দীপক দেব
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক শেষে ফেব্রুয়ারিতে সম্ভাব্য নির্বাচনের ঘোষণার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের স্বস্তি এসেছিল। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা এখনো কাটেনি।
গত ১৩ জুনের ওই যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণার এক সপ্তাহ পার হলেও অন্তবর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আজ শনিবার (২১ জুন) পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন, সামরিক বা বেসামরিক প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর কাছে কোনো নির্দেশনা বা পরামর্শ যায়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন, রমজান শুরুর আগের সপ্তাহে নির্বাচন দেওয়া হবে— যৌথ বিবৃতিতে সুস্পষ্টভাবে এমন কথা বলা হয়নি। বিএনপি নেতাদের কেউ কেউ বিষয়টিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী রাজনীতি ডটকমকে বলেন, লন্ডন বৈঠকের পর যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, সেখানে রমজানের আগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে— এমন কথা সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। পরের লাইনে আবার দুটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে— ওই সময় তথা ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংস্কার ও বিচার কার্যক্রমে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
যৌথ বিবৃতির এ বিষয়গুলো গুরুত্বসহ অনুধাবন করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, ‘এটা তো বিএনপির মিস ইন্টারপ্রিটেশন। কাগজে দেখলাম বিএনপির এক নেতা বলেই দিলেন, ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখে নির্বাচন।’
অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের ওই একান্ত বৈঠকের পর ওই হোটেলেই যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও তারেক রহমানের আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির।
সংবাদ সম্মেলনে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব করেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও মনে করেন, ওই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়। বৈঠকে এ কথাও জানানো হয় প্রধান উপদেষ্টাকে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, এর জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
সংস্কার ও বিচার প্রসঙ্গে ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, সংস্কারের কাজটা তো সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর ছেড়ে দিয়েছে। এখন তারা বসে সবাই মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিক, ঠিক করুক সংস্কার কীভাবে করবে। আমি মনে করি, সংস্কার যদি আটকে যায় নির্বাচনও আটকে যাবে। আর নির্বাচন আটকে গেলে দেশের অবস্থা ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে চলে যাবে, যা কারও কাম্য নয়।’
সংস্কার প্রক্রিয়াকে এখন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ কমিশন এখন দ্বিতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলার সঙ্গে বৈঠক করছে। এ পর্যায়ের বৈঠকগুলোতে বেশকিছু বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টিসহ বেশকিছু দলের সঙ্গে মতবিরোধ রয়েছে বিএনপির। এ ছাড়া সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকালসহ আরও কিছু বিষয় নিয়েও দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়েই গেছে।
নির্বাচনের তারিখ প্রশ্নে সরকারের পরামর্শ পেয়েছে কি না, তা নিয়ে গত এক সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন বারবার প্রশ্নের মুখে পড়ছে। সাংবাদিকরা শনিবারও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান। তবে সিইসি সরাসরি জবাব না দিয়ে বলেন, বিষয়গুলো সময় এলে আপনারা জানতে পারবেন। সংসদ নির্বাচনের তারিখ যথাসময়ে ঘোষণা করা হবে।
এর আগে গত রোববার (১৫ জুন) সিইসি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না, তা নিয়ে সরকার এখনো নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেনি।
আর গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করার যে আলোচনা চলছে, সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ‘অফিসিয়ালি’ এখনো সেনাবাহিনীকে কিছু জানানো হয়নি। সরকারের নির্দেশনা পেলে নির্বাচন-সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করবে সেনাবাহিনী।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে সংশয় ও সন্দেহ ছিল, লন্ডন বৈঠকের মধ্য দিয়ে তা কিছুটা দূর হলেও নানা প্রশ্ন ও অস্পষ্টতা রয়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘কিছু অস্পষ্টতা তো এখনো আছে। আমরা আশা করেছিলাম, সরকারপ্রধান লন্ডন থেকে দেশে ফিরে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবেন। কিন্তু তা করেননি। তাই সাধারণ একটা ধারণা পাওয়া গেলেও এবং আশাবাদ তৈরি হলেও জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না যে মধ্য ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে।’
