গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির বিবৃতি— ‘আজহারের খালাস ন্যায়বিচার নয়’

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫, ১০: ৪৬

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের আপিলে খালাসের রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। একজন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী কীভাবে নির্দোষ হতে পারেন— এ প্রশ্নও তোলা হয়েছে কমিটির পক্ষ থেকে।

এক বিবৃতিতে পগণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি বলছে, আপিল বিভাগের পুনর্বিবেচনার শুনানিতে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারকে সম্পূর্ণ নির্দোষ ঘোষণা দিয়ে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। যে পদ্ধতিতে আওয়ামী লীগ সরকার সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থ পূরণের জন্য যুদ্ধাপরাধীদের ত্রুটিপূর্ণ বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল, একই স্বার্থকে ধারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার জামায়াতের স্বার্থকে সংরক্ষণ করেছে।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের খালাস নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শুক্রবার (৩০ মে) এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, হারুন উর রশীদ, সীমা দত্ত, সামিনা লুৎফা, আবদুল্লাহ আল ক্বাফী, ফখরুদ্দিন কবীর আতিক, মাহা মির্জা, আফজাল হোসেইন, মারজিয়া প্রভাসহ কমিটির অন্য সদস্যদের পক্ষ থেকে বিবৃতিটি পাঠানো হয়েছে।

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আপিল বিভাগের পুনর্বিবেচনার শুনানিতে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারকে সম্পূর্ণ নির্দোষ ঘোষণা দিয়ে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা তার বিবৃতিতে এ পুনর্বিবেচনার রায়কে ন্যায়বিচার অভিহিত করেছেন। আমরা বলতে চাই, চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রতিপন্ন করে বেকসুর খালাস কোনো ন্যায়বিচার নয়, বরং বিচার বিভাগের ওপর রাজনৈতিক প্রভাবের উদাহরণ।’

‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এটিএম আজহার রংপুর জেলায় ইসলামী ছাত্রসংঘের জেলা কমিটির সভাপতি ও আলবদর বাহিনীর প্রধান ছিলেন উল্লেখ করে অধিকার কমিটি বলেছে, আজহার ও তার দল জামায়াত, আলবদর ও ইসলামী ছাত্রসংঘ সাংগঠনিকভাবে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়ে গণহত্যা, ধর্ষণ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত ছিল। মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের গণহত্যায় সম্পৃক্ত থাকার ঐতিহাসিক ভিত্তিই প্রমাণ করে আজহার সাংগঠনিক ভূমিকার কারণে এ গণহত্যার অংশীদার। কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রথম থেকেই গণহত্যার বিচারের মৌলিক নীতি না মেনে দল হিসেবে জামায়াত, আলবদর, আলশামস, ছাত্রশিবিরের বিচারের পরিবর্তে তারা ব্যক্তি হিসেবে বিচারকাজ সম্পন্ন করেছেন।’

‘এতে বিশ্বের বিভিন্ন ঐতিহাসিক গণহত্যার বিচারের নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিকে অনুসরণ করা হয়নি দাবি করে কমিটি বলেছে, আশ্চর্যের বিষয় হলো, অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজকে ত্রুটিপূর্ণ বলার পরও তারা ন্যায়বিচার প্রাপ্তির লক্ষ্যে সেই ট্রাইব্যুনালের ত্রুটিপূর্ণ বিচারিক প্রক্রিয়াতেই আপিল রিভিউ করল।’

আমরা বলতে চাই, যে পদ্ধতিতে আওয়ামী লীগ সরকার তাদের সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থ পূরণের জন্য যুদ্ধাপরাধীদের এ ত্রুটিপূর্ণ বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল, সেই একই স্বার্থকে এ অন্তর্বর্তী সরকার ধারণ করে জামায়াতের স্বার্থকে সংরক্ষণ করেছে।’

ad
ad

ঘরের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

'নির্বাচন বিলম্ব হলে ষড়যন্ত্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে'

নির্বাচন বিলম্ব হলে ষড়যন্ত্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

১৬ ঘণ্টা আগে

মবের নামে নাশকতার সুযোগ নেই এখন, সারজিসকে সেনা কর্মকর্তা

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের রংপুর শহরের ‘দ্য স্কাই ভিউ’ বাসভবনে হামলার ঘটনায় সেনাবাহিনী সক্রিয়ভাবে তদন্তে নেমেছে। শনিবার মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং বিএনপির নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদও করেছে সেনাবাহিনী।

১৮ ঘণ্টা আগে

জামায়াতের দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের সিদ্ধান্ত নেবে ইসি

রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে এক যুগ আগে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল ঘোষণা করেছেন আপিল বিভাগ। তবে দলটির প্রতীক দাঁড়িপাল্লা থাকবে কি না সে বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি দেশের সর্ব্বোচ আদালত। জামায়াতের প্রতীকের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওপর ছেড়ে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

২০ ঘণ্টা আগে

'চাকরি অধ্যাদেশের কিছু ধারা অপপ্রয়োগের আশঙ্কা আছে'

সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা ফাওজুল কবির বলেন, আপনাদের (কর্মচারী) যে অবস্থান তা হলো এটি বাতিল করে দিতে হবে। এটা একটা অবস্থান। কিন্তু আপনারা একটা জিনিস মনে রাখবেন- আর একটা বিষয় হতে পারে এই অধ্যাদেশটি যে অপপ্রয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা আছে, সেগুলোকে অ্যাড্রেস করা যায় কি না। সেটাও আপনারা একটু মাথায় রাখবেন।

২০ ঘণ্টা আগে