জামায়াতের আয় বিএনপির দ্বিগুণ, ব্যাংক হিসাব নিয়ে প্রশ্ন

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২০২৪ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দিয়েছে, যেখানে আয় ২৮ কোটি ও ব্যয় ২৩ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে। তবে, কোনো ব্যাংক হিসাব উল্লেখ না করায় অর্থের উৎস ও ব্যয়ের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইসি সচিব বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন। জামায়াতের এই আয় বিএনপির দ্বিগুণ এবং ব্যয় ৫ গুণ বেশি।

নির্বাচন কমিশনে (ইসি) ২০২৪ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এই পঞ্জিকা বছরে দলের মোট আয় হয়েছে ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা। অন্যদিকে ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা। এই আয় বিএনপির আয়ের থেকে প্রায় দ্বিগুণ, ব্যয়ও ৫ গুণ বেশি।

তবে দলটির পেশ করা রিপোর্টে লেখা আছে, হিসাব পরিচালনার জন্য তাদের কোনো ব্যাংক হিসাব নেই। তাই আয়ের অর্থ কোথায় রাখা ছিল এবং কোন উৎস থেকে ব্যয় হয়েছে- তা জানা যায়নি। এই বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ।

গত ২৯ জুলাই জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের সই করা আয়-ব্যয়ের রিপোর্ট ইসিতে জমা দেওয়া হয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের কিছু শর্ত রয়েছে। দলের নামে ব্যাংকের নাম ও অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং সেই অ্যাকাউন্টের সবশেষ হিসাব, দলের তহবিলের উৎসের বিবরণ ইসিতে জমা দিতে হয়। এই শর্ত পূরণ না করায় সম্প্রতি নতুন দলগুলোকে চিঠি দিয়েছিল কমিশন। সে ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীর অডিট রিপোর্ট ইসি গ্রহণ করবে কিনা জানতে চাইলে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, আমি দেখব।

জামায়াতে ইসলামীর অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, গত পঞ্জিকা বছরে জামায়াত কর্মী ও সদস্যদের চাঁদা থেকে আয় করেছে ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ১৬২ টাকা। কার্যনির্বাহী কমিটি বা উপদেষ্টা পরিষদের চাঁদা ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৪৯ টাকা। বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা থেকে অনুদান ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯ টাকা। দলের পত্রিকা, সাময়িকী ও বই বিক্রি থেকে আয় ৯ লাখ ১১ হাজার ২৯০ টাকা। অন্যান্য চাঁদা ৭ লাখ ২১ হাজার ৭৯ টাকা। আগের বছরের স্থিতি ছিল ১০ কোটি ৪৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৯১ টাকা। মোট আয় ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা।

অডিট রিপোর্টে ব্যয়ের বিবরণও আছে। কয়েকটি প্রধান খরচ হলো- কর্মীদের বেতন ও বোনাসে খরচ হয়েছে ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৩ টাকা। আবাসন ও প্রশাসনিক বাবদ ব্যয় ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা। ইউটিলিটি বিল দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১৮ টাকা। ডাক, ফোন, ইন্টারনেট, পত্রিকা ও কুরিয়ার খরচ ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৬ টাকা। আপ্যায়নে খরচ ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬২ টাকা। প্রচার ও পরিবহনে খরচ ২ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৫৬৩ টাকা। যাতায়াতে খরচ ১ কোটি ২৭ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা। জনসভা-পথসভা-বৈঠকে খরচ ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৫ টাকা। প্রার্থীদের অনুদান দিয়েছে ১১ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২০ টাকা। ধর্মীয় অনুষ্ঠান খাতে খরচ ৩২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা। অন্যান্য খরচ ১ কোটি ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮৯ টাকা। মোট ব্যয় ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা।

২০১৩ সালে দলের রেজিস্ট্রেশন বাতিল হওয়ার আগে শেষবার হিসাব দিয়েছিল জামায়াত। এবার রেজিস্ট্রেশন ফিরে পেয়ে এক যুগ পর তারা আবার হিসাব দিল। ইসিতে জমা দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০২৪ সালে জামায়াতের আয় বিএনপির আয়ের প্রায় দ্বিগুণ, ব্যয় ৫ গুণ বেশি। বিএনপি তাদের ২০২৪ সালের হিসাব গত ২৭ জুলাই জমা দেয়। তাদের আয়ের পরিমাণ লেখা ছিল ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা, ব্যয় ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২৩ টাকা। দলের হাতে তখন উদ্বৃত্ত ছিল ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তাদের আয়ের প্রধান উৎস ছিল সদস্যদের মাসিক চাঁদা, বই বিক্রি, ব্যাংক সুদ ও এককালীন অনুদান। অন্যদিকে ব্যয়ের বড় অংশ গেছে কর্মসূচি, লিফলেট-পোস্টার মুদ্রণ ও ব্যক্তিগত ও দুর্যোগকালীন সহায়তায়।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

শেষ দিনে ৪৪২-সহ ডাকসুর মনোনয়ন সংগ্রহ ৫৬৫ প্রার্থীর

ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক জসীম উদ্দিন বলেন, সপ্তম দিনে ডাকসুর বিভিন্ন পদে জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে ৪৪২ জন। এখন পর্যন্ত সাত দিনে ডাকসুতে মোট মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ৫৬৫ জন এবং ১৮টি হল সংসদের জন্য মোট মনোনয়ন সংগ্রহ করেছে এক হাজার ২২৬ জন।

১৫ ঘণ্টা আগে

ব্যাটল অব হ্যাস্টিংসের ইতিহাস

ইংল্যান্ডের সিংহাসন তখন ছিল এক জটিল রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কেন্দ্র। ইংরেজ রাজা এডওয়ার্ড দ্য কনফেসর ১০৬৬ সালের জানুয়ারিতে উত্তরাধিকারী ছাড়াই মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াল—কে ইংল্যান্ডের নতুন রাজা হবেন? রাজ্যের প্রধান অভিজাতেরা হ্যারল্ড গডউইনসনকে রাজা ঘোষণা করলেন।

১৫ ঘণ্টা আগে

ডাকসুতে শিবিরের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম, জিএস পদে ফরহাদ

ডাকসুকে ভিপি পদে প্রার্থী সাদিক কায়েম শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি। অন্যদিকে জিএস পদে প্রার্থী এস এম ফরহাদ শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বর্তমান সভাপতি।

১৭ ঘণ্টা আগে

ডাকসুতে শিবিরের প্যানেল ঘোষণা, নেতৃত্বে যারা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিবিরের সাবেক সভাপতি সাদেক কায়েমকে ভিপি ও বর্তমান সভাপতি এস এম ফরহাদকে জিএস করে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের প্যানেল ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।

১৯ ঘণ্টা আগে