top ad image
top ad image
home iconarrow iconঘরের রাজনীতি

সরকার একা মানবিক করিডোরের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না: বাম জোট

সরকার একা মানবিক করিডোরের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না: বাম জোট
বাম গণতান্ত্রিক জোট

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে বাংলাদেশ ‘মানবিক করিডোর’ দিতে চাইলে সেই সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকার একা নিতে পারে না বলে মন্তব্য করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।

বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর এই জোট বলছে, স্পর্শকাতর এ বিষয়টিতে সিদ্ধান্ত নিতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তাদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। করিডোরের মতো বিষয়ে সিদ্ধান্তের জের ধরে বাংলাদেশের আঞ্চলিক যুদ্ধেও জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন জোট নেতারা।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের এক সভার পর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জোট নেতারা এসব কথা বলেন। এ দিন দুপুর ১২টায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের অস্থায়ী কার্যালয় মুক্তি ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় এক প্রস্তাবে বলা হয়, আরাকানে মানবিক করিডোর প্রদানের সিদ্ধান্ত একটি স্পর্শকাতর বিষয়। এ ধরনের সিদ্ধান্তের সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা, সামরিক ঝুঁকি, সার্বভৌমত্ব, এ অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর এ বিষয়ে অবস্থান— এ রকম অনেকগুলো বিষয় যুক্ত। প্রতিটি বিষয়ই গভীর পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের দাবি রাখে।

প্রস্তাবে আরও বলা হয়, ‘ফলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে ঐক্যমত্য ছাড়া এবং সরকারের পক্ষ থেকে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট করে উপস্থাপন করা ছাড়া এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে সরকার একক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।’

এ ধরনের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ মার্কিন সাম্রাজ্যবাদসহ সাম্রাজ্যবাদী-আধিপত্যবাদী শক্তিগুলোর যুদ্ধ চক্রান্তের শিকার হতে পারে— এমন আশঙ্কার কথাও বলেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা।

সভায় চট্রগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টারমিনাল হ্যান্ডেলিংয়ের জন্য বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সভায় এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে নেতারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সভায় বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর। এর সঙ্গে শুধু বাণিজ্যিক লেনদেন নয়, দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন যুক্ত। বন্দরের তত্ত্বাবধানে টার্মিনালটি গত ১৭ বছর লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভালোভাবে পরিচালিত হওয়া সত্ত্বেও বিদেশি কোম্পানির কাছে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হলো, সেটি স্পষ্ট নয়।

সভায় কাতারের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলে সমরাস্ত্রের যন্ত্রাংশ তৈরির খাতে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানানোরও বিরোধিতা করা হয়। জোট নেতারা বলেন, সরকারের এ ধরনের ব্যবসায়ী উদ্যোগ বাংলাদেশকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলবে। বিদেশি কোনো দেশের সমরাস্ত্রের যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা বাংলাদেশে হতে পারে না।

সভায় মহান মে দিবসের সংগ্রামী চেতনাকে ধারণ করে শ্রমিকদের মজুরি, মর্যাদাপূর্ণ জীবন, ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য সারা দেশের শ্রমজীবী মানুষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়৷ একই সঙ্গে নিবর্তনমূলক বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করে শ্রমিক নেতাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানানো হয়। নেতারা অবিলম্বে বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিলের জোর দাবি জানান।

বামজোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ সভায় সভাপতিত্ব করেন। এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, বাসদের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য নিখিল দাস ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য শহীদুল ইসলাম সবুজ।

r1 ad
top ad image