সাইফুল হক বলেন, ‘লন্ডন বৈঠকের পর সাত দিন অতিবাহিত হলেও রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন বা অংশীজনদের কাছে বিষয়টি অবহিত করার মতো পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। তবে এখনো সময় আছে। যেসব বিভ্রান্তি আছে সেগুলো দূর করতে সরকার কাজ করবে বলে আমার বিশ্বাস।’
নির্বাচনের তারিখ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা গত কয়েক মাস ধরেই চলছে। বিএনপিসহ মিত্র দলগুলোর পক্ষ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করে জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানানো হয়। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়, জাতীয় নির্বাচন হবে এ বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে অনড় থাকলে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা দেয়। এর মধ্যে ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তাতেও বিএনপি সন্তুষ্ট হতে পারেনি এবং ডিসেম্বর নির্বাচনের দাবিই পুনর্ব্যক্ত করে।
সরকার ও বিএনপির এমন অবস্থানের মধ্যে ১৩ জুন লন্ডনে তারেক রহমানে সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসের বৈঠক হয়। সেখানে দুপক্ষই নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসে আগামী রমজানের আগে, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের বিষয়ে একমত হন, যা পরে যৌথ বিবৃতিতে প্রকাশ করা হয়।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বৈঠক সফল হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সবকিছু যে একটা অনিশ্চিত অবস্থায় চলে গিয়েছিল, সেই অবস্থাকে কাটিয়ে জাতিকে আবার সামনে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন দুই নেতা।
যদিও লন্ডন বৈঠকে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে সরকার ও বিএনপির মধ্যে যে প্রক্রিয়ায় সমঝোতা হয়েছে এবং সেটি যেভাবে যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।
এসব দলের নেতারা বলছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের ভিন্নমত নেই। তবে সরকার এভাবে একটি দলের সঙ্গে নির্বাচনের বিষয়ে যৌথ ঘোষণা দিতে পারে কি না, তা নিয়ে প্রশ্নে তোলে দলগুলো।
লন্ডন বৈঠকের এক সপ্তাহ পরও নির্বাচন নিয়ে কোনো নির্দেশনা না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটিই এখনো পর্যন্ত দলের অবস্থান।
রাজনীতি ডটকমকে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার নতুন করে বলার কিছু নেই। কারণ আমাদের দলের মহাসচিব বিষয়টি নিয়ে আমাদের দলের অবস্থান তুলে ধরেছেন। তাই ওনার বক্তব্যই আমাদের বক্তব্য।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে হওয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্রুত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে এমন আহ্বান জানানো হলেও সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে গত এক সপ্তাহে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘লন্ডনের বৈঠক নিয়ে বিএনপি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও আমরা তখনই বলেছিলাম, এ ফয়সালার মধ্যেও ফাঁক রয়েছে।’
যৌথ বিবৃতির ড্রাফটের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই বাসদ নেতা বলেন, ‘ওখানে কিন্তু বলা হয়েছে নির্বাচন হতে পারে। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারলে রমজানের আগে নির্বাচন হবে— এমনটা কিন্তু বলা নেই। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে যে ধোঁয়াশা বা অনিশ্চয়তাটা ছিল সেটা এখনো রয়ে গেছে।’
তবে নির্বাচনের সময় নিয়ে সময়মতো সমাধান হয়ে যাবে বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. আবদুল লতিফ মাসুম। তিনি রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ অল্পতেই অধৈর্য হয়ে যায়। আমার মনে হয় সময়মতো এসব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
গত ১৫ জুন ঈদের ছুটির শেষ হওয়ার পর প্রথম কর্মদিবসে সিইসি জানান, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয় তারা কোনো নির্দেশনা পাননি।
এদিকে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে তারিখ নির্ধারণ হলে নির্বাচনের আগে সময় থাকে আট মাস। এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে কমিশন কতটা প্রস্তুত তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা, আইন-বিধি-নীতিমালা সংস্কার এবং তফসিল ঘোষণাসহ বিশাল কর্মযজ্ঞ রয়েছে কমিশনের সামনে।
