top ad image
top ad image
home iconarrow iconমাঠের রাজনীতি

সংরক্ষিত বনে মহিষ ছেড়ে গাছ ধ্বংস, অভিযোগ করায় হুমকি

সংরক্ষিত বনে মহিষ ছেড়ে গাছ ধ্বংস, অভিযোগ করায় হুমকি
অনুমতি ছাড়াই সংরক্ষিত বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে মহিষ। ছবি: রাজনীতি ডটকম

পটুয়াখালীর গলাচিপায় উপকূলীয় বন বিভাগের সংরক্ষিত বন হুমকির মুখে পড়েছে। উপজেলার পক্ষিয়া বিটের অধীন সংরক্ষিত বনে মহিষ চড়ানোর কারণে সেখানে রোপণ করা কেওড়া ও গোলপাতা গাছ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে প্রায় সাত লাখ টাকার বনজ সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করলে বন বিভাগের লোকজনকেই হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়েছে।

গলাচিপা বন বিভাগ সূত্র জানায়, গলাচিপার পক্ষিয়া বিটের অধীন বদনাতলী ও চর কাজলের মাঝের চর এলাকায় প্রায় এক হাজার হেক্টর সংরক্ষিত বন রয়েছে। এই বনে রয়েছে ম্যানগ্রোভ ও গোল গাছের বাগান। এ বছরেই ওই বনে ১২০ হেক্টর ম্যানগ্রোভ ও ৪৫ সিবলিং কিলোমিটার গোলগাছের বাগান করার জন্য চারা রোপণ করা হয়েছে।

এদিকে বিনা অনুমতিতে বনে গবাদি পশু চড়ানো নিষেধ থাকলেও ওই এলাকার কিছু ব্যক্তি কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই তাদের কয়েক শ মহিষ সংরক্ষিত বনে ছেড়ে দিয়েছে। এই মহিষগুলো এখন চারা গাছসহ ছোট ছোট গাছের পাতা খেয়ে বন ধ্বংস করছে।

এই অবৈধ কাজে বাধা দেওয়ায় বনের দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গত ১২ এপ্রিল বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন বাদী হয়ে গলাচিপা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

সাধারণ ডায়েরিতে জামাল হোসেন বলেন, তিনি বদনাতলী ও চরকাজলের মাঝেরচর এলাকায় বন বিভাগের রোপণ করা কেওড়া ও গোলপাতা গাছ সংরক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল আনুমানিক ১১টার দিকে কয়েকজন ব্যক্তি মহিষ নিয়ে ওই চরে প্রবেশ করেন এবং চরের গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত করেন। তিনি ও তার অফিসের কর্মীরা বাধা দিলে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে সরকারি কাজে বাধা দেন এবং বনকর্মীদের হুমকি দেন।

Buffalo In Reserved Forest 24-04-2025 (1)

মহিষ চড়ছে সংরক্ষিত বনে। ধ্বংস হচ্ছে বনভূমি। ছবি: রাজনীতি ডটকম

জামাল হোসেন এ ঘটনার জন্য ওই এলাকার মো. হারুন চৌকিদার, মো. কালাম চৌকিদার, মো. ফোরকান চৌকিদার, মো. নাহিদ চৌকিদার ও মো. আমিনুল মোল্লাকে অভিযুক্ত করেন। অভিযুক্ত এসব ব্যক্তির কারণে বন বিভাগের এ সংরক্ষিত বনের আনুমানিক সাত লাখ টাকার বনজ সম্পদ নষ্ট হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

বিট কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন বলেন, থানায় অভিযোগ করার পর অভিযুক্তরা ও তাদের লোকজন নানাভাবে বন বিভাগের লোকজনদের হুমকি দিচ্ছে। এমনকি হাত-পা বেঁধে নদীতে ছুড়ে ফেলার ভয়ও দেখাচ্ছে।

জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে মো. হারুন চৌকিদার বলেন, এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। অন্য যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান তিনি।

বন বিভাগের গলাচিপা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বনে মহিষ চড়াতে হলে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অনুমতি নিতে হয়। কোনো একটি বনে কী পরিমাণ গবাদি পশু চড়ানো যাবে, তার হিসাব আছে। সে অনুযায়ী অনুমতি নিয়ে সরকারকে রাজস্ব দিয়ে তারপরই বনে মহিষ প্রবেশ করানো যায়।

রেঞ্জ কর্মকর্তা বলেন, এখানে এরা সরকারের অনুমতির তোয়াক্কা না করেই জোর করে বনে ব্যাপকসংখ্যক মহিষ ছেড়ে দিয়ে বন ধ্বংস করছে। গলাচিপা থানা পুলিশ জরুরি পদক্ষেপ নিলে বনকে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

জানতে চাইলে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরশাদুর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য আদালতে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অনুমতি পেলে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

r1 ad
top ad image