দীপক দেব
অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত বৈঠক নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
এ বৈঠক নিয়ে সরকার ও বিএনপি সন্তুষ্টি জানিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বৈঠককে ইতিবাচক ও রাজনীতিতে আস্থা ফেরানোর মাধ্যম হিসেবে দেখছেন। তবে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দল এ বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সংস্কার ও বিচারকে গুরুত্ব না দিয়ে এ বৈঠকের মাধ্যমে নির্বাচন ইস্যুতে একটি দলকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকার ও বিএনপির মধ্যে সৃষ্ট বিরোধের মধ্যে শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডনের পার্ক লেনে হোটেল ডরচেস্টারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে সরকার ও বিএনপি নিজেদের আগের অবস্থান থেকে সরে এসে রমজানের আগে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচনের বিষয়ে একমত হয়েছে।
রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করছেন, নির্বাচন নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে সন্দেহ, অবিশ্বাস ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে তার অবসান ঘটল। বৈঠকের মধ্য দিয়ে নির্বাচন নিয়ে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সংশয়ও অনেকটাই দূর হয়েছে।
অন্যদিকে বিএনপি'র সঙ্গে গড়ে ওঠা এই সখ্যের ভিত্তিতে সরকারও আগামী দিনে অনেকটাই নির্বিঘ্নে ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনি প্রক্রিয়া এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি এগিয়ে নিতে পারবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এই বৈঠক সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে 'উইন-উইন সিচুয়েশন' তৈরি করেছে।
বৈঠক প্রসঙ্গে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক রাজনীতি ডটকমকে বলেন, নির্বাচন ঘিরে সরকার ও বিএনপির মধ্যে যে অনাকাঙ্ক্ষিত বিরোধ ও সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে তার অবসান ঘটেছে। এ বৈঠকের মধ্যে দিয়ে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা 'উইন-উইন সিচুয়েশনে' আসা গেছে।
এমন মনে করার কারণ ব্যাখ্যা করে সাইফুল হক বলেন, নির্বাচন ও তফসিল ঘোষণা নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিল, সন্দেহ ছিল, অনেক অবিশ্বাস ছিল। প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মধ্যে বৈঠকে এ উত্তেজনা অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে বলে মনে করি। এখন সরকার সংস্কার ও বিচারের কাজটা আরও জোরদারভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।
অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান করতে পারলে সরকারের জন্য বেশি মর্যাদাসম্পন্ন হতো বলেও মন্তব্য করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এই নেতা। সেটি না হলেও এবং দেরিতে হলেও মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব অতিক্রম করে সংকট উত্তরণের এক ধরনের পথ এ বৈঠকের মধ্যে দিয়ে বের হয়েছে, যা সবার জন্যই ভালো বলেও মনে করেন তিনি।
সাইফুল হক বলেন, এ বৈঠকের আরেকটি দিক হলো— নির্বাচনের আগের সময় নিয়ে যেমন আলোচনা হয়েছে, নির্বাচন-পরবর্তী সময় নিয়েও কিছু কিছু আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের পর এই সরকার যেন সম্মানজনকভাবে বিদায় নিতে পারে এবং তাদের কাজগুলো নিয়ে যেন বড় ধরনের প্রশ্ন না ওঠে, সম্ভবত বৈঠকে এসব বিষয়ে নিয়েও আলাপ-আলোচনা হয়েছে। সেটাও এ বৈঠকের একটি ইতিবাচক দিক হিসেবে আমি মনে করি। এখন সরকারের উচিত হবে, এই বৈঠকে যে বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে সেগুলো যেন জনগণ ও রাজনৈতিক দলের সামনে তুলে ধরে।
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকার ও বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলর মধ্যে অচলাবস্থায় জাতিগতভাবে যে উদ্বেগের মধ্যে দিয়ে দিন অতিবাহিত হচ্ছিল, তার অবসান এই লন্ডনের বৈঠকের মধ্যে দিয়ে ঘটেছে বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম।
রাজনীতি ডটকমকে অধ্যাপক লতিফ বলেন, এটা একটা ভালো লক্ষণ যে সবাই সবাইকে সমন্বয় করে চলবে। রাজনৈতিক দলগুলোর রকমত্বের ভিত্তিতে তো সবকিছু করতে হবে। সুতরাং বিভাজন যত কম হয় ততই ভালো। দেশের ভবিষ্যৎ ও গণতন্ত্রের জন্য একটা ভালো নির্বাচন যেন হয়, সে চেষ্টা সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ও দায়িত্বশীল আচরণের মধ্য দিয়েই করতে হবে। আমি আশা করছি, এর মধ্যে দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো সামনের দিকে এগিয়ে যাবে ঐক্যবদ্ধভাবে।
এদিকে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ কয়েটি দল জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘোষণা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে যৌথ বিবৃতি দেওয়ার পর সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিগত দিনে সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে আসা এসব দল এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে সরকার নিরপেক্ষ অবস্থান ক্ষুণ্ণ করেছে বলেও মনে করছে। দলগুলো বলছে, দেশে ফিরে প্রধান উপদেষ্টা অন্যান্য দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করার পরই সরকারের অবস্থান তুলে ধরতে পারতেন।
লন্ডনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠক নিয়ে শনিবার (১৪ জুন) আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকের পর গণমাধ্যমে লিখিত বিবৃতি পাঠায় দলটি।
বিবৃতিতে জামায়াত অভিযোগ করেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনের সময় নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন।
