অরুণ কুমার
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তখন হুগলির জাঙ্গিপাড়ার দারাকানাথ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। কিন্তু প্ল্যানচেট করেন নিয়মিত। প্লেনচ্যাট বিজ্ঞানসম্মত নয়। তবু বিভূতিভূষণ প্রেতচর্চা করতেন। কেন করেতন কীভাবে করতেন, ইতিহাস জানতে গেলে, সব ‘কেন’র উত্তর না-ও মিলতে পারে। কিন্তু আমার সে সব ঘাঁটব না। শুধু গল্পটা জানব।
বিভূতিভুষণ কথায় কথায় একদিন ত্রিপুরাবাবু নামের এক বয়স্ক লোকের কাছে বলে ফেলেন নিজের প্রেতচর্চার কথা। আর যাবে কোথায়? তিনি চেপে ধরলেন। এরপর সারা গ্রামে মুখর হয়ে পড়ল। শুরু হলো নিয়মিত প্ল্যানচেটের আসর, মৃত মানুষদের আত্মা নামিয়ে তাদের কাছ থেকে কথা আদায় ইত্যাদি। প্রথম দিকে গ্রামের ছেলেবুড়োর বেশ আমোদ পেল ব্যাপারটাতে। কিন্তু এতে নাকি ছেলেদের পড়ানোর ব্যাপারে দিন দিন উদাসী হয়ে পড়েছিলেন। গ্রামের মানুষ দুভাগে বিভক্ত হলো।
একদল বিভূতিভূষণের প্রেতচর্চার ব্যাপারটাতে কোনো সমস্যা দেখেন না। আরেকদল মনে করেন তিনি এ কাজটি ভালো করছেন না। বিশেষ করে গাঁয়ের শিক্ষিত তরুণেরা। বাংলাদেশের পল্লী এমনিতেই কুসংস্কারে নিমজ্জিত, এর মধ্যে একজন শিক্ষিত শিক্ষক যদি ভূত-প্রেতের চর্চা করেন, তাহলে কুংস্কার আরও ডালপালা মেলবে। থেমে যাবে কুসংস্কারবিরোধী আন্দোলন। এই দুই পক্ষের টানাটানিতে তৃতীয় আরেক পক্ষ হাজির।
গ্রামে বাস করেছেন ভিলেজ পলেটিক্সের শিকার হননি, এমন মানুষ পাওয়া মুশিকল। তা সে আপনি যতই পলেটিক্স এড়িয়ে চলুন না কেন। স্কুলের তৎকালীন হেড মাস্টার চেয়েছিলেন, তাঁর অবসরের পরে বিভূতিই হবেন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু ভেতরে-ভেতরে প্রতিদ্বন্দ্বী একজন ছিলেন। তিনি সে গাঁয়েরই লোক। সুযোগে ছিলেন বিভূতিভূষণকে হেনস্তা করার। মওকা মিলে গেল তাঁর। প্রেতচর্চাবিরোধীদের খেপিয়ে তুললেন। শেষমেষ অভিযোগ গেল মহকুমা সদরে। শিক্ষাকর্মকর্তা, মহাকুমা প্রশাসকেরা ভালোভাবে নিলেন না ব্যাপারটা। একজন পরিদর্শককে পাঠালেন ব্যাপারটা সরেজমিনে তদন্ত করতে।
পরিদর্শক ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষত একজন যুক্তিবাদী মানুষ। বিভূতিভূষণকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনিও কম যান। হ্যাঁ, তখনো বিভূতিভূষণের কোনো বইপত্র বের হয়নি। একটা গল্পও ছাপা হয়নি কোথাও। কিন্তু ভেতরের শিক্ষার যুক্তিটা তো ততদিনে জাগ্রত হয়েছে। প্রচুর বই পড়েন, দেশি-বিদেশি। বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগলো প্রচণ্ড দখল। আর পড়েন লন্ডনের বিখ্যাত স্পিরিচুয়াল ম্যাগাজিন। বিশ্বের তাবড়-তাবড় মনিষিদের ভৌতিক অভিজ্ঞতা ছাপা হয়। বড় বড় মানুষেরা লেখেন ভূত-প্রেতের পক্ষে। বিভূতিভূষণও ততদিনে ভিড়ে গেছেন সেই দলে। সুতরাং তাঁর খুঁটি অতটা নড়বড়ে নয়। তিনি তর্কে কুপোকাৎ করলেন ইনসপেক্টরকে। তারপরে প্রমাণ দেখালেন তাঁকে। ইনপেক্টরের আত্মীয়ের আত্মা নামিয়ে প্রমাণ দিলেন, তিনিই ঠিক।
ইনসপেক্টরকে ভোলানো গেল সহজেই। কিন্তু ওপর মহল ভুলল না। তাঁকে সরিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীকেই প্রধান শিক্ষক করা হলো। এমনকী বিভূতিভূষণকে স্কুলছাড়া, গ্রামছড়ার সমস্ত আয়োজন করা হলো।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তখন হুগলির জাঙ্গিপাড়ার দারাকানাথ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। কিন্তু প্ল্যানচেট করেন নিয়মিত। প্লেনচ্যাট বিজ্ঞানসম্মত নয়। তবু বিভূতিভূষণ প্রেতচর্চা করতেন। কেন করেতন কীভাবে করতেন, ইতিহাস জানতে গেলে, সব ‘কেন’র উত্তর না-ও মিলতে পারে। কিন্তু আমার সে সব ঘাঁটব না। শুধু গল্পটা জানব।
