আইনশৃঙ্খলা চ্যালেঞ্জিং হলেও নির্বাচন সম্ভব: সিইসি

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৫, ১৫: ২৫

মব বা দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ থাকলেও নির্বাচন করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

রবিবার (১৩ জুলাই) এই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করে বিবিসি।

সাক্ষাৎকারে তিনি মব বা দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ এবং নিজের নিরপেক্ষতার প্রশ্নেও জবাব দিয়েছেন। তাছাড়া, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নিতে পারা না পারার বিষয়ে কথা বলেন তিনি।

নির্বাচন কবে হবে, এই প্রশ্নে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ইটস ভেরি ডিফিকাল্ট ফর মি টু রেসপন্ড, বিকজ আই মাইসেলফ ওন্ট নো এক্স্যাক্ট ডেট (সুনির্দিষ্ট তারিখ)। পোলিং ডেটটা জানি না। এপ্রিলে ফার্স্ট হাফে (প্রথমার্ধে) বলা হচ্ছে। দ্যাট কাইন্ড অফ থিং, উইল বি কমিউনিকেট টু আস, উইথ সাম আইডিয়া দ্যাট- প্লিজ গো এহেড- দিস ইজ দ্য রেঞ্জ।’

কখন ভোট হতে পারে। সরকার এ সম্পর্কে কি কিছু জানিয়েছেন? এই প্রশ্নের জবাবে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আপনি যেমন জানেন, আমিও তেমনি জানি যে আইদার ফেব্রুয়ারি, মানে রমজান মাসের আগে অথবা এপ্রিলে। যেটা সব সময় উনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলে আসছেন। সেটাই জানি, যেটা আপনি জানেন- দেশবাসী জানে, ওনার বক্তব্য থেকে। সেটা আমিও জানি।’

সরকার থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আইনশৃঙ্খলা-রক্ষাকারী বাহিনীকে তারা প্রস্তুত হতে বলেছেন, সরকার আপনাদের কিছু বলেননি যে কবে নির্বাচন হতে পারে বা কোন সময়ের মধ্যে ভোট হতে পারে? এই প্রশ্নে সিইসি বলেন ‘না সেরকম বলে নাই। আমরা ধরে নিচ্ছি, ইট ইজ আওয়ার অ্যাসাম্পশন (আমাদের ধারণা) যে বর্তমানে যে টাইম ফ্রেম বলা হচ্ছে, আইদার আর্লি ফেব্রুয়ারি বিফোর রমাদান, অর ইট মে বি সাম টাইম ইন দ্য ফার্স্ট হাফ অব এপ্রিল। হতে পারে, এপ্রিলের প্রথম দিকে হতে পারে।’

আমরা প্রথম থেকেই ডিসেম্বরকে টার্গেট করে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কারণ তখন তিনি ডিসেম্বর টু জুন বলেছিলেন। এজন্য আমরা ডিসেম্বরকে টার্গেট করে- ফ্রম ডে ওয়ান উই স্টার্টেড প্রিপেয়ারিং আওয়ারসেলভ।

দায়িত্ব গ্রহণের সময় নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে কোনো ধারণা দেওয়া হয়েছিল? এ প্রসঙ্গে নাসির উদ্দিন বালেন, ‘না দেওয়া হয় নাই। বাট আমি ধরে নিয়েছি যে ইলেকশন তো একটা হবে। আমি প্রথমে আমার অফিসারদের সাথে বসেছি, যে-একটা ইলেকশন করতে গেলে কী কী দরকার, কী কী কাজ আমাদেরকে করতে হবে, কী কী কাজ বাকি আছে। উনারা আমাদের একটা চার্ট করে দেবেন এবং কোন কাজ করতে কতদিন লাগে সেটা দেবেন। তখন তো আমরা জানি না ডিসেম্বর বা অন্য কোনো টাইমলাইন তো তখনও আসে নাই।’

নির্বাচন নিয়ে সরকার আপনাদের সঙ্গে আলোচনা বা কিছু বলছে কি-না? এ প্রসঙ্গে সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে সরকারের কাছ থেকে কোনো গাইডেন্সও নাই, পরামর্শও নাই, আদেশও নাই, নির্দেশও নাই, নাথিং। আমরা অ্যাবসোলিউটলি ইন্ডিপেনডেন্টলি এই প্রস্তুতি নিচ্ছি।

একবার সৌজন্য সাক্ষাতে উনি জানতে চেয়েছেন যে আমাদের প্রিপারেশনের অবস্থা কী, স্ট্যাটাসটা কী, আমরা কতদূর এগিয়েছি, প্রস্তুত কী রকম। আমি উনাকে ডিটেইল জানিয়েছি আমি কী কী করেছি, কী কী করতেছি, কী কী বাকি আছে বা আমাদের টাইমলাইনটা কী, কখন আমরা শেষ করতে পারবো। আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কিত একটা ব্রিফ (ধারণা) ওনাকে (প্রধান উপদেষ্টাকে) আমি দিয়েছি। আমি মনে করলাম উনার কাছ থেকে ডেট নিয়ে আমার কাছে অ্যাডভাইজাবেল হবে না। সে জন্য টাইম নিয়ে কিছু বলি নাই। টাইম নিয়ে তো উনি ওপেনলি, পাবলিকলি বলতেছেন। উনার পাবলিক স্টেটমেন্ট থেকে যেটুকু আপনারা জানেন, সেটুকু আমিও জানি স্পেসিফিক ডেট সম্পর্কে।’

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সম্পূর্ণ প্রস্তুত। যদি হয় আমাদের তরফ থেকে আমরা প্রস্তুত। আমরা ওভাবে করতে চাই, উনারা যে তারিখে পোলিং ডেট চান, যেদিন ভোট হয়, সেদিন যাতে আমরা একটা ফ্রি ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল ইলেকশন জাতিকে উপহার দিতে পারি, সেই লক্ষ্যেই আমরা প্রস্তুতিটা নিচ্ছি।’

