ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
বাংলাদেশে বর্ষা যতটা সুগন্ধি মাটির ঘ্রাণ আর কাদামাটি নিয়ে আসে, ততটাই সঙ্গে করে নিয়ে আসে আতঙ্ক—ডেঙ্গুর আতঙ্ক। আষাঢ়-শ্রাবণ মানেই শুধু বৃষ্টি নয়, হাসপাতালের বেডে রোগীর ভিড়, জরুরি ওয়ার্ডে কাঁদতে থাকা আত্মীয়স্বজন, রক্তদানের আবেদন আর সবচেয়ে করুণ—অকালে প্রাণ হারানো অনেক মানুষ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ডেঙ্গু কি শুধুই বর্ষার রোগ? আর যদি তাই হয়, তবে কেন বর্ষাকালেই এই রোগ সবচেয়ে ভয়ংকর রূপ নেয়?
ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা মূলত 'এডিস ইজিপ্টাই' নামের মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এই মশাটি খুবই বিশেষভাবে অভিযোজিত—এটি দিনের বেলা কামড়ায়, সাধারণত সকাল ও বিকেলের দিকে। কিন্তু এর সবথেকে ভয়ংকর দিক হলো, এটি স্বচ্ছ ও জমে থাকা পানিতে ডিম পাড়ে। আর এখানেই বর্ষাকালের সঙ্গে ডেঙ্গুর সম্পর্কটা তৈরি হয়। বর্ষার বৃষ্টিতে চারপাশে জমে থাকা পানি, যেমন ফুলের টব, ছাদের কোণা, ড্রেনের ঢাকনা, ফ্রিজের নিচের ট্রে, ব্যবহৃত টায়ার কিংবা প্লাস্টিকের কৌটা—সবই হয়ে ওঠে ডেঙ্গুবাহী মশার প্রজননের উপযুক্ত জায়গা। এই পানি কিছুদিন জমে থাকলেই মশার বংশবৃদ্ধি হয় এবং তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (CDC)-এর সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. থমাস ব্রুকস বলেন, “বর্ষার সময়টায় এডিস মশার বংশবৃদ্ধির হার বেড়ে যায়। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব অঞ্চলে মশা নিধনে সচেতনতা কম, সেখানে বর্ষা এলেই ডেঙ্গুর বিস্তার ভয়াবহ হয়।” তাঁর মতে, শুধু চিকিৎসা নয়, প্রতিরোধই ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একমাত্র কার্যকর উপায়।
ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরন রয়েছে—DENV-1, DENV-2, DENV-3 ও DENV-4। একবার কোনো একটি ধরনে আক্রান্ত হলে সাধারণত সারা জীবনের জন্য ওই ধরনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। কিন্তু বিপদ অন্য জায়গায়। কেউ যদি একবার DENV-1-এ আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠে, পরবর্তীতে যদি DENV-2 বা অন্য কোনো ধরনে আক্রান্ত হয়, তবে সেই রোগীর ডেঙ্গু জটিল আকার নিতে পারে—যাকে বলা হয় 'সেকেন্ডারি ইনফেকশন'। তখন রক্তে প্লেটলেট দ্রুত কমে যায়, শরীরে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হতে পারে এবং মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলছে, “প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে আনুমানিক ১০০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে।” সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ গত এক দশকে ভয়াবহভাবে বেড়েছে, যার বড় কারণ নগরায়নের দুর্বল পরিকল্পনা, আবর্জনা ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা এবং সচেতনতার অভাব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্ষাকাল যতটা না ডেঙ্গুর একমাত্র কারণ, তার চেয়েও বড় কারণ হলো—আমাদের অবহেলা। ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে এখনো অনেক জায়গায় নির্মাণাধীন ভবনের নিচে পানি জমে থাকে, আবর্জনার স্তূপে প্লাস্টিকের কৌটা ও খালি বোতল পড়ে থাকে, যা মশার প্রজননের সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। অথচ এসব জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার রাখা গেলে বহু মৃত্যুকে ঠেকানো যেত।
অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ডের পরিবেশ স্বাস্থ্য গবেষক ড. মেলিসা বার্নার বলেন, “আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সংক্রামক রোগের প্রকোপও বদলাতে দেখছি। বর্ষায় তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বাড়ে, যা এডিস মশার জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে।” তাঁর গবেষণা অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এশিয়ার শহরগুলোতে ডেঙ্গুর প্রকোপ আগামী বছরগুলোতে আরও বাড়তে পারে, যদি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া হয়।