বিভূতিভুষণ কথায় কথায় একদিন ত্রিপুরাবাবু নামের এক বয়স্ক লোকের কাছে বলে ফেলেন নিজের প্রেতচর্চার কথা। আর যাবে কোথায়? তিনি চেপে ধরলেন। এরপর সারা গ্রামে মুখর হয়ে পড়ল। শুরু হলো নিয়মিত প্ল্যানচেটের আসর, মৃত মানুষদের আত্মা নামিয়ে তাদের কাছ থেকে কথা আদায় ইত্যাদি। প্রথম দিকে গ্রামের ছেলেবুড়োর বেশ আমোদ পেল ব্যাপারটাতে। কিন্তু এতে নাকি ছেলেদের পড়ানোর ব্যাপারে দিন দিন উদাসী হয়ে পড়েছিলেন। গ্রামের মানুষ দুভাগে বিভক্ত হলো।
একদল বিভূতিভূষণের প্রেতচর্চার ব্যাপারটাতে কোনো সমস্যা দেখেন না। আরেকদল মনে করেন তিনি এ কাজটি ভালো করছেন না। বিশেষ করে গাঁয়ের শিক্ষিত তরুণেরা। বাংলাদেশের পল্লী এমনিতেই কুসংস্কারে নিমজ্জিত, এর মধ্যে একজন শিক্ষিত শিক্ষক যদি ভূত-প্রেতের চর্চা করেন, তাহলে কুংস্কার আরও ডালপালা মেলবে। থেমে যাবে কুসংস্কারবিরোধী আন্দোলন। এই দুই পক্ষের টানাটানিতে তৃতীয় আরেক পক্ষ হাজির।
গ্রামে বাস করেছেন ভিলেজ পলেটিক্সের শিকার হননি, এমন মানুষ পাওয়া মুশিকল। তা সে আপনি যতই পলেটিক্স এড়িয়ে চলুন না কেন। স্কুলের তৎকালীন হেড মাস্টার চেয়েছিলেন, তাঁর অবসরের পরে বিভূতিই হবেন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু ভেতরে-ভেতরে প্রতিদ্বন্দ্বী একজন ছিলেন। তিনি সে গাঁয়েরই লোক। সুযোগে ছিলেন বিভূতিভূষণকে হেনস্তা করার। মওকা মিলে গেল তাঁর। প্রেতচর্চাবিরোধীদের খেপিয়ে তুললেন। শেষমেষ অভিযোগ গেল মহকুমা সদরে। শিক্ষাকর্মকর্তা, মহাকুমা প্রশাসকেরা ভালোভাবে নিলেন না ব্যাপারটা। একজন পরিদর্শককে পাঠালেন ব্যাপারটা সরেজমিনে তদন্ত করতে।
পরিদর্শক ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষত একজন যুক্তিবাদী মানুষ। বিভূতিভূষণকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনিও কম যান। হ্যাঁ, তখনো বিভূতিভূষণের কোনো বইপত্র বের হয়নি। একটা গল্পও ছাপা হয়নি কোথাও। কিন্তু ভেতরের শিক্ষার যুক্তিটা তো ততদিনে জাগ্রত হয়েছে। প্রচুর বই পড়েন, দেশি-বিদেশি। বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগলো প্রচণ্ড দখল। আর পড়েন লন্ডনের বিখ্যাত স্পিরিচুয়াল ম্যাগাজিন। বিশ্বের তাবড়-তাবড় মনিষিদের ভৌতিক অভিজ্ঞতা ছাপা হয়। বড় বড় মানুষেরা লেখেন ভূত-প্রেতের পক্ষে। বিভূতিভূষণও ততদিনে ভিড়ে গেছেন সেই দলে। সুতরাং তাঁর খুঁটি অতটা নড়বড়ে নয়। তিনি তর্কে কুপোকাৎ করলেন ইনসপেক্টরকে। তারপরে প্রমাণ দেখালেন তাঁকে। ইনপেক্টরের আত্মীয়ের আত্মা নামিয়ে প্রমাণ দিলেন, তিনিই ঠিক।
ইনসপেক্টরকে ভোলানো গেল সহজেই। কিন্তু ওপর মহল ভুলল না। তাঁকে সরিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীকেই প্রধান শিক্ষক করা হলো। এমনকী বিভূতিভূষণকে স্কুলছাড়া, গ্রামছড়ার সমস্ত আয়োজন করা হলো।
আবহাওয়াবিদদের ভাষায় নিম্নচাপ হলো একটি এমন আবহাওয়াগত পরিস্থিতি যেখানে বাতাসের চাপ চারপাশের তুলনায় কম হয়ে যায়। সাধারণত পৃথিবীর যেকোনো স্থানে বাতাস সবসময় উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে প্রবাহিত হয়।
২০ ঘণ্টা আগেইংল্যান্ডের সিংহাসন তখন ছিল এক জটিল রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কেন্দ্র। ইংরেজ রাজা এডওয়ার্ড দ্য কনফেসর ১০৬৬ সালের জানুয়ারিতে উত্তরাধিকারী ছাড়াই মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াল—কে ইংল্যান্ডের নতুন রাজা হবেন? রাজ্যের প্রধান অভিজাতেরা হ্যারল্ড গডউইনসনকে রাজা ঘোষণা করলেন।
১ দিন আগেসকালে ঘুম থেকে উঠেই অনেকেই অভ্যাস বশে এক গ্লাস লেবু পানি খান। বিজ্ঞাপন আর স্বাস্থ্যবিষয়ক ম্যাগাজিনে এমন ধারণা ছড়িয়ে গেছে যে খালি পেটে লেবু খেলে শরীরের টক্সিন বের হয়ে যায়, ওজন কমে, আবার হজমশক্তিও নাকি বাড়ে। কিন্তু আসলেই কি খালি পেটে লেবু খাওয়া এতটা উপকারী? বিজ্ঞানীরা বলছেন, লেবুর কিছু ভালো দিক
১ দিন আগে