নির্বাচন সামনে রেখে টেলিকম নীতিমালা প্রণয়নে বিএনপির উদ্বেগ

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৪: ৪৩

জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে টেলিকম নীতিমালা প্রণয়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের এমন সব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, যা দেশ ও জনগণের কল্যাণ বয়ে আনে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও আমরা এই মুহূর্তে এ ধরণের একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছি। এই নীতির উদ্দেশ্য হলো, লাইসেন্সিং পদ্ধতি সহজ করা, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি উৎসাহিত করা এবং গ্রামীণ জনগণের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি বাড়ানো; যা অবশ্যই ইতিবাচক একটি বিষয়। তবে খসড়া নীতিমালাটি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এতে কিছু গুরুতর সমস্যা রয়েছে; যা টেলিকম খাতে সমতাভিত্তিক ও টেকসই উন্নয়নে বাধা দিতে পারে। বিএনপি গঠনমূলক মনোভাব নিয়ে এই খসড়ার সম্ভাব্য দুর্বলতা, অস্পষ্টতা এবং বড় মোবাইল অপারেটরদের পক্ষে অধিক সুবিধা পাওয়ার কিছু ধারা তুলে ধরছে– যা ছোট ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান (এসএমই) এবং স্থানীয় উদ্যোক্তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।’

ফখরুর বলেন, ‘আমরা সরকারকে আহ্বান জানাই, এই গুরুত্বপূর্ণ নীতি বাস্তবায়নের আগে তারা যেন পূর্ণাঙ্গ আর্থিক ও সামাজিক প্রভাব বিশ্লেষণ এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে অংশগ্রহণমূলক আলোচনা করার পর নীতিমালা চূড়ান্ত করেন। বিশেষ করে সামনে জাতীয় নির্বাচনকে বিবেচনায় রেখে এ ধরনের একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা এ সময়ে একতরফাভাবে প্রণয়ন করা সমীচীন হবে না বলে বিএনপি বিশ্বাস করে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাজারে একচেটিয়া আধিপত্যের ঝুঁকি: একাধিক সেবা খাতে মালিকানা রাখার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে বড় মোবাইল অপারেটররা একাধিক খাতে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এতে প্রতিযোগিতা কমে যাবে এবং ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো পিছিয়ে পড়বে।’ এতে করে ছোট ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সংকটে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য মালিকানার সীমা নিয়ে অস্পষ্টতা আছে, যা বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে পারে এবং খাতের স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করতে পারে। ক্রস-ওনারশিপের ফাঁকফোকর: উল্লম্ব ও সমান্তরাল মালিকানার বিষয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যার অভাবে বড় কোম্পানিগুলো আরও বাজার দখল করে নিতে পারে।’

তিনি মনে করেন, ‘মোবাইল অপারেটরদের ফাইবারভিত্তিক ব্যবসা সংযোগ সেবা কোথায় সীমাবদ্ধ তা স্পষ্ট নয়, ফলে বিবাদ ও অসাম্য তৈরি হতে পারে।’

বিএনপি মহাসচিব উল্লেখ করেন, ‘স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড বা নতুন ডিজিটাল সেবা নিয়ে নীতিতে কোনও সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই, যা বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করতে পারে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই ধরনের জাতীয় পর্যায়ের টেলিকম নীতি প্রণয়নে অবশ্যই সতর্কতা, স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে নিতে হবে। সামনে জাতীয় নির্বাচন থাকায়, তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। বিএনপি বিশ্বাস করে, সবার জন্য উপকার বয়ে আনে এমন নীতিই গ্রহণযোগ্য। ডিজিটাল সংযুক্তির মাধ্যমে সমতাভিত্তিক উন্নয়ন এবং জাতীয় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার অঙ্গীকারেই আমরা কাজ করে যাবো।’

সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান উপস্থিত ছিলেন।

ad
ad

ঘরের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

বিএনপি বনাম জামায়াত-এনসিপি-বাম— বিরোধ এবার নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন না হলে ছোট দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা কঠিন। এ পদ্ধতিতে ইসলামি দল বা বাম দল, এমনকি নতুন দল এনসিপিরও সংসদে কিছু আসন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ থাকায় এবং জাতীয় পার্টিকে সরকার এড়িয়ে চলায় পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে

১১ ঘণ্টা আগে

জাতীয় ঐকমত্য গঠনে বিএনপি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে: সালাহউদ্দিন

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আজকে আলোচনার বিষয় ছিল সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির মধ্যে কি সংশোধনী আনা যায়, এতে বিচার বিভাগকে না রেখে উত্তম কোনো প্রস্তাব আছে কি না? সে বিষয়ে সবার মতামত।’

১ দিন আগে

বিচার-সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না এনসিপি : নাহিদ

এনসিপির এই আহ্বায়ক বলেন, ‘ভারত অন্যায্যভাবে আমাদের নদীর পানির হিস্যা বুঝিয়ে দেয় না। জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতৃত্বে নদী ও সীমান্ত সুরক্ষা আন্দোলন শিগগিরই শুরু হবে। আমরা এ অঞ্চলের মানুষের নদীর অধিকার, সীমান্তে বেঁচে থাকার অধিকার আদায় করে ছাড়ব।’

১ দিন আগে

বড় দল হিসেবে বিএনপির দায়িত্ব অনেক, স্যাক্রিফাইসটাও বেশি: তারেক রহমান

সংস্কার প্রশ্নে বিএনপি ছাড় দিয়েছে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, সংস্কার প্রস্তাবনা নিয়ে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করছে সরকার। প্রত্যেকটি দলেরই নিজস্ব আদর্শ ও লক্ষ্য রয়েছে। কিছু মিডিয়ার বিএনপি সংস্কার মানছে না, এমনটা বলা হচ্ছে। কিন্তু সত্যটা হলো সংস্কার প্রশ্নে বিএনপি অনেক বিষয়ে ছাড় দিয়ে

১ দিন আগে