অটোরিকশা থামিয়ে দম্পতিকে তল্লাশি, স্ত্রীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ

স্বামীর সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বাড়ি ফেরার পথে অটোরিকশা থামিয়ে তল্লাশি করে স্বামীকে রেখে স্ত্রীকে (১৯) তুলে নিয়ে গিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মেয়েটির মা বাদী হয়ে থানায় পাঁচজনের নামে মামলা করেছেন। পুলিশ এজাহারে উল্লেখ করা পাঁচ আসামিকেই গ্রেপ্তার করেছে।
গত শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকালে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লাকসাম পৌরসভার বাইপাস মোড় এলাকা থেকে ওই দম্পতি অটোরিকশায় ওঠেন। সিএনজি অটোরিকশার চালক তাদের লাকসামের গন্ডামারা এলাকায় নিয়ে তাদের ব্যাগ তল্লাশি করেন। পরে তাদের লালমাই উপজেলার মগবাড়ি এলাকায় নিয়ে স্বামীকে ফেলে রেখে স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যান। সেখান থেকে লাকসামের পাইকপাড়া এলাকায় মেয়েটিকে নিয়ে ধর্ষণ করেন।
এ ঘটনায় শনিবার (১৫ মার্চ) মেয়েটির মা বাদী হয়ে লাকসাম থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রোববার (১৬ মার্চ) পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করে। সোমবার (১৭ মার্চ) তাদের কুমিল্লার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন— লাকসাম উপজেলার মনোহরপুর এলাকার প্রয়াত খলিলুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আলী (২৫), পৌরসভার শ্রীপুর মধ্যপাড়ার মো. মমিনের ছেলে মো. মাসুদ (২৩), বাতাখালী এলাকার আবু তাহেরের ছেলে মনির হোসেন হৃদয় (২৩), উত্তর বিনই এলাকার প্রয়াত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে আল আমিন (২৩) ও মধ্য লাকসাম এলাকার প্রয়াত মোস্তাফিজ মজুমদারের স্ত্রী বিলকিছ আক্তার ওরফে কল্পনা (৪০)।
পুলিশ জানিয়েছে, পাঁচজনের মধ্যে মোহাম্মদ আলী ও মাসুদ ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেছেন। বাকি তিনজন ছিলেন তাদের দুজনের সহযোগী।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ওই দম্পতি লাকসামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। শুক্রবার ভোরে তারা সেখান থেকে তাদের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাপুরের পথে রওয়ানা হন। লাকসাম পৌরসভার বাইপাস মোড় থেকে তারা মো. মাসুদের অটোরিকশায় ওঠেন। মাসুদই তাদের কৌশলে তাদের বিভিন্ন এলাকা ঘুরিয়ে ব্যাগ তল্লাশি করে স্বামীকে ফেলে রেখে স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যান। লাকসাম পৌরসভার পাইকপাড়া এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে মোহাম্মদ আলীকে সঙ্গে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন।
পরে মেয়েটিকে তারা লাকসাম পৌর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তালুকদার ভিলায় আরেক আসামি বিলকিছ আক্তারের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে আবার মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। স্থানীয়দের সহায়তায় পরে মেয়েটিকে উদ্ধার করে পরিবার। শনিবার রাতে মেয়েটির মা মামলা করলে রোববার সকালে মামলাটি নথিভুক্ত হয় এবং পুলিশ আসামিদের ধরতে অভিযান চালায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লাকসাম থানার পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার পাঁচজনকে কুমিল্লা আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন, তিনজন ছিলেন সহযোগী।
লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, ভুক্তভোগী মেয়েটিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার পাঁচ আসামিকেই গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।