‘ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায়’ তেজগাঁওয়ে ছুরিকাঘাতে তরুণ নিহত

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরমান হোসেন পাপ্পু (২২) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। নিহতের পরিবার ও বন্ধুরা বলছেন, ছিনতাইকারীদের বাধা দিতে গিয়ে ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছিলেন তিনি।
সোমবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশে এ ঘটনা ঘটে। আরমানকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ৯টার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আরমান হোসেন পাপ্পু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দারাজে চাকরি করতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার আন্ধাররমানিক গ্রামে। পরিবারের সঙ্গে তেজগাঁও বেগুনবাড়ি এলাকায় থাকতেন। তিন ভাইবোনের মধ্যে আরমান ছিলেন দ্বিতীয়।
আরমানকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন প্রতিবেশী মো. রাজু। তিনি জানান, আরমানসহ তারা কয়েকজন তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আরমান প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে রাস্তার অন্য পাশে গেলে কিছুক্ষণ পরই ‘ছিনতাইকারী, ছিনতাইকারী’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। অন্যরা দৌড়ে এগিয়ে গেলে তিন-চারজন ছিনতাইকারী সেখান থেকে পালিয়ে যেতে দেখেন। সেখানে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন আরমান।
রাজু বলেন, রাস্তার পাশে অন্ধকার জায়গায় অন্য কয়েকজনকে আক্রমণ করেছিল ছিনতাইকারীরা। তাদের বাঁচাতে গিয়েই চিৎকার করেছিলেন আরমান। ছিনতাইকারীরা তাকেই পায়ে ও মুখে ছুরিকাঘাত করে।
আরমানের বাবা মো. একরাম হোসেন জানান, দারাজে চাকরি করতেন পাপ্পু। সোমবার তার ডিউটি ছিল রাতে। রাত ৯টার দিকে অফিসে যাওয়ার কথা ছিল। সারা দিন বাসাতেই ছিলেন আরমান। সন্ধ্যার দিকে বের হন। কিছুক্ষণ পরই বাড়িতে খবর যায়, ছিনতাইকারীরা তাকে ছুরিকাঘাত করেছে। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত সমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, ছুরিকাঘাতে আহত এক তরুণকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মরদহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী শামীমুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে যতটুক জানা গেছে, ছিনতাইকারীদের ধরিয়ে দিতে সহযোগিতা করতে গিয়েছিলেন আরমান। সে কারণে তাকে তিন-চারজন ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে হাসপাতালে আরমান মারা গেছেন। বিষয়টি আরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।