শনিবার চা শ্রমিকদের বকেয়া বেতন না দিলে রোববার সড়ক অবরোধ

সিলেটের বুরজান চা-কোম্পানির অধীন তিনটি চা বাগানে ২০ সপ্তাহের বকেয়া পাওনা ও রেশনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শ্রমিকরা। বিক্ষোভ সমাবেশ করেও পাওনা বুঝে না পাওয়ায় এবার তারা সড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছেন।
শ্রমিকরা বলছেন, আজ শনিবারের (৩ মে) মধ্যে তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ ও রেশন না দেওয়া হলে আগামীকাল রোববার (৪ মে) সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করবেন।
বুরজান চা-কোম্পানির অধীন তিনটি চা বাগান হলো— বুরজান, ছড়াগাঙ ও কালাগুল চা বাগান। এসব বাগানের চা শ্রমিকরা গত বুধবার লাক্কাতুরা চা বাগান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে দুই ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন চা শ্রমিকরা। কিন্তু পাওনা বুঝে পাননি তারা। এ কারণেই সড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছেন।
চা শ্রমিক ও চা বাগান রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক রঞ্জিত নায়েক রঞ্জু বলেন, বারবার আশ্বাস দিয়েও কেউ কথা রাখেনি। আমরা অনেক প্রতিশ্রুতি শুনেছি, কিন্তু একটিও পূরণ হয়নি। তাই এবার দাবি আদায়ের জন্য আমরা শনিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছি। এর মধ্যে পাওনা পরিশোধ না করলে রোববার মালনীছড়ায় সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করবে চা শ্রমিকরা।
চা শ্রমিক জসদা বাউরি চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সিলেটের কালাগুল চা বাগানে কাজ করছেন। তিনি জানালেন, ছয় দশকের কর্মজীবনে কখনো টানা ২০ সপ্তাহ বেতন না পাওয়ার মতো সংকটের মুখোমুখি হননি তিনি।
জসদা বাউরি বলেন, দোল উৎসবের জন্য আমরা কোনো বোনাস পাইনি। প্রতিবাদ করলে আশ্বাস পেয়েছিলাম, কিন্তু বোনাস আর পাইনি। মে দিবসেও কাজ করেছি, তার টাকাও পাইনি।
শ্রমিকরা বলছেন, বুরজান চা-কোম্পানির অধীনে প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিকের বেতন-রেশন ও বোনাস বকেয়া পড়েছে। ফলে শ্রমিক ও তাদের ছেলে-মেয়েদের খেয়ে-না খেয়ে দিন পার করতে হচ্ছে। সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। বারবার বললেও মলিকপক্ষ বেতন দেবে দেবে বলে সময় পার করছে।
জানতে চাইলে বুরজান চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. কামরুজ্জামান বলেন, কেবল চা শ্রমিক নয়, আমরা কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও কেউ বেতন-বোনাস পাইনি। কারণ বাগানগুলো ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। আমরা কৃষি ব্যাংকে ঋণের জন্য যোগাযোগ করেছি। আশা করি দ্রুতই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।