তবে কেবল গবেষণা আর তথ্য জেনে থেমে থাকলে চলবে না, জানতে হবে—কীভাবে এই রোগ থেকে বাঁচা যায়। চিকিৎসকেরা বলে থাকেন, ডেঙ্গুর এখনও নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই, অর্থাৎ ভাইরাসটি শরীরে ঢুকে গেলে শরীরকেই তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়। তবে সময়মতো রোগ শনাক্ত হলে ও উপযুক্ত চিকিৎসা পেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। ডেঙ্গু হলে সাধারণত প্রথম দিকে হঠাৎ করে উচ্চ জ্বর আসে, সঙ্গে মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, গা ও জয়েন্টে ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং গায়ে র্যাশ উঠতে পারে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
তবে রোগ হলে চিকিৎসা করা আর রোগ হওয়ার আগেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা—এই দুটি এক নয়। বর্ষাকালে ডেঙ্গুর ঝুঁকি এড়াতে হলে ব্যক্তিগত ও সামাজিক দুটি পর্যায়েই ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে আমরা কী করতে পারি? প্রথমত, ঘর ও আশপাশ পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি। কোথাও যেন পানি জমে না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। ফুলের টব, কুলার, ফ্রিজের নিচের ট্রে, এসির পানি নিস্কাশনের জায়গা—সবকিছু নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। ছাদে বা বারান্দায় যেন পানি জমে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ঘরের জানালা ও দরজায় মশার জাল লাগানো, রাতে মশারি ব্যবহার করা, দিনে বাইরে বের হলে ফুলহাতা জামা পরা এবং শরীরের খোলা অংশে মশার প্রতিরোধী ক্রিম ব্যবহার করাও জরুরি। শিশু ও বৃদ্ধদের বিশেষভাবে রক্ষা করতে হবে, কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকায় ডেঙ্গু তাদের জন্য মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।
এছাড়া সামাজিক পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মশা নিধনের ওষুধ ছিটানো, নর্দমা পরিষ্কার রাখা, সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালানো—এসব নিয়মিতভাবে করা উচিত। শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে যদি সঠিকভাবে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা যায়, তবে ডেঙ্গুর মতো রোগের বিস্তার অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন ডেঙ্গু প্রতিরোধে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে। যেমন ব্রাজিল ও অস্ট্রেলিয়ায় পরীক্ষামূলকভাবে ‘উলবাখিয়া’ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত এডিস মশা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই ব্যাকটেরিয়া মশার শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাসকে বেঁচে থাকতে দেয় না, ফলে ডেঙ্গু ছড়ানোর সম্ভাবনা কমে যায়। এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার মনাশ ইউনিভার্সিটির জিনতত্ত্ববিদ ড. স্কট ও’নিল। তিনি বলেন, “প্রথমবারের মতো আমরা একটি পরিবেশবান্ধব ও দীর্ঘমেয়াদি ডেঙ্গু প্রতিরোধ কৌশলের কাছাকাছি পৌঁছেছি।”
তবে এসব পদ্ধতি বাংলাদেশে চালু হতে সময় লাগবে। ততদিন আমাদের নিজেদের সচেতনতাই হতে হবে সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ।
বর্ষা প্রকৃতির আশীর্বাদ হলেও অবহেলা করলে সেটাই অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন শুধু একটি সিদ্ধান্ত—আমি পরিষ্কার থাকব, আমার চারপাশকে পরিষ্কার রাখব, সচেতন থাকব এবং অন্যদের সচেতন করব। বর্ষা তো আসবেই, তবে আমরা যদি প্রস্তুত থাকি, তবে ডেঙ্গু আর প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারবে না। জীবন বাঁচাতে হলে প্রতিরোধই হোক আমাদের অস্ত্র।
বাংলাদেশে বর্ষা যতটা সুগন্ধি মাটির ঘ্রাণ আর কাদামাটি নিয়ে আসে, ততটাই সঙ্গে করে নিয়ে আসে আতঙ্ক—ডেঙ্গুর আতঙ্ক। আষাঢ়-শ্রাবণ মানেই শুধু বৃষ্টি নয়, হাসপাতালের বেডে রোগীর ভিড়, জরুরি ওয়ার্ডে কাঁদতে থাকা আত্মীয়স্বজন, রক্তদানের আবেদন আর সবচেয়ে করুণ—অকালে প্রাণ হারানো অনেক মানুষ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ডেঙ্গু কি শুধুই বর্ষার রোগ? আর যদি তাই হয়, তবে কেন বর্ষাকালেই এই রোগ সবচেয়ে ভয়ংকর রূপ নেয়?
ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা মূলত 'এডিস ইজিপ্টাই' নামের মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এই মশাটি খুবই বিশেষভাবে অভিযোজিত—এটি দিনের বেলা কামড়ায়, সাধারণত সকাল ও বিকেলের দিকে। কিন্তু এর সবথেকে ভয়ংকর দিক হলো, এটি স্বচ্ছ ও জমে থাকা পানিতে ডিম পাড়ে। আর এখানেই বর্ষাকালের সঙ্গে ডেঙ্গুর সম্পর্কটা তৈরি হয়। বর্ষার বৃষ্টিতে চারপাশে জমে থাকা পানি, যেমন ফুলের টব, ছাদের কোণা, ড্রেনের ঢাকনা, ফ্রিজের নিচের ট্রে, ব্যবহৃত টায়ার কিংবা প্লাস্টিকের কৌটা—সবই হয়ে ওঠে ডেঙ্গুবাহী মশার প্রজননের উপযুক্ত জায়গা। এই পানি কিছুদিন জমে থাকলেই মশার বংশবৃদ্ধি হয় এবং তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (CDC)-এর সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. থমাস ব্রুকস বলেন, “বর্ষার সময়টায় এডিস মশার বংশবৃদ্ধির হার বেড়ে যায়। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব অঞ্চলে মশা নিধনে সচেতনতা কম, সেখানে বর্ষা এলেই ডেঙ্গুর বিস্তার ভয়াবহ হয়।” তাঁর মতে, শুধু চিকিৎসা নয়, প্রতিরোধই ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একমাত্র কার্যকর উপায়।
ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরন রয়েছে—DENV-1, DENV-2, DENV-3 ও DENV-4। একবার কোনো একটি ধরনে আক্রান্ত হলে সাধারণত সারা জীবনের জন্য ওই ধরনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। কিন্তু বিপদ অন্য জায়গায়। কেউ যদি একবার DENV-1-এ আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠে, পরবর্তীতে যদি DENV-2 বা অন্য কোনো ধরনে আক্রান্ত হয়, তবে সেই রোগীর ডেঙ্গু জটিল আকার নিতে পারে—যাকে বলা হয় 'সেকেন্ডারি ইনফেকশন'। তখন রক্তে প্লেটলেট দ্রুত কমে যায়, শরীরে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হতে পারে এবং মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলছে, “প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে আনুমানিক ১০০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে।” সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ গত এক দশকে ভয়াবহভাবে বেড়েছে, যার বড় কারণ নগরায়নের দুর্বল পরিকল্পনা, আবর্জনা ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা এবং সচেতনতার অভাব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্ষাকাল যতটা না ডেঙ্গুর একমাত্র কারণ, তার চেয়েও বড় কারণ হলো—আমাদের অবহেলা। ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে এখনো অনেক জায়গায় নির্মাণাধীন ভবনের নিচে পানি জমে থাকে, আবর্জনার স্তূপে প্লাস্টিকের কৌটা ও খালি বোতল পড়ে থাকে, যা মশার প্রজননের সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। অথচ এসব জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার রাখা গেলে বহু মৃত্যুকে ঠেকানো যেত।
অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ডের পরিবেশ স্বাস্থ্য গবেষক ড. মেলিসা বার্নার বলেন, “আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সংক্রামক রোগের প্রকোপও বদলাতে দেখছি। বর্ষায় তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বাড়ে, যা এডিস মশার জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে।” তাঁর গবেষণা অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এশিয়ার শহরগুলোতে ডেঙ্গুর প্রকোপ আগামী বছরগুলোতে আরও বাড়তে পারে, যদি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া হয়।
তবে কেবল গবেষণা আর তথ্য জেনে থেমে থাকলে চলবে না, জানতে হবে—কীভাবে এই রোগ থেকে বাঁচা যায়। চিকিৎসকেরা বলে থাকেন, ডেঙ্গুর এখনও নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই, অর্থাৎ ভাইরাসটি শরীরে ঢুকে গেলে শরীরকেই তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়। তবে সময়মতো রোগ শনাক্ত হলে ও উপযুক্ত চিকিৎসা পেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। ডেঙ্গু হলে সাধারণত প্রথম দিকে হঠাৎ করে উচ্চ জ্বর আসে, সঙ্গে মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, গা ও জয়েন্টে ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং গায়ে র্যাশ উঠতে পারে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
