে এ মামলাতেও গ্রেপ্তার দেখাতে বলা হয়েছে।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রসিকিউশন টিম রোববার (১ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ দাখিল করেন।

এ দিন প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের দপ্তরে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এবং বিভিন্ন নথি ও দলিলপত্র জমা দেওয়া হয়। পরে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ১৩৪ পৃষ্ঠার ওই অভিযোগপত্র ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করেন। আদালতের এই শুনানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভির মাধ্যমে সরাসরি সম্পচার করা হয়।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই বিচার কার্যক্রম চলবে। ট্রাইব্যুনালের বাকি দুই সদস্য হলেন— বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্তদের বিচার করার জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিলেন, সেই আদালতেই এখন তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচার কার্যক্রম চলছে।

৮০০০ পাতার অভিযোগ, সাক্ষী ৮১

অভিযোগপত্রে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জুলাই আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ‘মাস্টারমাইন্ড, হুকুমদাতা ও সুপিরিয়র কমান্ডার’ উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি দুই আসামি আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে বিভিন্ন ঘটনায় নির্দেশদাতাসহ শেখ হাসিনার নির্দেশ প্রত্যক্ষভাবে বাস্তবায়নকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

শেখ হাসিনাসহ বাকি দুই আসামির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে সুনির্দিষ্ট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রের পাশাপাশ অভিযোগ প্রমাণে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত, দালিলিক প্রমাণসহ ভিডিও-অডিও কলের বিস্তারিত উল্লেখ করে মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়েছে। মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ৮১ জনকে।

এর আগে গত ১২ মে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। ওই দিন ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নির্বিচারে এক হাজার চার শতাধিক মানুষ হত্যার দায় শেখ হাসিনার।

তিন আসামির বিরুদ্ধে নির্বিচারে হত্যার নির্দেশনা, প্ররোচনা, উসকানিসহ পাঁচ অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে বলে সে দিন জানান চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

দেশের ইতিহাসে প্রথমবার ‘নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট’ দেখলাম : দেবপ্রিয়

রবিবার (২০ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ইউএস রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ : কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক ইস্যুতে কিছুটা ব্যঙ্গাত্মক সুরে দেবপ্রিয় বলেন, ‘কর্দমাক্ত জায়গায় নিষ্পাপ সরকার নিয়ে এগোচ্ছি। এমন নির্দোষ আর নিষ্পাপ সরকার আমি আগে দেখিনি

৮ ঘণ্টা আগে

'ফিটনেসবিহীন গণপরিবহন সরিয়ে নিতে বিশেষ ঋণ দেবে সরকার'

সেতু ও যোগাযোগ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, সড়কে চলাচলকারী ফিটনেসবিহীন গণপরিবহন সরিয়ে নিতে বিশেষ ঋণ দেওয়া হবে। রবিবার সকালে রাজধানীর হাতিরঝিলে চক্রাকার বাসে ‘র‍্যাপিড পাস’ কার্ড কার্যক্রমের উদ্বোধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

৯ ঘণ্টা আগে

যুক্তরাজ্যে গোপনে সম্পত্তির মালিকানা ছাড়ছেন হাসিনা ঘনিষ্ঠরা

হাসিনার সরকারের পতন ঘটাতে বাংলাদেশে যখন ছাত্রদের নেতৃত্বে আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নেয়, তখন নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে শত শত বিক্ষোভকারী প্রাণ হারায়। এরপর হাসিনাসহ তার মন্ত্রিসভার প্রায় সব সদস্য গা ঢাকা দেন। কেউ কেউ পাড়ি জমান যুক্তরাজ্যে।

১০ ঘণ্টা আগে

গণহত্যা মামলায় ৪৫ জনের বিরুদ্ধে ৩ মাসে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। সেই সময় পরে আরও দুবার বাড়ানো হয়।

১০ ঘণ্টা আগে