ইসি কর্মকর্তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, এর আগে সাধারণত প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের অন্তত দেড় বছর আগে রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে ইসি। আর ফেব্রুয়ারিতে ভোট ধরলে এখন রোডম্যাপ প্রকাশের সময় আছে মাত্র আট মাস।
এ প্রেক্ষাপটে্ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রোডম্যাপ তৈরি করেছেন কি না, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার বিষয়ে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কি না বা নির্বাচন নিয়ে সরকার আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কি না— এসব বিষয়ে সাংবাদিকরা শনিবার জানতে চান সিইসির কাছে।
জবাবে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘বিষয়গুলো সময় এলে আপনারা জানতে পারবেন। আমরা রোডম্যাপ বলব না, কর্মপরিকল্পনা বলব। আমাদের অনেক ধরনের কাজ করতে হবে। সেগুলো কোনটা কোন সময় শেষ করব, কোন সময় শুরু করব— এ পরিকল্পনাকে অনেকে রোডম্যাপ বলে। কিন্তু আমি তা না বলে কর্মপরিকল্পনা বলছি।’
সিইসি আরও বলেন, যেকোনো অফিসের একটি কর্মপরিকল্পনা থাকে। এতো বড় একটি নির্বাচন হবে, আমাদেরও নিজস্ব কর্মপরিকল্পনা আছে। যখন দায়িত্ব নিয়েছি তখন থেকেই কর্মপরিকল্পনা করেছি।
‘যদি বলেন, সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কি না, তাহলে বলব— যতই আপনি ইসিকে স্বাধীন বলেন না কেন, সরকার ছাড়া নির্বাচন করা সম্ভব না। কারণ সরকারের সহযোগিতা নিয়েই তো আমাকে নির্বাচনটা করতে হবে। আইনি সহায়তা নিতে হবে। সরকারি অফিসারদের সাহায্য নিতে হবে, প্রশাসনের সহায়তা নিতে হবে। সুতরাং সরকার এখানে মুখ্য ভূমিকা রাখবে। তাছাড়া তো সম্ভব না,’— বলেন সিইসি।
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক শেষে ফেব্রুয়ারিতে সম্ভাব্য নির্বাচনের ঘোষণার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের স্বস্তি এসেছিল। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা এখনো কাটেনি।
গত ১৩ জুনের ওই যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণার এক সপ্তাহ পার হলেও অন্তবর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আজ শনিবার (২১ জুন) পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন, সামরিক বা বেসামরিক প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর কাছে কোনো নির্দেশনা বা পরামর্শ যায়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন, রমজান শুরুর আগের সপ্তাহে নির্বাচন দেওয়া হবে— যৌথ বিবৃতিতে সুস্পষ্টভাবে এমন কথা বলা হয়নি। বিএনপি নেতাদের কেউ কেউ বিষয়টিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী রাজনীতি ডটকমকে বলেন, লন্ডন বৈঠকের পর যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, সেখানে রমজানের আগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে— এমন কথা সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। পরের লাইনে আবার দুটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে— ওই সময় তথা ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংস্কার ও বিচার কার্যক্রমে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
যৌথ বিবৃতির এ বিষয়গুলো গুরুত্বসহ অনুধাবন করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, ‘এটা তো বিএনপির মিস ইন্টারপ্রিটেশন। কাগজে দেখলাম বিএনপির এক নেতা বলেই দিলেন, ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখে নির্বাচন।’
অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের ওই একান্ত বৈঠকের পর ওই হোটেলেই যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও তারেক রহমানের আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির।
সংবাদ সম্মেলনে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব করেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও মনে করেন, ওই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়। বৈঠকে এ কথাও জানানো হয় প্রধান উপদেষ্টাকে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, এর জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
সংস্কার ও বিচার প্রসঙ্গে ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, সংস্কারের কাজটা তো সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর ছেড়ে দিয়েছে। এখন তারা বসে সবাই মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিক, ঠিক করুক সংস্কার কীভাবে করবে। আমি মনে করি, সংস্কার যদি আটকে যায় নির্বাচনও আটকে যাবে। আর নির্বাচন আটকে গেলে দেশের অবস্থা ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে চলে যাবে, যা কারও কাম্য নয়।’