তবে রোগ হলে চিকিৎসা করা আর রোগ হওয়ার আগেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা—এই দুটি এক নয়। বর্ষাকালে ডেঙ্গুর ঝুঁকি এড়াতে হলে ব্যক্তিগত ও সামাজিক দুটি পর্যায়েই ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে আমরা কী করতে পারি? প্রথমত, ঘর ও আশপাশ পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি। কোথাও যেন পানি জমে না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। ফুলের টব, কুলার, ফ্রিজের নিচের ট্রে, এসির পানি নিস্কাশনের জায়গা—সবকিছু নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। ছাদে বা বারান্দায় যেন পানি জমে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ঘরের জানালা ও দরজায় মশার জাল লাগানো, রাতে মশারি ব্যবহার করা, দিনে বাইরে বের হলে ফুলহাতা জামা পরা এবং শরীরের খোলা অংশে মশার প্রতিরোধী ক্রিম ব্যবহার করাও জরুরি। শিশু ও বৃদ্ধদের বিশেষভাবে রক্ষা করতে হবে, কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকায় ডেঙ্গু তাদের জন্য মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।
এছাড়া সামাজিক পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মশা নিধনের ওষুধ ছিটানো, নর্দমা পরিষ্কার রাখা, সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালানো—এসব নিয়মিতভাবে করা উচিত। শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে যদি সঠিকভাবে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা যায়, তবে ডেঙ্গুর মতো রোগের বিস্তার অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন ডেঙ্গু প্রতিরোধে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে। যেমন ব্রাজিল ও অস্ট্রেলিয়ায় পরীক্ষামূলকভাবে ‘উলবাখিয়া’ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত এডিস মশা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই ব্যাকটেরিয়া মশার শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাসকে বেঁচে থাকতে দেয় না, ফলে ডেঙ্গু ছড়ানোর সম্ভাবনা কমে যায়। এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার মনাশ ইউনিভার্সিটির জিনতত্ত্ববিদ ড. স্কট ও’নিল। তিনি বলেন, “প্রথমবারের মতো আমরা একটি পরিবেশবান্ধব ও দীর্ঘমেয়াদি ডেঙ্গু প্রতিরোধ কৌশলের কাছাকাছি পৌঁছেছি।”
তবে এসব পদ্ধতি বাংলাদেশে চালু হতে সময় লাগবে। ততদিন আমাদের নিজেদের সচেতনতাই হতে হবে সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ।
বর্ষা প্রকৃতির আশীর্বাদ হলেও অবহেলা করলে সেটাই অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন শুধু একটি সিদ্ধান্ত—আমি পরিষ্কার থাকব, আমার চারপাশকে পরিষ্কার রাখব, সচেতন থাকব এবং অন্যদের সচেতন করব। বর্ষা তো আসবেই, তবে আমরা যদি প্রস্তুত থাকি, তবে ডেঙ্গু আর প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারবে না। জীবন বাঁচাতে হলে প্রতিরোধই হোক আমাদের অস্ত্র।
বাংলা চলচ্চিত্রের ‘মমতাময়ী মা’ খ্যাত কিংবদন্তি অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগম সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’-এ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সম্মাননা স্মারক গ্রহণের পর কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। নিজের দীর্ঘ অভিনয়জীবনের নানা স্মৃ
২১ ঘণ্টা আগেনিজের ফেসবুক পেজে কানাডার মনট্রিয়েল শহরে তোলা কিছু ছবি শেয়ার করেন মেহজাবীন। ছবিগুলোতে বেশ হাসিখুশি, প্রাণবন্ত দেখা গেছে তাকে। পর্দার ‘মালতী’ চরিত্রে দর্শকদের মন জয় করা এই অভিনেত্রীর ছবিতে মন্তব্য জানাতে থাকেন তার ভক্ত-অনুরাগীরা। এর মাঝেই একজন নেটিজেন চরম রকমের কটাক্ষ করে বসেন। মন্তব্যে লেখেন, ‘২ বছ
১ দিন আগেএবারের সময়টা যেন শুধু মা-মেয়ের। তেমনই দেখা গেল মিথিলার স্টোরিতে দেওয়া ছোট এক ভিডিওতে। ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, মায়ের পাশে বসে ইংরেজি গান গাইছে আইরা। আর তাতে গিটার সঙ্গত করছেন মা মিথিলা।
১ দিন আগেসংবাদমাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়—‘স্যার’ বা ‘ম্যাডাম’ না বলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা ইউএনও'র সঙ্গে সাংবাদিক, ব্যবসায়ী বা সাধারণ মানুষের তর্ক-বিতর্ক, এমনকি দুর্ব্যবহার বা মারধরের ঘটনাও ঘটে। গুগলে ‘স্যার না বলায়’ লিখে খুঁজলেই এমন শত শত খবর পাওয়া যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ইউএনওকে স্যার না বলা
১ দিন আগে