পুরো বিবৃতির কোথাও বিএনপির নাম উল্লেখ না করে জামায়াতে ইসলামী বলেছে, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বিগত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। তার এ ঘোষণার পর লন্ডন সফরকালে একটি রাজনৈতি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ ব্রিফিং এবং বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি প্রদান করা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে আমরা মনে করি।
জামায়াত বিবৃতিতে আরও।বলেছে, এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ করেছে। আমরা মনে করি দেশে ফিরে এসে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেই এ ব্যাপারে তার অভিমত প্রকাশ করাই সমীচীন ছিল। একটি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতি দেওয়ার কারণে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার বিষয়ে জনগণের মধ্যে আশঙ্কা' তৈরি হয়েছে।
লন্ডনের বৈঠক নিয়ে এনসিপি শুক্রবার রাতেই এক বিবৃতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে অবস্থান তুলে ধরে। এর আগেই দলটির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।
বিদেশে নির্বাচন নিয়ে বৈঠক গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি বলে মন্তব্য করেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘লন্ডনে বসে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের মিটিং দেশবাসীর স্বার্থ ও গণআকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রতারণা। শহিদদের রক্তকে অবমাননা করে বিদেশের মাটিতে মিটিং আয়োজন কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে হবে দেশের জনগণের মাধ্যমে, বিদেশি আলোচনায় নয়।’
পরে এক বিবৃতিতে এনসিপি বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন-সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত। এসব ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণঅভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জনআকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।
এ ছাড়া চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কিছু কিছু দলও বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের পর নির্বাচনের সময় চূড়ান্ত করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।
বৈঠকের পর ঘোষিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অত্যন্ত সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব করেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও মনে করেন, ওই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচার বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে। তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার এ অবস্থানকে স্বাগত জানান এবং দলের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানান। প্রধান উপদেষ্টাও তারেক রহমানকে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য ধন্যবাদ জানান।
প্রসঙ্গত, আগামী বছরের ১৭ বা ১৮ ফেব্রুয়ারি পবিত্র রমজান শুরু হতে পারে। লন্ডন বৈঠকের যৌথ বিবৃতির পর ধারণা করা হচ্ছে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট হতে পারে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বিএনপি এ সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে বলে জানায়। তবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে স্পষ্ট দূরত্ব তৈরি হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলে আসছিলেন, এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তবে তিনি সুনির্দিষ্ট কোনো দিন-তারিখ ঘোষণা করেননি। অন্যদিকে বিএনপির দাবি ছিল, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে।
এ ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দল বৈঠক করলেও সে বৈঠকের পর বিএনপি নেতারা সাফ জানিয়ে দেন, নির্বাচন ইস্যুতে সরকারের ডিসেম্বর-জুন সীমা নিয়ে অনড় অবস্থানে তারা একেবারেই সন্তুষ্ট নন। তারাও ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে অনড় অবস্থান নেন।
একপর্যায়ে সৃষ্ট অচলাবস্থায় প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের অভিপ্রায়ের খবরও বেরিয়ে আসে। বিএনপি অবশ্য জানায়, তারা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চায় না, তারা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ চায়।
শেষ পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টা আর পদত্যাগ করেননি। পরে ঈদুল আজহা সামনে রেখে ৬ জুন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে তিনি এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা করেন। এ ঘোষণাতেও খুশি হতে পারেনি বিএনপি। এমন পরিস্থিতিতেই লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি সফর এগিয়ে আসে। সে সফরেই তারেক রহমানের সঙ্গে তার বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।
অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত বৈঠক নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
এ বৈঠক নিয়ে সরকার ও বিএনপি সন্তুষ্টি জানিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বৈঠককে ইতিবাচক ও রাজনীতিতে আস্থা ফেরানোর মাধ্যম হিসেবে দেখছেন। তবে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দল এ বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সংস্কার ও বিচারকে গুরুত্ব না দিয়ে এ বৈঠকের মাধ্যমে নির্বাচন ইস্যুতে একটি দলকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকার ও বিএনপির মধ্যে সৃষ্ট বিরোধের মধ্যে শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডনের পার্ক লেনে হোটেল ডরচেস্টারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে সরকার ও বিএনপি নিজেদের আগের অবস্থান থেকে সরে এসে রমজানের আগে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচনের বিষয়ে একমত হয়েছে।
রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করছেন, নির্বাচন নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে সন্দেহ, অবিশ্বাস ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে তার অবসান ঘটল। বৈঠকের মধ্য দিয়ে নির্বাচন নিয়ে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সংশয়ও অনেকটাই দূর হয়েছে।
অন্যদিকে বিএনপি'র সঙ্গে গড়ে ওঠা এই সখ্যের ভিত্তিতে সরকারও আগামী দিনে অনেকটাই নির্বিঘ্নে ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনি প্রক্রিয়া এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি এগিয়ে নিতে পারবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এই বৈঠক সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে 'উইন-উইন সিচুয়েশন' তৈরি করেছে।
বৈঠক প্রসঙ্গে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক রাজনীতি ডটকমকে বলেন, নির্বাচন ঘিরে সরকার ও বিএনপির মধ্যে যে অনাকাঙ্ক্ষিত বিরোধ ও সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে তার অবসান ঘটেছে। এ বৈঠকের মধ্যে দিয়ে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা 'উইন-উইন সিচুয়েশনে' আসা গেছে।
এমন মনে করার কারণ ব্যাখ্যা করে সাইফুল হক বলেন, নির্বাচন ও তফসিল ঘোষণা নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিল, সন্দেহ ছিল, অনেক অবিশ্বাস ছিল। প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মধ্যে বৈঠকে এ উত্তেজনা অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে বলে মনে করি। এখন সরকার সংস্কার ও বিচারের কাজটা আরও জোরদারভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।
অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান করতে পারলে সরকারের জন্য বেশি মর্যাদাসম্পন্ন হতো বলেও মন্তব্য করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এই নেতা। সেটি না হলেও এবং দেরিতে হলেও মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব অতিক্রম করে সংকট উত্তরণের এক ধরনের পথ এ বৈঠকের মধ্যে দিয়ে বের হয়েছে, যা সবার জন্যই ভালো বলেও মনে করেন তিনি।
সাইফুল হক বলেন, এ বৈঠকের আরেকটি দিক হলো— নির্বাচনের আগের সময় নিয়ে যেমন আলোচনা হয়েছে, নির্বাচন-পরবর্তী সময় নিয়েও কিছু কিছু আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের পর এই সরকার যেন সম্মানজনকভাবে বিদায় নিতে পারে এবং তাদের কাজগুলো নিয়ে যেন বড় ধরনের প্রশ্ন না ওঠে, সম্ভবত বৈঠকে এসব বিষয়ে নিয়েও আলাপ-আলোচনা হয়েছে। সেটাও এ বৈঠকের একটি ইতিবাচক দিক হিসেবে আমি মনে করি। এখন সরকারের উচিত হবে, এই বৈঠকে যে বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে সেগুলো যেন জনগণ ও রাজনৈতিক দলের সামনে তুলে ধরে।
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকার ও বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলর মধ্যে অচলাবস্থায় জাতিগতভাবে যে উদ্বেগের মধ্যে দিয়ে দিন অতিবাহিত হচ্ছিল, তার অবসান এই লন্ডনের বৈঠকের মধ্যে দিয়ে ঘটেছে বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম।
রাজনীতি ডটকমকে অধ্যাপক লতিফ বলেন, এটা একটা ভালো লক্ষণ যে সবাই সবাইকে সমন্বয় করে চলবে। রাজনৈতিক দলগুলোর রকমত্বের ভিত্তিতে তো সবকিছু করতে হবে। সুতরাং বিভাজন যত কম হয় ততই ভালো। দেশের ভবিষ্যৎ ও গণতন্ত্রের জন্য একটা ভালো নির্বাচন যেন হয়, সে চেষ্টা সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ও দায়িত্বশীল আচরণের মধ্য দিয়েই করতে হবে। আমি আশা করছি, এর মধ্যে দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো সামনের দিকে এগিয়ে যাবে ঐক্যবদ্ধভাবে।
এদিকে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ কয়েটি দল জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘোষণা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে যৌথ বিবৃতি দেওয়ার পর সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিগত দিনে সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে আসা এসব দল এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে সরকার নিরপেক্ষ অবস্থান ক্ষুণ্ণ করেছে বলেও মনে করছে। দলগুলো বলছে, দেশে ফিরে প্রধান উপদেষ্টা অন্যান্য দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করার পরই সরকারের অবস্থান তুলে ধরতে পারতেন।
লন্ডনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠক নিয়ে শনিবার (১৪ জুন) আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকের পর গণমাধ্যমে লিখিত বিবৃতি পাঠায় দলটি।
বিবৃতিতে জামায়াত অভিযোগ করেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনের সময় নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন।
পুরো বিবৃতির কোথাও বিএনপির নাম উল্লেখ না করে জামায়াতে ইসলামী বলেছে, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বিগত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। তার এ ঘোষণার পর লন্ডন সফরকালে একটি রাজনৈতি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ ব্রিফিং এবং বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি প্রদান করা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে আমরা মনে করি।