নির্বাচন করার পরিবেশ নিয়ে সিইসি বলেন, ‘অ্যাকচুয়ালি রাজনীবিদদের বক্তব্যের বিষয়ে আমরা গাইডেড না। রাজনীতিকরা নানা ধরনের কথাবার্তা বলে। কোনো কোনো দল ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা বলে, পরে আবার ব্যাক ট্র্যাক করে বলছে যে সংস্কারের আগে ভোট হতে পারবে না। নানা ধরনের কথা বলে। এইটা হলো রাজনৈতিক বক্তব্য।’

আইনশৃঙ্খলার নাজুক পরিস্থিতি, মব ভায়োলেন্স বা দলবদ্ধ সহিংসতা মাঝে নির্বাচন করা চ্যালেঞ্জিং হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাট ইট ইজ পসিবল। চ্যালেঞ্জিং, কারণ এখন তো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অগাস্টে যা দেখছিলাম বা গত বছরের আটই অগাস্টে যা দেখছিলাম অনেক ইম্প্রুভ করে গেছে না? অনেক ইম্প্রুভ করছে।

ধরেন নির্বাচন যখন হবে, তখন ওই সময়ের মধ্যে দেখবেন যে সব কিছু শান্ত, অসুবিধা হবে না। বিশেষ করে প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল ছোট হোক বড় হোক, তারা কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে আসছে প্রথম থেকেই। কেউ বলে নাই যে আমি আগের মতো নির্বাচন চাই। জনগণ যদি আপনার সাথে থাকে, কোনো রকমের কোনো মব বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আপনাকে তো ক্ষতি করতে পারবে না।

আমি কনফিডেন্ট যে ইলেকশন যখন হবে, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব ব্রিফিং দিয়েছেন। শুধু পুলিশকে নয়, উনি তো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আর্মি থেকে আরম্ভ করে, আর্মি কীভাবে ডেপ্লয়মেন্ট হবে, বিজিবি কীভাবে হবে ইত্যাদি নানাবিধ প্রশ্ন করেছেন।

এই চ্যালেঞ্জেসগুলো সামনে রেখে কিন্তু সরকারের যেমন তার নিজস্ব প্রস্তুতি চলছে, আমাদেরও কিন্তু একই রকম প্রস্তুতি চলছে। এই সব চ্যালেঞ্জগুলো কিন্তু আমাদের মাথায়ও আছে। এগুলো অ্যাড্রেস করার জন্য আমরা প্রস্তুত। সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নেব। আমি মনে করি যে নির্বাচনের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি, একটা ফ্রি ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল ইলেকশন, সেটার জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নট বি প্রবলেম, আমি মনে করি।’

আওয়ামী লীগ প্রশ্নে ইসির অবস্থান

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বিচার শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করেছে সরকার, তার অর্থ কি নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না তারা? এ প্রসঙ্গে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘উনাদের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত। যদি বিচার শেষ হয়, যদি শাস্তি না দেওয়া হয়, নিষেধাজ্ঞা দেওয়া না হয়; সরকারের যে সিদ্ধান্ত সে অনুযায়ী তাদের রেজিস্ট্রেশন রাখাই তো মিনিংলেস হয়ে যায়। তারা কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে পারবে না। এ জন্য আমরাও রেজিস্ট্রেশন স্থগিত করে দিয়েছি।’

আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে তখন নির্বাচন অন্তর্ভূক্তিমূলক হলো কি-না, এই প্রশ্নে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সে প্রশ্ন তো উঠতেই পারে, স্বাভাবিক। আমাদের চিন্তা হলো- যারা ভোটারস আছে, পার্টিসিপেন্টস অব ভোটার, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে চাই। এখন ইনক্লুসিভের ডেফিনিশন তো একেকজনের কাছে একেক রকম।’

আওয়ামী লীগের সমর্থকগোষ্ঠী কি ভোটে আসবে, এ প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমি তো আশা করি তারা আসবে। এদের সমর্থকগোষ্ঠী আছে তো। তারা যে একেবারেই আসবে না এটা আমরা মনে করি না। লার্জ নম্বর অফ দেম পার্টিসিপেট ইন দ্য ইলেকশন, নট অ্যাজ অ্যা ক্যান্ডিডেট, বাট অ্যাজ এ ভোটার।’

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

বড় শয়তান এখনো কাঁধে শ্বাস ফেলছে : মাহফুজ আলম

মাহফুজ আলম তার পোস্টে বলেন, ‘এখনো ঐক্যই দরকার। হঠকারীদের স্পেস দিলে বরং দেশের ক্ষতি হবে। বিরোধিতা আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা কোনোভাবেই বিদ্বেষ এবং শত্রুতায় নিয়ে ঠেকানো যাবে না।’

৬ ঘণ্টা আগে

ডেঙ্গু নিয়ে একদিনে আরও হাসপাতালে ভর্তি ৪২০

এতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন করে বরিশাল বিভাগে ১১৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৯ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ৬০ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৫ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৫৭ জন, খুলনা বিভাগে ২৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৯ জন এবং রংপুর বিভাগে ৩ জন ভর্তি হয়েছেন।

৬ ঘণ্টা আগে

রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

আজকের গণবিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপি বলছে, এতদ্দ্বারা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং-III/৭৬) এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে আগামী সোমবার (১৪ জুলাই) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবন, বি

৭ ঘণ্টা আগে

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে নিয়োগ, পদসংখ্যা ২৩

৭ ঘণ্টা আগে