সংস্কার প্রক্রিয়াকে এখন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ কমিশন এখন দ্বিতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলার সঙ্গে বৈঠক করছে। এ পর্যায়ের বৈঠকগুলোতে বেশকিছু বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টিসহ বেশকিছু দলের সঙ্গে মতবিরোধ রয়েছে বিএনপির। এ ছাড়া সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকালসহ আরও কিছু বিষয় নিয়েও দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়েই গেছে।
নির্বাচনের তারিখ প্রশ্নে সরকারের পরামর্শ পেয়েছে কি না, তা নিয়ে গত এক সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন বারবার প্রশ্নের মুখে পড়ছে। সাংবাদিকরা শনিবারও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান। তবে সিইসি সরাসরি জবাব না দিয়ে বলেন, বিষয়গুলো সময় এলে আপনারা জানতে পারবেন। সংসদ নির্বাচনের তারিখ যথাসময়ে ঘোষণা করা হবে।
এর আগে গত রোববার (১৫ জুন) সিইসি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না, তা নিয়ে সরকার এখনো নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেনি।
আর গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করার যে আলোচনা চলছে, সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ‘অফিসিয়ালি’ এখনো সেনাবাহিনীকে কিছু জানানো হয়নি। সরকারের নির্দেশনা পেলে নির্বাচন-সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করবে সেনাবাহিনী।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে সংশয় ও সন্দেহ ছিল, লন্ডন বৈঠকের মধ্য দিয়ে তা কিছুটা দূর হলেও নানা প্রশ্ন ও অস্পষ্টতা রয়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘কিছু অস্পষ্টতা তো এখনো আছে। আমরা আশা করেছিলাম, সরকারপ্রধান লন্ডন থেকে দেশে ফিরে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবেন। কিন্তু তা করেননি। তাই সাধারণ একটা ধারণা পাওয়া গেলেও এবং আশাবাদ তৈরি হলেও জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না যে মধ্য ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে।’
সাইফুল হক বলেন, ‘লন্ডন বৈঠকের পর সাত দিন অতিবাহিত হলেও রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন বা অংশীজনদের কাছে বিষয়টি অবহিত করার মতো পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। তবে এখনো সময় আছে। যেসব বিভ্রান্তি আছে সেগুলো দূর করতে সরকার কাজ করবে বলে আমার বিশ্বাস।’
নির্বাচনের তারিখ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা গত কয়েক মাস ধরেই চলছে। বিএনপিসহ মিত্র দলগুলোর পক্ষ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করে জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানানো হয়। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়, জাতীয় নির্বাচন হবে এ বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে অনড় থাকলে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা দেয়। এর মধ্যে ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তাতেও বিএনপি সন্তুষ্ট হতে পারেনি এবং ডিসেম্বর নির্বাচনের দাবিই পুনর্ব্যক্ত করে।
সরকার ও বিএনপির এমন অবস্থানের মধ্যে ১৩ জুন লন্ডনে তারেক রহমানে সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসের বৈঠক হয়। সেখানে দুপক্ষই নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসে আগামী রমজানের আগে, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের বিষয়ে একমত হন, যা পরে যৌথ বিবৃতিতে প্রকাশ করা হয়।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বৈঠক সফল হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সবকিছু যে একটা অনিশ্চিত অবস্থায় চলে গিয়েছিল, সেই অবস্থাকে কাটিয়ে জাতিকে আবার সামনে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন দুই নেতা।
যদিও লন্ডন বৈঠকে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে সরকার ও বিএনপির মধ্যে যে প্রক্রিয়ায় সমঝোতা হয়েছে এবং সেটি যেভাবে যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।
এসব দলের নেতারা বলছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের ভিন্নমত নেই। তবে সরকার এভাবে একটি দলের সঙ্গে নির্বাচনের বিষয়ে যৌথ ঘোষণা দিতে পারে কি না, তা নিয়ে প্রশ্নে তোলে দলগুলো।
লন্ডন বৈঠকের এক সপ্তাহ পরও নির্বাচন নিয়ে কোনো নির্দেশনা না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটিই এখনো পর্যন্ত দলের অবস্থান।