জামায়াত বিবৃতিতে আরও।বলেছে, এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ করেছে। আমরা মনে করি দেশে ফিরে এসে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেই এ ব্যাপারে তার অভিমত প্রকাশ করাই সমীচীন ছিল। একটি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতি দেওয়ার কারণে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার বিষয়ে জনগণের মধ্যে আশঙ্কা' তৈরি হয়েছে।
লন্ডনের বৈঠক নিয়ে এনসিপি শুক্রবার রাতেই এক বিবৃতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে অবস্থান তুলে ধরে। এর আগেই দলটির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।
বিদেশে নির্বাচন নিয়ে বৈঠক গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি বলে মন্তব্য করেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘লন্ডনে বসে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের মিটিং দেশবাসীর স্বার্থ ও গণআকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রতারণা। শহিদদের রক্তকে অবমাননা করে বিদেশের মাটিতে মিটিং আয়োজন কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে হবে দেশের জনগণের মাধ্যমে, বিদেশি আলোচনায় নয়।’
পরে এক বিবৃতিতে এনসিপি বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন-সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত। এসব ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণঅভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জনআকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।
এ ছাড়া চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কিছু কিছু দলও বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের পর নির্বাচনের সময় চূড়ান্ত করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।
বৈঠকের পর ঘোষিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অত্যন্ত সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব করেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও মনে করেন, ওই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচার বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে। তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার এ অবস্থানকে স্বাগত জানান এবং দলের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানান। প্রধান উপদেষ্টাও তারেক রহমানকে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য ধন্যবাদ জানান।
প্রসঙ্গত, আগামী বছরের ১৭ বা ১৮ ফেব্রুয়ারি পবিত্র রমজান শুরু হতে পারে। লন্ডন বৈঠকের যৌথ বিবৃতির পর ধারণা করা হচ্ছে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট হতে পারে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বিএনপি এ সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে বলে জানায়। তবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে স্পষ্ট দূরত্ব তৈরি হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলে আসছিলেন, এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তবে তিনি সুনির্দিষ্ট কোনো দিন-তারিখ ঘোষণা করেননি। অন্যদিকে বিএনপির দাবি ছিল, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে।
এ ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দল বৈঠক করলেও সে বৈঠকের পর বিএনপি নেতারা সাফ জানিয়ে দেন, নির্বাচন ইস্যুতে সরকারের ডিসেম্বর-জুন সীমা নিয়ে অনড় অবস্থানে তারা একেবারেই সন্তুষ্ট নন। তারাও ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে অনড় অবস্থান নেন।
একপর্যায়ে সৃষ্ট অচলাবস্থায় প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের অভিপ্রায়ের খবরও বেরিয়ে আসে। বিএনপি অবশ্য জানায়, তারা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চায় না, তারা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ চায়।
শেষ পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টা আর পদত্যাগ করেননি। পরে ঈদুল আজহা সামনে রেখে ৬ জুন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে তিনি এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা করেন। এ ঘোষণাতেও খুশি হতে পারেনি বিএনপি। এমন পরিস্থিতিতেই লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি সফর এগিয়ে আসে। সে সফরেই তারেক রহমানের সঙ্গে তার বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি। তার ওপর নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধ
১ দিন আগেবৈঠক নিয়ে হতাশার কথাও জানিয়েছেন হাসনাত। লিখেছেন, হতাশার বিষয়— বৈঠকে নির্বাচনের মাস ও তারিখ যেভাবে গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা বিচার ও সংস্কার সেভাবে প্রাধান্য পায়নি। এ সরকার শুধু নির্বাচন দেওয়ার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো রূপ নয়, বরং একটি
১ দিন আগেতিনি বলেন, পুরো বাংলাদেশের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির সংযোগ ঘটিয়ে, এপ্রিলের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত সময় থেকে সরে এসে নির্বাচনের জন্য একটি যৌক্তিক সময়সীমা নির্ধারণের জন্য প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। তিনি জনগণের প্রত্যাশা উপলব্ধি করে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য।
২ দিন আগেতিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্প্রতি যে আলোচনাগুলো হচ্ছে, আজ লন্ডনে যে বৈঠক হলো তা ইতিবাচক, আমরা এই আলোচনার উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। ঈদের আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের পর আমরা বলেছি, বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় এপ্রিলের শুরুতে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
২ দিন আগে