ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
হঠাৎ করে শরীরের ওজন কমে যাচ্ছে। আগের মতো গায়ে মাংস নেই, চেহারাও কেমন যেন কাহিল দেখাচ্ছে। গালে টোল পড়েছে, পাঁজর গোনা যায়। অনেকেই ভাবেন, হয়তো বেশি পরিশ্রমের কারণে এমন হচ্ছে বা খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম চলছে। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলেন, এই ধরনের শুকিয়ে যাওয়া শরীরের পিছনে লুকিয়ে থাকতে পারে ভিটামিন ঘাটতির একটি বড় কারণ—তা হলো ভিটামিন বি১ বা থায়ামিন-এর অভাব।
থায়ামিন শরীরের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জলীয়-দ্রবণীয় ভিটামিন। এটি মূলত খাবার থেকে শক্তি উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়। খাদ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেটকে গ্লুকোজে রূপান্তর করে শরীরের কাজে লাগাতে সাহায্য করে থায়ামিন। আর সেই গ্লুকোজই হলো আমাদের দেহের প্রধান জ্বালানি। এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে শরীর ঠিকভাবে শক্তি উৎপাদন করতে পারে না। ফলে মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে, দ্রুত ক্লান্ত হয় এবং ওজন কমতে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ (NIH)-এর গবেষক ড. মলি ম্যাথিউস-রডজার্স বলেন, "থায়ামিনের ঘাটতি দীর্ঘস্থায়ী হলে একদিকে যেমন মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যায়, অন্যদিকে মানসিক দিক থেকেও সমস্যা দেখা দেয়।" তাঁর মতে, থায়ামিন শুধু শরীরের শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে না, এটি স্নায়ুতন্ত্র, হৃদপিণ্ড এবং মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যকলাপ বজায় রাখতেও জরুরি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, যেসব দেশে প্রধান খাদ্য চাল বা পরিশোধিত শস্য, সেখানে থায়ামিন ঘাটতির সমস্যা বেশি দেখা যায়। কারণ চাল ছেঁটে ফেলার সময় ভিটামিন বি১-এর অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে মানুষের অনেকেই অতিরিক্ত ধোয়া বা ছাঁকা চাল খায়, সেখানে এই সমস্যা অপ্রত্যাশিত নয়।
ভিটামিন বি১-এর অভাবজনিত রোগের নাম বেরিবেরি। এই রোগে শরীর এমনভাবে ক্ষয় হতে শুরু করে যে রোগী দাড়াতেই পারে না, হাঁটতে গেলে লেজে-গোবরে পড়ে যায়। হাত-পা অবশ হয়ে আসে। কখনো আবার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া ব্যাহত হয়। দুই ধরনের বেরিবেরি রয়েছে—‘ড্রাই’ বেরিবেরি এবং ‘ওয়েট’ বেরিবেরি। ড্রাই বেরিবেরি হলে মূলত স্নায়ুর সমস্যা হয় এবং মানুষ দুর্বল ও রুগ্ন হয়ে পড়ে, শরীর শুকিয়ে যায়। আর ওয়েট বেরিবেরিতে হৃদযন্ত্র ও রক্তপ্রবাহে সমস্যা দেখা দেয়।
কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিজ্ঞানী ড. ক্লেয়ার হাডসন বলেন, "অনেক সময় দেখা যায়, রোগী ক্যান্সার বা টিবি (যক্ষ্মা) হয়েছে ভেবে আতঙ্কিত হচ্ছে। অথচ সমস্যা ছিল থায়ামিনের ঘাটতিতে। একটু সচেতন হলেই এই ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে আবার স্বাভাবিক শরীরের দিকে ফেরা যায়।"
অনেক সময় দীর্ঘদিন না খেয়ে থাকা বা অস্বাস্থ্যকর ডায়েট করার কারণেও থায়ামিনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যাঁরা শুধুমাত্র ফল বা তরলজাতীয় খাবার খেয়ে ওজন কমানোর চেষ্টা করেন, তাঁদের মধ্যে এই ঘাটতির ঝুঁকি বেশি। আবার মদ্যপান যারা করে, তাদের শরীরে থায়ামিন শোষণ ব্যাহত হয়। ফলে তারা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে।
এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ডায়রিয়া হলে, অন্ত্রের অসুখ থাকলে বা প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত ভিটামিন বেরিয়ে গেলে থায়ামিনের ঘাটতি তৈরি হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এটি ধরা পড়ে না, কারণ আমরা সাধারণত শরীর শুকিয়ে যাওয়াকে আলাদা করে গুরুত্ব দিই না।
ভাগ্য ভালো যে থায়ামিন সহজলভ্য অনেক খাবারে পাওয়া যায়। যেমন—লাল চাল, গমের আটা, ডাল, শিম, বাদাম, সূর্যমুখীর বীজ, কলা, কমলা, ডিম, মাংস এবং বিশেষ করে পশুর কলিজা। এগুলো নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে এই ভিটামিনের ঘাটতি সহজেই রোধ করা যায়। তবে দীর্ঘদিন ঘাটতি থাকলে ওজন স্বাভাবিক করতে অনেক সময় লাগে।
অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সিডনির জনস্বাস্থ্য গবেষক ড. অলিভিয়া হ্যান্টার বলেন, "শুধু থায়ামিন নয়, ভিটামিন বি গ্রুপের যেকোনো একটি অনুপস্থিত থাকলে শরীর নানা উপসর্গ দেখাতে শুরু করে—দেহ শুকিয়ে যাওয়া তার মধ্যে অন্যতম। পুষ্টি একটি সামগ্রিক চিত্র, কোনো একটি উপাদান বাদ গেলেই শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়।"
তাঁর মতে, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে যদি দেখা যায় শরীরে ভিটামিন বি১-এর মাত্রা কম, তবে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট নেওয়া উচিত। অনেক সময় মুখে খাওয়ার সাপ্লিমেন্ট যথেষ্ট নয়, ইনজেকশন বা ইনট্রাভেনাস থায়ামিন দিতে হয়।
সবশেষে, আমাদের জীবনযাপনে সচেতনতা জরুরি। শরীর শুকিয়ে যাচ্ছে মানেই রোগ হচ্ছে—এমনটি ভাবা উচিত নয়। বরং, কেন এমন হচ্ছে, তার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। অনেক সময় একটি সামান্য ভিটামিনের অভাবই আমাদের শরীরে বড়সড় সংকট তৈরি করতে পারে। একটু পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, নিজের ওজন ও শক্তি পর্যবেক্ষণ করা, আর প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াই হতে পারে সুস্থ জীবনের পথ।
শরীরের ভেতরের শক্তির বাতি নিভে যাওয়ার আগেই তা জ্বালিয়ে তোলাই বুদ্ধিমানের কাজ। আর সেই শক্তির অন্যতম উৎস এই ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন—থায়ামিন।
হঠাৎ করে শরীরের ওজন কমে যাচ্ছে। আগের মতো গায়ে মাংস নেই, চেহারাও কেমন যেন কাহিল দেখাচ্ছে। গালে টোল পড়েছে, পাঁজর গোনা যায়। অনেকেই ভাবেন, হয়তো বেশি পরিশ্রমের কারণে এমন হচ্ছে বা খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম চলছে। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলেন, এই ধরনের শুকিয়ে যাওয়া শরীরের পিছনে লুকিয়ে থাকতে পারে ভিটামিন ঘাটতির একটি বড় কারণ—তা হলো ভিটামিন বি১ বা থায়ামিন-এর অভাব।
থায়ামিন শরীরের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জলীয়-দ্রবণীয় ভিটামিন। এটি মূলত খাবার থেকে শক্তি উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়। খাদ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেটকে গ্লুকোজে রূপান্তর করে শরীরের কাজে লাগাতে সাহায্য করে থায়ামিন। আর সেই গ্লুকোজই হলো আমাদের দেহের প্রধান জ্বালানি। এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে শরীর ঠিকভাবে শক্তি উৎপাদন করতে পারে না। ফলে মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে, দ্রুত ক্লান্ত হয় এবং ওজন কমতে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ (NIH)-এর গবেষক ড. মলি ম্যাথিউস-রডজার্স বলেন, "থায়ামিনের ঘাটতি দীর্ঘস্থায়ী হলে একদিকে যেমন মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যায়, অন্যদিকে মানসিক দিক থেকেও সমস্যা দেখা দেয়।" তাঁর মতে, থায়ামিন শুধু শরীরের শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে না, এটি স্নায়ুতন্ত্র, হৃদপিণ্ড এবং মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যকলাপ বজায় রাখতেও জরুরি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, যেসব দেশে প্রধান খাদ্য চাল বা পরিশোধিত শস্য, সেখানে থায়ামিন ঘাটতির সমস্যা বেশি দেখা যায়। কারণ চাল ছেঁটে ফেলার সময় ভিটামিন বি১-এর অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে মানুষের অনেকেই অতিরিক্ত ধোয়া বা ছাঁকা চাল খায়, সেখানে এই সমস্যা অপ্রত্যাশিত নয়।
ভিটামিন বি১-এর অভাবজনিত রোগের নাম বেরিবেরি। এই রোগে শরীর এমনভাবে ক্ষয় হতে শুরু করে যে রোগী দাড়াতেই পারে না, হাঁটতে গেলে লেজে-গোবরে পড়ে যায়। হাত-পা অবশ হয়ে আসে। কখনো আবার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া ব্যাহত হয়। দুই ধরনের বেরিবেরি রয়েছে—‘ড্রাই’ বেরিবেরি এবং ‘ওয়েট’ বেরিবেরি। ড্রাই বেরিবেরি হলে মূলত স্নায়ুর সমস্যা হয় এবং মানুষ দুর্বল ও রুগ্ন হয়ে পড়ে, শরীর শুকিয়ে যায়। আর ওয়েট বেরিবেরিতে হৃদযন্ত্র ও রক্তপ্রবাহে সমস্যা দেখা দেয়।
কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিজ্ঞানী ড. ক্লেয়ার হাডসন বলেন, "অনেক সময় দেখা যায়, রোগী ক্যান্সার বা টিবি (যক্ষ্মা) হয়েছে ভেবে আতঙ্কিত হচ্ছে। অথচ সমস্যা ছিল থায়ামিনের ঘাটতিতে। একটু সচেতন হলেই এই ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে আবার স্বাভাবিক শরীরের দিকে ফেরা যায়।"
অনেক সময় দীর্ঘদিন না খেয়ে থাকা বা অস্বাস্থ্যকর ডায়েট করার কারণেও থায়ামিনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যাঁরা শুধুমাত্র ফল বা তরলজাতীয় খাবার খেয়ে ওজন কমানোর চেষ্টা করেন, তাঁদের মধ্যে এই ঘাটতির ঝুঁকি বেশি। আবার মদ্যপান যারা করে, তাদের শরীরে থায়ামিন শোষণ ব্যাহত হয়। ফলে তারা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে।
এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ডায়রিয়া হলে, অন্ত্রের অসুখ থাকলে বা প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত ভিটামিন বেরিয়ে গেলে থায়ামিনের ঘাটতি তৈরি হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এটি ধরা পড়ে না, কারণ আমরা সাধারণত শরীর শুকিয়ে যাওয়াকে আলাদা করে গুরুত্ব দিই না।
ভাগ্য ভালো যে থায়ামিন সহজলভ্য অনেক খাবারে পাওয়া যায়। যেমন—লাল চাল, গমের আটা, ডাল, শিম, বাদাম, সূর্যমুখীর বীজ, কলা, কমলা, ডিম, মাংস এবং বিশেষ করে পশুর কলিজা। এগুলো নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে এই ভিটামিনের ঘাটতি সহজেই রোধ করা যায়। তবে দীর্ঘদিন ঘাটতি থাকলে ওজন স্বাভাবিক করতে অনেক সময় লাগে।
অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সিডনির জনস্বাস্থ্য গবেষক ড. অলিভিয়া হ্যান্টার বলেন, "শুধু থায়ামিন নয়, ভিটামিন বি গ্রুপের যেকোনো একটি অনুপস্থিত থাকলে শরীর নানা উপসর্গ দেখাতে শুরু করে—দেহ শুকিয়ে যাওয়া তার মধ্যে অন্যতম। পুষ্টি একটি সামগ্রিক চিত্র, কোনো একটি উপাদান বাদ গেলেই শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়।"
তাঁর মতে, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে যদি দেখা যায় শরীরে ভিটামিন বি১-এর মাত্রা কম, তবে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট নেওয়া উচিত। অনেক সময় মুখে খাওয়ার সাপ্লিমেন্ট যথেষ্ট নয়, ইনজেকশন বা ইনট্রাভেনাস থায়ামিন দিতে হয়।
সবশেষে, আমাদের জীবনযাপনে সচেতনতা জরুরি। শরীর শুকিয়ে যাচ্ছে মানেই রোগ হচ্ছে—এমনটি ভাবা উচিত নয়। বরং, কেন এমন হচ্ছে, তার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। অনেক সময় একটি সামান্য ভিটামিনের অভাবই আমাদের শরীরে বড়সড় সংকট তৈরি করতে পারে। একটু পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, নিজের ওজন ও শক্তি পর্যবেক্ষণ করা, আর প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াই হতে পারে সুস্থ জীবনের পথ।
শরীরের ভেতরের শক্তির বাতি নিভে যাওয়ার আগেই তা জ্বালিয়ে তোলাই বুদ্ধিমানের কাজ। আর সেই শক্তির অন্যতম উৎস এই ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন—থায়ামিন।
বাংলাদেশে ই-গভর্নেন্স কেবল প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনার নাম নয়। এটি একটি রাষ্ট্রচিন্তার রূপান্তর, যেখানে সেবাপ্রাপ্তির ন্যায্যতা নিশ্চিত হয় ডিজিটাল মাধ্যমে। এ প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধী এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
১ দিন আগেইসবগুলের আরেকটি উল্লেখযোগ্য গুণ হলো, এটি অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য রক্ষা করে। অন্ত্রে যে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া থাকে, তাদের পুষ্টি জোগাতে সহায়তা করে ইসবগুলের আঁশ। ফলে অন্ত্রের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
১ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিবার এবার স্মার্টফোন ব্যবসায় নামছে। ট্রাম্প অর্গানাইজেশন সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে, তারা ‘যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত’ দাবি করা একটি সোনালি রঙের স্মার্টফোন বাজারে আনছে, যার মূল্য ধরা হয়েছে ৪৯৯ ডলার। ফোনটির সঙ্গে থাকবে মাসিক ৪৭.৪৫ ডলারের একটি পরিষেবা ফি— যা ট্রাম্
২ দিন আগে