রাজনীতি ডটকমকে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার নতুন করে বলার কিছু নেই। কারণ আমাদের দলের মহাসচিব বিষয়টি নিয়ে আমাদের দলের অবস্থান তুলে ধরেছেন। তাই ওনার বক্তব্যই আমাদের বক্তব্য।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে হওয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্রুত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে এমন আহ্বান জানানো হলেও সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে গত এক সপ্তাহে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘লন্ডনের বৈঠক নিয়ে বিএনপি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও আমরা তখনই বলেছিলাম, এ ফয়সালার মধ্যেও ফাঁক রয়েছে।’
যৌথ বিবৃতির ড্রাফটের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই বাসদ নেতা বলেন, ‘ওখানে কিন্তু বলা হয়েছে নির্বাচন হতে পারে। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারলে রমজানের আগে নির্বাচন হবে— এমনটা কিন্তু বলা নেই। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে যে ধোঁয়াশা বা অনিশ্চয়তাটা ছিল সেটা এখনো রয়ে গেছে।’
তবে নির্বাচনের সময় নিয়ে সময়মতো সমাধান হয়ে যাবে বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. আবদুল লতিফ মাসুম। তিনি রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ অল্পতেই অধৈর্য হয়ে যায়। আমার মনে হয় সময়মতো এসব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
গত ১৫ জুন ঈদের ছুটির শেষ হওয়ার পর প্রথম কর্মদিবসে সিইসি জানান, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয় তারা কোনো নির্দেশনা পাননি।
এদিকে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে তারিখ নির্ধারণ হলে নির্বাচনের আগে সময় থাকে আট মাস। এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে কমিশন কতটা প্রস্তুত তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা, আইন-বিধি-নীতিমালা সংস্কার এবং তফসিল ঘোষণাসহ বিশাল কর্মযজ্ঞ রয়েছে কমিশনের সামনে।
ইসি কর্মকর্তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, এর আগে সাধারণত প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের অন্তত দেড় বছর আগে রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে ইসি। আর ফেব্রুয়ারিতে ভোট ধরলে এখন রোডম্যাপ প্রকাশের সময় আছে মাত্র আট মাস।
এ প্রেক্ষাপটে্ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রোডম্যাপ তৈরি করেছেন কি না, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার বিষয়ে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কি না বা নির্বাচন নিয়ে সরকার আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কি না— এসব বিষয়ে সাংবাদিকরা শনিবার জানতে চান সিইসির কাছে।
জবাবে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘বিষয়গুলো সময় এলে আপনারা জানতে পারবেন। আমরা রোডম্যাপ বলব না, কর্মপরিকল্পনা বলব। আমাদের অনেক ধরনের কাজ করতে হবে। সেগুলো কোনটা কোন সময় শেষ করব, কোন সময় শুরু করব— এ পরিকল্পনাকে অনেকে রোডম্যাপ বলে। কিন্তু আমি তা না বলে কর্মপরিকল্পনা বলছি।’
সিইসি আরও বলেন, যেকোনো অফিসের একটি কর্মপরিকল্পনা থাকে। এতো বড় একটি নির্বাচন হবে, আমাদেরও নিজস্ব কর্মপরিকল্পনা আছে। যখন দায়িত্ব নিয়েছি তখন থেকেই কর্মপরিকল্পনা করেছি।
‘যদি বলেন, সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কি না, তাহলে বলব— যতই আপনি ইসিকে স্বাধীন বলেন না কেন, সরকার ছাড়া নির্বাচন করা সম্ভব না। কারণ সরকারের সহযোগিতা নিয়েই তো আমাকে নির্বাচনটা করতে হবে। আইনি সহায়তা নিতে হবে। সরকারি অফিসারদের সাহায্য নিতে হবে, প্রশাসনের সহায়তা নিতে হবে। সুতরাং সরকার এখানে মুখ্য ভূমিকা রাখবে। তাছাড়া তো সম্ভব না,’— বলেন সিইসি।
রাজনীতি ও ক্রীড়াঙ্গনকে আলাদা রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি খেলার মধ্যে রাজনীতি আনার পক্ষে কোনোদিনই নই। আমি সবসময় মনে করেছি খেলাধুলা ও ক্রীড়াঙ্গন রাজনীতিমুক্ত হওয়া উচিত। যারা যোগ্য তারা খেলবেন।
২ দিন আগেখসড়া গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পার্টির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন। তবে এক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুইবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে থাকতে পারবেন।
২ দিন আগেবিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সময়মতো হবে। আমরা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন চাইছি। ইতিমধ্যেই অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচন শান্তিপূর্ণ এবং সকলের দাবির প্রতিফলনমূলক হওয়া নিয়ে জোর দাবি করেছে, যা গ্রহণযোগ্য। এবারের নির্বাচন জনগণের প্রত্যাশা
২ দিন আগেলন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, তিনি ২০২৫ সালের মধ্যেই দেশে ফিরবেন এবং নির্বাচনকালীন সময়ে দলের নেতৃত্ব দেবেন।
২ দিন আগে